সালমান শাহ হত্যায় আদালতে মামার জবানবন্দি

প্রকাশ | ১৯ নভেম্বর ২০১৭, ২২:৪৬

আদালত প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ ইমন ওরফে সালমান শাহর অপমৃত্যুর মামলায় তার মামা আমেরিকা প্রবাসী আলমগীর কুমকুম আদালতে সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন।

রবিবার ঢাকা মহানগর হাকিম নূর নবীর কাছে তিনি সালমান শাহের মুত্যুর আগে পরে ঘটনা বর্ণনা করে এই জবানবন্দি দেন।

মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম এ সাক্ষীকে আদালতে হাজির করে এই জবানবন্দি গ্রহণের আবেদন করেন।

জানা গেছে, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সালমান শাহের ১১/বি নিউ ইস্কাটন রোর্ডের স্কাটন প্লাজার বাসান নিজ কক্ষে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে তাকে প্রথমে হলি ফ্যামেলি পরে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হলে চিকিংসকরা তাকে মৃত্যু ঘোষণা করে। ঘটনার ঠিক আগের রাত সাড়ে ১২টার দিকে সাক্ষ্য প্রদানকারী এই মামার সঙ্গেই সালমান শাহের  টেলিফোনে কথা হয়। টেলিফোনে সালমান শাহ তার স্ত্রী সামিরার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক যাচ্ছে না এবং খুব শিগগিরই তাকে তালাক দেবে মর্মে জানিয়েছিলেন বলে আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন। এছাড়া সালমান শাহের মুত্যুর পর তার স্ত্রী ও শ্বশুর বাড়ির লোকদের মধ্যে কোনো বেদনাবোধ দেখেননি এবং তারা সালমান শাহের লাশের সঙ্গে সিলেটে যাননি, কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠানেও অংশগ্রহণ করেনি বলেও তিনি আদালতে জবানবন্দিতে বলেছেন।

প্রসঙ্গত,  গত বছর ৬ ডিসেম্বর আলোচিত এ মামলা তদন্ত করতে পিবিআইকে নির্দেশ দেয় আদালত। ওই তদন্তাধীন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়ায় থাকা এ মামলার নারাজীর আসামি রাবেয়া সুলতানা রুবি গত ৭ আগস্ট ফেসবুকে এক ভিডিওবার্তায় সালমান শাহর মৃত্যু নিয়ে কথা বলেন, যা ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ওই ভিডিও বার্তায় রুবি বলেছেন, ‘সালমান শাহ আত্মহত্যা করে নাই। সালমান শাহকে খুন করা হইছে, আমার হাজব্যান্ড এটা করাইছে আমার ভাইরে দিয়ে। সামিরার ফ্যামিলি করাইছে আমার হাজব্যান্ডকে দিয়ে। আর সব ছিল চাইনিজ মানুষ।’ রুবি আরও বলেছেন, স্বামীর নাম চ্যাংলিং চ্যাং, যিনি বাংলাদেশে জন চ্যাং নামে পরিচিত ছিলেন। ধানমন্ডির ২৭ নম্বর সড়কে সাংহাই রেস্টুরেন্ট নামে তার একটি চাইনিজ রেস্তোরাঁ ছিল। হত্যাকাণ্ড ঘটানোর পর তার ভাই রুমিকেও খুন করা হয়েছে। রুবির ওই বক্তব্য প্রমাণ করে যে, শালমানশাহ আত্মহত্যা করেন নাই।’ ওই ভিডিও বার্তার পর তদন্তে গতি পায়। 

এর আগে মামলাটির বিচার বিভাগীয় তদন্তের ওপর নারাজির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি ঢাকা সিএমএম আদালত র‌্যাবকে মামলাটি পুনঃতদন্তের নির্দেশ দেয়। ওই আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ রিভিশন করলে র‌্যাবকে দেয়া তদন্তের আদেশ বেআইনি ঘোষণা করা হয়। 

শালমান শাহের মা নীলা চৌধুরী নারাজীতে মাফিয়া ডন মাফিয়া ডন আজিজ মোহাম্মাদ ভাইসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। অপর ১০ জন হলেন, সালমানশাহের স্ত্রী সামিরা হক, সামিরার মা লতিফা হক লুসি, রেজভী আহমেদ ওরফে ফরহাদ, এফ ডিসির সহকারী নিত্য পরিচালক নজরুল শেখ নজরুল শেখ, ডেভিড, আশরাফুল হক ডন, রাবেয়া সুলতানা রুবি, মোস্তাক ওয়াইদ, আবুল হোসেন খান ও গৃহপরিচারিকা মনোয়ারা বেগম।

(ঢাকাটাইমস/১৯নভেম্বর/আরজেড/জেবি)