হাজী দানেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অবরুদ্ধ

প্রকাশ | ২০ নভেম্বর ২০১৭, ১৯:৫৭

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) প্রফেসর ড. আবুল কাসেমকে অবরুদ্ধ করেছেন অন্যান্য শিক্ষকরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা বিষয়ক শিক্ষক প্রফেসর ড. হারুন উর-রশিদকে অব্যাহতি দেয়ায় তাকে অবরুদ্ধ করা হয়েছে বলে জানান শিক্ষকরা।

সোমবার বিকেল চারটা থেকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা) ভিসি তার কক্ষে অবরুদ্ধ ছিলেন।

শিক্ষক প্রফেসর ড.হারুন উর-রশিদকে অব্যাহতি দেয়ার কারণ জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. শফিকুল ইসলামকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান।

তিনি বলেন, আমি বিগত একমাস থেকে ক্যাম্পাসের বাইরে রয়েছি।

এদিকে এবিষয়ে অবরুদ্ধ ভিসি প্রফেসর ড.আবুল কাসেমকে মুঠোফোনে কল দেয়া হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।

এ ঘটনায় ক্যাম্পাস উত্তপ্ত ছিলো। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

উল্লেখ্য, দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও

প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৮ ভর্তি পরীক্ষায় বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও চরম অসঙ্গতির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় সংবাদ সম্মেলন করে ক্ষমতাসীন দলের শিক্ষক সংগঠন “প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরাম”।

দিনাজপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনের এ সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি প্রফেসর ড. আনিস খান ও সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. বলরাম রায় স্বাক্ষরিত লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে নভেম্বরের ৫ তারিখে ¯œাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন অসঙ্গতি পাওয়া যায়। যা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন লিখিত আবেদনটি কোনো আমলে না নিয়ে তড়িঘড়ি করে ফলাফল প্রকাশ করে। ফলাফল প্রকাশের আগে ভর্তি কমিটির সভায়  ফলাফল উপস্থাপন করা হলে কয়েকজন সদস্য প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামের লিখিত অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে ফলাফল অধিকতর যাচাই-বাছাই করে ফল প্রকাশ করার  প্রস্তাব দেন। কিন্তু প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরাম সদস্যদের মতামত উপেক্ষা করে ফলাফল প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮টি অনুষদের মধ্যে ৪টি অনুষদের ডিনরা এবং ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা পরিচালকসহ উপাচার্য মনোনীত একজন কমিটির সদস্য রেজাল্ট শিটে স্বাক্ষর করেননি।

সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, সদস্যবৃন্দের ঐক্যমত ছাড়াই ফলাফল প্রকাশ একটি দুর্ভাগ্যজনক অধ্যায়। ভর্তি পরীক্ষায় সি-১ বাণিজ্য ইউনিটের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র এবং ওএমআর শিট এবং সিক্যুয়েন্সে যথেষ্ট গড়মিল ছিলো। বেশ কিছু সি-১ বাণিজ্য ছাত্র-ছাত্রীর পরীক্ষা  সি-৩ মানবিক ও বিজ্ঞান প্রশ্নপত্রে নেয়া হয়, যাতে বাণিজ্যিক ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের বাণিজ্য বিষয় সমূহে প্রশ্নপত্রে পায়নি। এতে পরীক্ষা হলে বাণিজ্যিক ছাত্র-ছাত্রীরা অভিযোগ করলেও তা আমলে নেয়নি কর্তৃপক্ষ। ভর্তি পরীক্ষা কমিটির এক চরম অব্যবস্থাপনায় অনেক মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী সঠিক ফলাফল থেকে বঞ্চিত হয়েছে।


বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবং ভর্তি পরীক্ষা কমিটি’র সহযোগি সদস্য সচিব হিসেবে ড.মো.খালিদ হোসেন ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সংশ্লিষ্ট সকল ধরনের অনিয়মের গোপনীয় কাজে জড়িত ছিলেন বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ তোলা হয়। ভর্তি পরীক্ষায় সকল অনিয়মতান্ত্রিক  কর্মকা-ের জন্য পরীক্ষা কমিটির আহবায়ক, সদস্য সচিব ও সংশ্লিষ্ট সকলের বিরুদ্ধে একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্মপ্ন তদন্ত কমিটি গঠন সাপেক্ষে  প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানায় “প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরাম”।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, “প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরাম” এর সহ-সভাপতি প্রফেসর ড.সাইফুর রহমান, সহ-সভাপতি প্রফেসর ড.এটিএম শরিফুল ইসলাম, সহ-সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ডা. এসএম হারুন, সহ-সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মো.নাজিম উদ্দিন, সহ-সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মো. মামুনুর রশীদ ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক ড. মো. ফেরদৌস মেহবুব।

(ঢাকাটাইমস/২০নভেম্বর/প্রতিনিধি/ইএস)