মুদ্রা পাচার নিয়ে ‘বেশকিছু’ তথ্য পেয়েছে এনবিআর
বাংলাদেশ থেকে মুদ্রা পাচারের বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে জানিয়ে এগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআরের চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান। প্যারাডাইস পেপারস কেলেঙ্কারিতে নাম আসা বাংলাদেশিদের মুদ্রাপাচারের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান এ কথা বলেন। এ সময় তার পাশে ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির।
বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে বিদেশে মুদ্রা পাচার নিয়ে গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে আলোচনা চলছে।
এর মধ্যে ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফাইনানশিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ২০০৫ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ৮৯৭ কোটি ডলার (৭০ হাজার কোটি টাকার বেশি) পাচার হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘মুদ্রাপাচারের বিষয়ে তদন্তে আমাদের একটা প্রতিষ্ঠানিক কাঠামো আছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের যে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট) আছে। বিএফআইর সঙ্গে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা শুল্ক ও গোয়েন্দা অত্যন্ত ঘনিষ্টভাবে কাজ করছে। আমরা একে অন্যের তথ্য বিনিময় করি। আমরা মুদ্রাপাচারের ক্ষেত্রে কিছু বিষয় পেয়েছি। এগুলো আমরা খতিয়ে দেখছি। যথা সময়ে সেটা জানতে পারবেন।’
‘এটার ভালো অগ্রগতি হয়েছে। এ বিষয়টি আমরা আপনাদের জানাব। আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো খুবই সক্রিয়।’
বিদেশে গোপনে বিনিয়োগের বিষয়ে ২০১৬ সালে প্রকাশিত তালিকায় (পানামা পেপারস কেলেঙ্কারি নামে পরিচিত) ১১ বাংলাদেশির নাম ছিল। আবার সম্প্রতি প্রকাশ পাওয়া আরেকটি তালিকায় নাম এসেছে বিএনপি নেতা আবদুল আউয়াল মিণ্টুসহ ১০ জনের। এই তালিকাটি পরিচিতি পেয়েছে প্যারাডাইস পেপারস কেলেঙ্কারি হিসেবে।
পানামা পেপারস কেলেঙ্কারিতে যাদের নাম এসেছিল, তাদের বিরুদ্ধে এখনও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন একটি অনুসন্ধান দল গঠন করলেও তাদের কার্যক্রম সেভাবে আগায়নি। এই পরিস্থিতিতে প্যারাডাইস পেপারস কেলেঙ্কারিতে নাম আসা ব্যক্তিরাও পার পেয়ে যাবেন কি না, সে প্রশ্ন উঠেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান বলেন, ‘মুদ্রা পাচারের সব অভিযোগই আমরা খতিয়ে দেখব।’
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ফজলে কবির বলেন, ‘সম্প্রতি যে বিষয়টি সামনে এসেছে তা আমরা এখনো তলিয়ে দেখিনি। এনবিআর দেখবে। আপনারা জানেন যার যে দায়িত্ব আছে সেখানে তারা তা দেখবে।’
গভর্নর সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আছে। আপনারা এখানে নয়, শাপলা চত্বরে (কেন্দ্রীয় ব্যাংকে) গিয়ে সেটা জানতে পারবেন।’
(ঢাকাটাইসমস/২১নভেম্বর/জেআর/ডব্লিউবি)