মানিকগঞ্জে স্বর্ণের দোকানে ডাকাতি

পুলিশের বিরুদ্ধে ‍দুই কোটি টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ

প্রকাশ | ১৭ নভেম্বর ২০১৭, ২৩:২৪

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

মানিকগঞ্জে স্বর্ণের দোকানে নিরাপত্তা দেয়ার কথা বলে ব্যবসায়ীদের কাছে দুই কোটি টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। স্বর্ণ শিল্পী সমিতির অভিযোগ, সপ্তাহ খানেক আগে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার দুই কর্মকর্তা তাদের কাছে এই চাঁদা চান। টাকা না দিলে ব্যবসায়ীদের ফাঁসানোর হুমকি দিয়েছিলেন তারা।

গত বুধবার সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জ শহরের স্বর্ণকার পট্টির নাগ জুয়েলার্সে প্রকাশ্যে অস্ত্র দেখিয়ে ৭০০ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায় একদল  যুবক। লুট করে চলে যাওয়ার সময় তারা বেশ কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। পরে একটি প্রাইভেট কার ও একটি ট্যাক্সিতে করে পালিয়ে যায়।

ঘটনার দিনই নাগ জুয়েলার্সের মালিকের বড় ভাই চন্দন নাগ দাবি করেন, এটি একটি পরিকল্পিত ডাকাতি। এর সাথে ডিবি পুলিশ জড়িত।

এই ডাকাতির ঘটনার ভিডিওতে ডাকাত দলের সদস্যরা চিহ্নিত হয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হলেও ৪৮ ঘণ্টায়ও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। উদ্ধার হয়নি লুণ্ঠিত মালামাল।

স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ডাকাতির ঘটনার এক সপ্তাহ আগে মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আব্দুল আওয়াল রাসেল জেলা স্বর্ণ শিল্পী সমিতির কর্মকর্তাদের নিজ কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে চাঁদা দাবি করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন এনএসআই মানিকগঞ্জ কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আসিফ মনোয়ার।

জুয়েলার্স মালিক সমিতির সভাপতি আতাউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক রঘুনাথ সাহার অভিযোগ, গোয়েন্দা কর্মকর্তা আসিফ মনোয়ার প্রথমে জুয়েলারি দোকানে গিয়ে নানা ধরনের ভয়ভীতি দেখান। এরপর ৮ ও ৯ নভেম্বর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার  আব্দুল আওয়াল তার কার্যালয় ডেকে নেন তাদের। তিনি তাদের বলেন, ‘আপনারা অবৈধভাবে  দোকানে এসিড রাখেন, চোরাই-ডাকাতি করে আনা স্বর্ণ বিক্রি করেন, ভারত থেকে কারিগর এনে  গহনা বানান। এসব ঝামেলা এড়াতে হলে চাঁদা দিতে হবে।’

দুই কোটি টাকা দেয়া সম্ভব নয় জানালে পরদিন তাদের আবার ডেকে নিয়ে ওই দুই কর্মকর্তা টাকার অংক কমিয়ে ৭০ লাখ  চান বলে জানান ব্যবসায়ীরা। পরে পুলিশ কর্মকর্তাদের দিয়ে সমিতির বিভিন্ন সদস্যর কাছ থেকে টাকা তুলতে থাকেন ব্যবসায়ীরা।

এনএসআই কর্মকর্তা আসিফ মনোয়ারের স্বর্ণকারদের কাছে চাঁদা চাওয়ার বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয় এনএসআইয়ের উপ-পরিচালক আব্দুল কাদের খানের কাছে। তিনি বলেন, ‘আসিফ মনোয়ারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তিনি ছুটি নিয়ে  বিদেশে অবস্থান করছেন। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।’

তবে মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আব্দুল আওয়াল চাঁদা দাবির বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের কাজকর্মের বিষয়ে জানতে আমার কার্যালয়ে তাদেরকে ডাকা হয়েছিল। তবে তার নাম ভাঙিয়ে অন্য কেউ চাঁদা দাবি করতে পারে।

তবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল আওয়াল খানের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ পুলিশ গুরুত্ব দিয়ে  খতিয়ে দেখছে বলে জানান মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমান।

(ঢাকাটাইমস/১৭নভেম্বর/জেডএ/ডব্লিউবি)