‘প্রেমিকার বিয়ে ঠিক হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের আত্মহত্যা’
প্রেমিকের বিয়ে ঠিক হওয়ায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সুলতান মাহমুদ আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করেছেন তার বড় ভাই রঞ্জু ওরফে ভান্ডারি।
তিনি বলেন, ‘হয়তো বিয়ে ঠিক হওয়ার বিষয়টি সুলতান মাহমুদ জেনে যাওয়ার কারণেই আত্মহত্যা করেছে।’
বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন কামাড়ের মোড়ের মাহাফুজা ছাত্রাবাস থেকে পুলিশ সুলতানের ঝুলন্ত লাশ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর শফিক আশরাফ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
শফিক আশরাফ বলেন, খবর পেয়ে আমরা পুলিশ নিয়ে তার মেসে যাই। দরজা ভেতর থেকে বন্ধ থাকলে তা কেটে আমরা ভেতরে প্রবেশ করলে তাকে বৈদ্যুতিক পাখার সাথে গলায় গামছা পেচানো ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাই।
সুলতান মাহমুদ কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রমনা ইউনিয়নের ১৫নং ওয়ার্ডের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল্লাহ শেখের পুত্র। তারা চার ভাই বলে জানা গেছে।
সুলতান মাহমুদের পরিবার ও বন্ধুরা জানায়, কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার এক মেয়ের সাথে ৪/৫ বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল সুলতান মাহমুদের। সম্পর্কের কথা জানাজানি হলে দুই পরিবারের লোকজন বিষয়টি সমাধান করে। দুই বছর সময় বেঁধে দেয় মেয়ের পরিবার। তারপরেও বিভিন্ন সময় মেয়ের বিয়ের চেষ্টা চালানো হয়। সর্বশেষ ১৫ নভেম্বর (বুধবার) মেয়ের বিয়ে অন্যখানে ঠিক করে তার পরিবার। একদিন পরেই (বৃহস্পতিবার) সে আত্মহত্যা করে। বর্তমানে সেই মেয়ে রৌমারীর একটি কলেজে ইন্টারমিডিয়েট দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে।
ছাত্রাবাসের অন্য শিক্ষার্থীরা জানান, সন্ধ্যার দিকে তার পরিবারের পক্ষ থেকে মোবাইল ফোনে জানানো হয় যে, সুলতান কোনো ফোন রিসিভ করছে না। এর আগে তার এক সহপাঠী সিট নিতে তার কাছে গেলে তার রুম ভেতর থেকে বন্ধ পান। অনেকক্ষণ ডাকাডাকির পরও কোনো সাড়া না পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানান ছাত্রাবাসের অন্য শিক্ষার্থীরা। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর শফিক আশরাফ পুলিশ নিয়ে তার কক্ষের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে ফ্যানের সঙ্গে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান।
বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক মুহিব্বুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার লাশ উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছিল। শুক্রবার সকালে তার পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তার সর্বশেষ স্ট্যাটাসটি হলো, ‘সময় এসেছে ইতিহাস পাল্টাবার, পাল্টে যাচ্ছি তাই।’
(ঢাকাটাইমস/১৭নভেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)