কলকাতায় যেভাবে ধরা পড়ল বাংলাদেশের দুই 'জঙ্গি'

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৩ নভেম্বর ২০১৭, ১২:৫৬ | প্রকাশিত : ২৩ নভেম্বর ২০১৭, ১১:৪৪

কলকাতা পুলিশ দাবি করেছে, বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লা বাংলা টিমের (এবিটি) দুজন সন্দেহভাজন সদস্যকে তারা গ্রেপ্তার করেছে৷ মঙ্গলবার লালবাজারের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) সামশাদ মিয়া ওরফে তনবির, রিয়াজুল ইসলাম ওরফে সুমন নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করে৷

গা ঢাকা দিয়ে থাকা আল কায়েদার আরও দুই জঙ্গি নেতা আব্দুল দাউদ এবং আবু আনজারকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে গোয়েন্দারা৷

আব্দুল দাউদ আল কায়দা বাংলাদেশের সদস্য৷ আনজার ‘আল কায়দা আল নুসরা (সিরিয়া)’ জঙ্গি শাখার সদস্য বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা৷ কিছু দিন আগেও এরা কলকাতায় এসেছিল৷ কিন্তু বর্তমানে তারা কলকাতা বা এ রাজ্যে রয়েছে কি না, তা জানার জন্য ধৃত সামশাদ ও রিয়াজকে জেরা করে আরও তথ্য পাওয়ার চেষ্টা করছে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ৷

বাংলাদেশে একের পর এক ব্লগারকে হত্যা করে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা জঙ্গি সংগঠনগুলির তালিকায় ইতিমধ্যেই জায়গা করে নিয়েছে আনসারুল্লাহ বাংলা টিম৷

সেই দলের দুই জঙ্গিকে মঙ্গলবার কলকাতা থেকে গ্রেন্তারের পর লালবাজার জানিয়েছিল, অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের ব্লগার ফারুক সাদিককে খুনের ছক ছিল তাদের৷

সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গে গা ঢাকা দিয়ে থাকা আরও কয়েকজন বাংলাদেশি ব্লগার সর্ম্পকেও জঙ্গি দলের সদস্যরা খোঁজখবর নেয়া শুরু করেছিল৷ মঙ্গলবার দুই সন্দেহভাজন জঙ্গি রিয়াজুল, সামশাদ ও অস্ত্র কারবারি মনোতোষ দেকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে তাদের ১৪দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত৷

তাদের জেরা করে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, বছর দেড়েক আগে বসিরহাট সীমান্ত দিয়ে তারা এ পশ্চিমবঙ্গে ঢোকে৷ সেখান থেকে প্রথমে হায়দ্রবাদে যায়৷ মাস দুয়েক হায়দ্রবাদে থাকার পর তারা যায় কর্ণাটকে৷ সেখানে তারা রাজমিস্ত্রির কাজ শুরু করে৷ সেখানেই ঘাঁটি গাড়া এক বাংলাদেশির সাহায্য নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের ভুয়া আধার কার্ড, প্যান কার্ড পরিচয়পত্র বানায়৷

এরপর আবার হায়দ্রবাদ আসে দুজন৷ ওখানে একটি কসাইখানায় কাজ শুরু করে৷ ১ লাখ রুপি দিয়ে ভারতের একটি সরকারি ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলার পাশাপাশি কম্পিউটার হার্ডওয়্যারের কাজেও প্রশিক্ষণ নেয় সামশাদ৷ তারপর পুনাতে যায়৷ আবার ওখান থেকেই দিল্লি৷ সেখানে ১২ দিন কাটিয়ে হায়দ্রবাদে ফেরে৷ সেখান থেকে মাস দুয়েক আগে কলকাতায় ফিরে আসে৷

কীভাবে ধরা পড়ল তারা?

গত আগস্টে উত্তরপ্রদেশের মুজাফফরপুরে গ্রেপ্তার হয় এবিটির রিক্রুটমেন্ট উইংয়ের চাঁই আবদুল্লা৷তারপরেই দিল্লি থেকে গ্রেন্তার হয় ওই সংগঠনের আরও এক জঙ্গি রেজাউল৷ তাদের জেরা করেই এই দুই জঙ্গির তথ্য পান কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা৷ সন্দেহভাজন দুই জঙ্গির নাম সহ বিবরণ দিয়ে কলকাতা পুলিশকে সর্তক করা হয়৷

নবমীর দিন সামশাদ ও রিয়াজ হায়দ্রবাদ থেকে ট্রেনে কলকাতায় আসে৷ সেই সময়েই কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় ওই দুই জঙ্গি ঢুকতে পারে বলে জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা৷ তারপরই নজরদারি বাড়ায় এসটিএফ৷ সেই সূত্রেই হাওড়া ডবসন রোডে একটি হোটেল তল্লাশি চালিয়ে গোয়েন্দারা জানতে পারেন ওই হোটেলে উঠেছিল তারা৷ গোয়েন্দাদের হাতে চলে আসে তাদের ছবি৷ মেলে একটি মোবাইল নম্বরও৷ যদিও একদিন হোটেলে থাকার পর বেরিয়ে যায় তারা৷ তারপর শহরের বিভিন্ন যাত্রী নিবাস , হাসপাতালে মূলত থাকছিল তারা৷ বাংলাদেশে সামসুল নামে এক জঙ্গি ধরা পড়ায় বারবার আস্তানা বদল করে তারা৷ এরমধ্যেই বর্ডার এলাকার এক দালাল মারফত গোয়েন্দাদের কাছে খবর আসে অস্ত্র কারবারি মনোতোষের কাছে দুজন বাংলাদেশির অস্ত্র কিনতে আসার কথা রয়েছে৷ সেখানেই ধরা হয় এদের৷

সূত্র: এই সময়

(ঢাকাটাইমস/২৩নভেম্বর/এসআই)

সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :