কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

রাজশাহী ব্যুরো, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২১ নভেম্বর ২০১৭, ২১:০৫

অনিয়ম ও দুর্নীতির বেড়াজালে আটকে গেছে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড (বাকাশিবো)। শুধু তাই নয়, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) নিজেই দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন।

সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ তুলেছেন রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার পুরাণ তাহিরপুর বিএম টেকনিক্যাল কলেজের ১০ শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী সিটি প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

শিক্ষার্থীদের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, পুরাণ তাহিরপুর বিএম টেকনিক্যাল কলেজ থেকে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ১৬ জন শিক্ষার্থী ২০১৭ সালে অনুষ্ঠিত এইচএসসি (বিএম) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। পরে ফলাফল প্রকাশিত হলে অনলাইনে ১০ জনের রেজাল্ট রিপোর্টেড দেখায়। এরপর পুনঃনিরিক্ষণের জন্য আবেদন করলে তাদের সরাসরি ফেল দেখায়। কিন্তু ওই ১০ পরীক্ষার্থী নিজ নিজ উত্তর করা প্রশ্নপত্রে হিসাব নিকাশ করে দেখেন তাদের ফেল করার কোন কারণ নেই।

এ কারণে তারা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সুশীল কুমার পালের শরণাপন্ন হন। তিনি তখন সনদ লেখক জাহিদুর রহমান ও উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক খোরশেদ আলমের সাথে শিক্ষার্থীদের দেখা করতে বলেন। ওই দুই কর্মকর্তা তখন ১০ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে জনপ্রতি ৩০ হাজার করে তিন লাখ টাকা উৎকোচ দাবি করেন।

উচ্চতর শ্রেণিতে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীরা দুই লাখ টাকা প্রদান করেন। এরপর কলেজে প্রেরিত মার্কশিটে তাদের পাশ থাকলেও অনলাইন ফলাফলে এখনো ফেল দেখানো হচ্ছে। এর কারণে উচ্চতর শ্রেণিতে ভর্তি হতে পারছেন না ওই ১০ শিক্ষার্থী। পরে সমাধানের জন্য তারা আবারো কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করলে বাকি এক লাখ টাকা পরিশোধ এবং বাড়তি আরও এক লাখসহ মোট দুই লাখ টাকা দাবি করা হয়। আর ওই টাকা না দেয়াতেই অনলাইনে ফলাফল প্রকাশ করছেন না।

এ ঘটনায় গত ১৫ নভেম্বর ডিজি অফিসে অভিযোগ করতে গেলে সেখানকার কর্মচারীরা শিক্ষার্থীদের দপ্তরে ঢুকতে দেয়নি। পরে ওইদিনই বাংলাদেশ কারিগরি ও মাদ্রাসা বোর্ডের সচিব আলমগীর হোসেন বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগি শিক্ষার্থী মশিউর রহমান, আবু সাইদ, নান্টু ইসলাম, শাহীন আলম, শামিম উদ্দিন, সৈকত হোসেন, সুমাইয়া খাতুন, মাসুদ রানা, আবু রাসেল রাজু ও বৃষ্টি খাতুন উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, একটি জাতির মেরুদণ্ড গড়ার সর্বোচ্চ কর্ণধাররাই যদি অনিয়ম ও দুর্নীতির বিস্তার ঘটানোর শিক্ষা দেন তাহলে এ দেশ কোন স্তরে গিয়ে পৌঁছবে তা কল্পনা করাও অসম্ভব। যারা অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের লক্ষ্যে দেশের হাজার হাজার শিক্ষার্থীর জীবন বারবার ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন, তাদের শাস্তি দাবি করেন এসব শিক্ষার্থী।

এর আগে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সুশীল কুমার পালের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে গত ৯ অক্টোবর রাজশাহীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। এরপরই অকৃতকার্য সাড়ে তিনশ শিক্ষার্থীকে মুহূর্তের মধ্যেই পাস করিয়ে দেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও তৎকালীন অতিরিক্ত সিস্টেম এনালিস্ট (বর্তমানে পদচ্যুত) সুশীল কুমার পাল।

রাজশাহীর এই পরীক্ষার্থীদের এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বাকাশিবোর পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সুশীল কুমার পাল ঢাকাটাইমসকে বলেন, শিক্ষার্থীদের আমাদের কাছে পাঠিয়ে দেন। রেজাল্ট পরিবর্তন করে দিচ্ছি। ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি সঠিক নয়। এসব বিষয়ে আমি ভয় পাই না।

(ঢাকাটাইমস/২১নভেম্বর/আরআর/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :