আতঙ্কিত রোহিঙ্গারা যেন আতঙ্কের না হয়

রেজাউল করিম
 | প্রকাশিত : ২৩ নভেম্বর ২০১৭, ১২:১৫

রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের উত্তরাংশে বসবাসকারী একটি জনগোষ্ঠী। রাখাইন প্রদেশ থেকে আসা বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গারা দীর্ঘদিনের নির্যাতিত জাতি। নাফ নদী পার হয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে প্রায় ছয় লাখ রোহিঙ্গা। সঠিক হিসেবে সংখ্যা বাড়তে পারে। রাখাইন প্রদেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ হল রোহিঙ্গা।

মিয়ানমারের সরকারি হিসেব মতে, প্রায় আট লাখ রোহিঙ্গা রয়েছে। রোহিঙ্গারা বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে নিপীড়িত জনগোষ্ঠীগুলোর একটি। অসহায় রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশে বাংলাদেশিরা বাধা দিলে হয়তো ওদের অনেকে নাফ নদীতে ঝাঁপ দিয়ে প্রাণ দিতো। তবুও জন্মভূমিতে ফেরার চিন্তা মাথায় আনতো না। ওদের নির্যাতিতের ইতিহাস নতুন না। ওরা জানে ওদের ওপর কতোটা বর্বরোচিত নির্যাতন চালানো হয়েছে। স্বজনহারা রোহিঙ্গাই নির্যাতনের প্রমাণ বয়ে এনেছে। নিরুপায় রোহিঙ্গারা আতঙ্কিত হয়ে নিজ জন্মভূমিতে এতোটা সময় পাড়ি দিয়েছে।

বেশ কয়েক বছর ধরেই মিয়ানমারে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখে অনেকে আধুনিক প্রযুক্তির কারসাজি বলে চালিয়ে দিত। কিন্তু সম্প্রতি দলে দলে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসাতে নজর কেড়েছে আন্তর্জাতিক মহলের। বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিদের কাছে নির্যাতনের প্রমাণও মিলেছে। পুরো বিশ্ব বিবেক যখন ঘুমিয়ে তখন লাখো রোহিঙ্গা নাফ নদীতে ভাসছে। প্রতিবেশী দেশগুলো যখন সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে বাংলাদেশ তখন নিঃশর্তে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ব বিবেক তখন লজ্জায় লাল হয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সহমত প্রকাশ করেছে। কেউ কেউ আমাদের প্রশংসায় এখন পঞ্চমুখ। নির্যাতিতদের পাশে দাঁড়িয়ে সরকার পুরো বাঙ্গালি জাতিকে বিশ্ব দরবারে মানবিক জাতি হিসেবে পরিচিত করেছে।

”মানুষ মানুষের জন্য” মিয়ানমার ভুলে গেলেও বাংলাদেশ ভোলেনি। আবার প্রমাণ করেছে বাঙ্গালি ৭ কোটি মানুষের জীবন বাঁচিয়েছিল। মুখের ভাষা ফিরিয়ে এনেছিল। এ জাতি নিজেদের অধিকার আদায়ের পাশাপাশি অন্যের অধিকার আদায় করতেও সক্রিয়। বাংলাদেশ সরকারে মানবিকতায় পুরো বিশ্ব বিবেকের চোখ খুলেছে। নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানোটা ছিল বাংলাদেশের মানবিকতা। আর বর্তমান ও আগামী দিনের সময়ের দাবি, ওদের ওপর কড়া নজর রাখা। কেননা নির্যাতিতদের দিয়ে অতি সহজে ভালোমন্দ উভয় কাজই করানো সম্ভব। আমাদের একটু অসচেতনতায় আতঙ্কিত রোহিঙ্গা যেন বাঙ্গালির আতঙ্কের কারণ না হয়।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের জরিপে দেখা গেছে, বহুকাল ধরেই অমানবিক জাতিবিদ্বেষের শিকার রোহিঙ্গারা (সূত্র-এএফপি)।

জাতি বিদ্বেষ আর রোহিঙ্গা নির্যাতনের প্রমাণ ইতিহাসের পাতা খুললেই চোখে পড়ে। মুসলিম হওয়াটা রোহিঙ্গা নির্যাতনের একটি বড় কাল। ১৪০৪ খ্রিস্টাব্দে নরমিখলা নামে আরাকানের জনৈক যুবরাজ মাত্র ২৪ বছর বয়সে পিতার সিংহাসনে আরোহণ করেন। রাজধানী ছিলো লেম্ব্রো নদীর তীরে লংগ্রেত। সিংহাসনে আরোহণ করেই নরমিখলা একজন দেশীয় সামন্তরাজার ভগ্নিকে অপহরণ করে রাজধানী লংগ্রেতে নিয়ে আসেন। ফলে আরাকানের সামন্তরাজাগণ একত্রিত হয়ে বার্মার রাজা মেঙশো আইকে আরাকান দখল করার জন্য অনুরোধ জানান। ১৪০৬ খ্রিস্টাব্দে বার্মার রাজা ত্রিশ হাজার সৈন্য নিয়ে আরাকান আক্রমণ করলে নরমিখলা পালিয়ে তদানিন্তন বাংলার রাজধানী গৌড়ে এসে আশ্রয় নেন। ১৪৩০ খ্রিস্টাব্দে গৌড়ের সুলতান নাসিরউদ্দিন শাহ মতান্তরে জালালুদ্দিন শাহ সেনাপতি ওয়ালী খানের নেতৃত্বে বিশ হাজার সৈন্যবাহিনী দিয়ে নরমিখলাকে স্বীয় রাজ্য আরাকান উদ্ধারের জন্যে সাহায্য করেন।

১৪৩০ খ্রিস্টাব্দে সেনাপতি ওয়ালী খানের নেতৃত্বে নরমিখলা ওরফে সোলায়মান শাহ আরাকান অধিকার করার এক বছরের মধ্যে ওয়ালী খান বিদ্রোহ করে নিজেই আরাকান দখল করে নিলে পর গৌড়ের সুলতান জালালুদ্দিন শাহ সেনাপতি সিন্ধিখানের নেতৃত্বে আবার ত্রিশ হাজার সৈন্য পাঠিয়ে সোলায়মান শাহকে (নরমিখলা) সাহায্য করেন। ১৪৩২ খ্রিস্টাব্দে সিন্ধি খানের সহযোগিতায় সোলায়মান শাহ পিতার রাজধানী লংগ্রেত থেকে ম্রোহং নামক স্থানে স্বীয় প্রতিষ্ঠিত ম্রাউক বংশের রাজধানী স্থানান্তরিত করেন। ১৪৩০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৫৩০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত আরাকান গৌড়ের সুলতানদের কর প্রদান করতো। ১৫৩১ খ্রিস্টাব্দে গৌড়ের অভ্যন্তরীণ গোলযোগের সুযোগে সোলায়মান শাহর দ্বাদশতম অধঃস্তন পুরুষ জেবুক শাহ (মিনবিন) ম্রোহং-এর সিংহাসনে আরোহণ করে পূর্ণ স্বাধীনতা ঘোষণা এবং এবং জেবুক শাহের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয় ম্রাউক-উ-সাম্রাজ্য। ১৪৩০ খ্রিস্টাব্দ হতে ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত শেখের কিছু কাল বাদ দিলে আরাকান ম্রাউক-উ রাজবংশের শাসনাধীন ছিলো। এ সময়ে প্রায় প্রত্যেক রাজা নিজেদের বৌদ্ধ নামের সাথে একটি মুসলিম নাম ব্যবহার করেছেন। গৌড়ের মুসলমানদের অনুকরণে মুদ্রা প্রথার প্রবর্তন হয়। মুদ্রার একপিঠে রাজার মুসলিম নাম ও অভিষেক কাল এবং অপরপিঠে মুসলমানদের কালিমা শরীফ আরবি হরফে লেখা হয়। রোহিঙ্গাদের আবাসভূমি আরাকান ছিল স্বাধীন রাজ্য। ১৭৮৪ সালে বার্মার রাজা বোডপায়া এটি দখল করে বার্মার অধীন করদ রাজ্যে পরিণত করেন।

মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। মিয়ানমার সরকার ১৩৫টি জাতিগোষ্ঠীকে সংখ্যালঘু জাতি হিসেবে স্বীকৃতি দিলেও রোহিঙ্গারা এ তালিকায় নেই। মিয়ানমার সরকারের মতে, রোহিঙ্গারা হল বাংলাদেশি, যারা বর্তমানে অবৈধভাবে মিয়ানমারে বসবাস করছে। যদিও ইতিহাস ভিন্ন কথা বলে। ইতিহাস বলে, রোহিঙ্গারা মায়ামারে কয়েক শতাব্দী ধরে বসবাস করে আসছে।

সপ্তম-অষ্টম শতাব্দীতে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উদ্ভব হয়। প্রাথমিকভাবে মধ্যপ্রাচ্যীয় মুসলমান ও স্থানীয় আরাকানিদের সংমিশ্রণে রোহিঙ্গা জাতির উদ্ভব। পরবর্তীতে চাঁটগাইয়া, রাখাইন, আরাকানি, বার্মিজ, বাঙালি, ভারতীয়, মধ্যপ্রাচ্য, মধ্য এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মানুষদের মিশ্রণে উদ্ভূত এই সংকর জাতি এয়োদশ-চর্তুদশ শতাব্দীতে পূর্ণাঙ্গ জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। পঞ্চদশ শতাব্দী হতে অষ্টাদশ শতাব্দী পর্যন্ত আরাকানে রোহিঙ্গাদের নিজেদের রাজ্য ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে রোহিঙ্গাদের অবস্থান ছিল মিত্র বাহিনীর পক্ষে। ১৯৪২ সালের মধ্য জানুয়ারির দিকে জাপান বার্মা আক্রমণ করে। ১৯৪২ থেকে ১৯৪৫ সালের মধ্যে শুধুমাত্র বার্মায় জাপানি সেনাদের হাতে অন্তত ১ লাখ ৭০ হাজার থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার মানুষ প্রাণ হারায়। তখন প্রায় ৫০ হাজার রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে চট্টগ্রামে ঢুকেছিল। এছাড়া আরাকানের স্থানীয় রাখাইনদের ( বৌদ্ধ মগদের) সঙ্গে এসব মুসলিম রোহিঙ্গাদের বেশ কিছু দাঙ্গাও হয়েছিল।

১৯৪৬ সালে রাখাইন প্রদেশের মুসলিম রোহিঙ্গা নেতৃবৃন্দ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহকে প্রস্তাব দেয় রাখাইন প্রদেশকে পাকিস্তানের সঙ্গে সংযুক্ত করতে। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি বার্মা ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। কিন্তু রোহিঙ্গারা সকল মৌলিক সুবিধা হতে বঞ্চিত থাকে।সব কাজে পরিচয় পত্রের গুরুত্ব থাকলেও রোহিঙ্গাদের জন্য পরিচয়পত্র ইস্যু হত না।

১৯৬২ সালে বার্মায় সামরিক জান্তা ক্ষমতা দখল করে। ১৯৭৮ সালে জেনারেল নে উইন বার্মার রাখাইন প্রদেশে মুসলিম সশস্ত্র রোহিঙ্গাদের দমন করতে ‘অপারেশন কিং ড্রাগন’ পরিচালনা করে। রোহিঙ্গারা মিয়ানমার সরকারের দৃষ্টিতে অবৈধ অভিবাসী তথা, বিদেশি। তাই, রোহিঙ্গারা কোন ভূমি বা, স্থায়ী সম্পত্তির মালিক হতে পারে না। রোহিঙ্গারা সরকারি চাকরি করতে পারে না, সরকারি কোন দপ্তরে রোহিঙ্গা কোন সেবা পায় না, ব্যাংকে লেনদেন করতে পারে না, সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রের সেবা গ্রহণ করতে পারে না, উপযোগ সেবার (বিদ্যুত, পানি, জ্বালানি) জন্য আবেদন করতে পারে না, স্বপরিচয়ে শিক্ষা কেন্দ্রগুলোতে ভর্তি হতে পারে না। ফলে প্রায় ৮০% রোহিঙ্গা অশিক্ষিত।। শহরের সৌন্দর্য্য বর্ধন, সরকারি জমি অধিগ্রহণের নামে রোহিঙ্গাদের অনেকগুলো মসজিদ ভেঙে ফেলা হয়। এর মধ্যে প্রাচীন কিছু মসজিদও আছে। অনেক রোহিঙ্গাদের ব্যবসায় দখল/বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। মিয়ানমার সরকার ওদের কোন অস্তিত্বই স্বীকার করে না। এইসব পরিচয়হীন রোহিঙ্গারা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডের পথে যেত।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপান বার্মা দখল করলে বার্মিজ জাতীয়তাবাদী ও জাপানিরা মিলে রোহিঙ্গাদের গণহত্যা, জাতিগত ধোলাই শুরু করে। জেনারেল নে উইনের সময় আশির দশকে আদমশুমারির সময় রোহিঙ্গাদের বিদেশি ঘোষণা করে নিপীড়ণ করা হয়। ১৯৯১-৯২ সালে সরকার উত্তর রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের দমনের নামে রোহিঙ্গাদের জাতিগত আক্রমণ করে।

২০১২ সালে শুরু হয় রাখাইন-রোহিঙ্গা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। নিপীড়িত গোষ্ঠীকে বাসস্থান, খাদ্য, শিক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে। দেরিতে হলেও পাশে সহমত প্রকাশ করেছে অনেক দেশ। অনেক সংগঠন। রাখাইনের রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতা বন্ধ, মানবিক সহায়তা নিশ্চিত ও বাস্তচ্যুত রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সদস্য দেশগুলোর উপস্থিতিতে ১৬ নভেম্বর তৃতীয় কমিটিতে রেজ্যুলেশন পাস হয়। ১০টি দেশ বিরোধিতা ও ২৬টি দেশ ভোটে বিরত থাকলে ১৩৫টি দেশ সহমত প্রকাশ করেছে।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই রোহিঙ্গা সংকট নিরসনের লক্ষে অস্ত্রবিরতি, সংলাপ ও উন্নয়নের পরামর্শ দিয়েছেন। পাশে দাঁড়িয়েছে ইউনিসেফ। পাশে দাঁড়িয়েছে আরও ৩৫টি আন্তর্জাতিক সংস্থা। ওরা এখন বাংলাদেশে আশ্রিত। নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের পাশে এখন সবাই। কিন্তু এই মুহুর্তে ওরা স্বপ্ন দেখবে আরো সুন্দর করে কিভাবে বাঁচা যায়। এই গোষ্ঠীকে কেউ কাজে লাগালে ভালো পথে পরিচালনা করা সম্ভব। কিন্তু কেউ যদি ওদেরকে ভিন্নপথে ধাবিত করে তাহলে আরো ভয়ংকর রূপ নেবে রোহিঙ্গা গোষ্ঠী। কারণ ওরা নির্যাতিত। ইতোমধ্যে ওরা পুলিশের ওপর হামলা করেছে, বাঙ্গালিদের ওপর হামলা করেছে এমনকি ইয়াবা নিয়ে ধরা পড়েছে। ওদের হাতে নগদ অর্থ নেই। অর্থ উপার্জন আর শক্তি অর্জন করতে ওদের যেকোন কাজে লাগানো সম্ভব। ওদেরকে একটু স্বপ্ন দেখিয়ে অনেক বড় ধরনের অপরাধ করানো যেতে পারে। সেজন্য বংলাদেশ সরকার ও দেশের জনগোষ্ঠীকে সহমতে ভাবতে হবে। এদের রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন সভা সমাবেশ পন্ড করার কাজে ব্যবহার করতে পারে। এছাড়া একটু লোভ দেখিয়ে ভিভিন্ন নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্য বানাতে পারে। কারণ বেঁচে থাকতে ওদের প্রয়োজন ক্ষমতা। ওরা যদি জন্মভূমিতে ফিরতে চায় তাহলেও প্রয়োজন শক্তি। আবার জন্মভূমিতে ওদের অধিকার আদায় করতেও প্রয়োজন শক্তি। আর এই শক্তি অর্জনের লোভ দেখিয়ে ওদেরকে ভালো-মন্দ উভয় কাজে লাগাতে পারে পৃথক পৃথক মহল।

অং সাং সুচি বিভিন্ন সেমিনারে যাই বলুক না কেন রোহিঙ্গাদের ফেরত কার্যক্রম শুরুর পূর্ব পর্যন্ত নির্যাতিত রোহিঙ্গা ও বাঙ্গালিদের কাছে বিষয়টি ধোঁয়াশাই রয়েছে। যে সময়টুকুই ওরা আমাদের দেশে থাকুক ওই সময়টুকু আমাদের ভাবনার বিষয়। ভাবতে হবে সরকারকে। ভাবতে হবে দেশের প্রত্যেকটি মানুষকে। ত্রুটিপূর্ণ ভাবনায় আতঙ্কিত রোহিঙ্গা যেন আতঙ্কের না হয়। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে রোহিঙ্গারা একতাবদ্ধ হবে। রোহিঙ্গাদের শক্তিশালী প্রতিনিধিত্ব সৃষ্টি করবে। রোহিঙ্গা জনগোষ্টীর মাঝে মুসলমান জঙ্গিবাদ বিরোধী মতাদর্শ বৃদ্ধি পাবে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আদালতে সহযোগিতা চাইতে পারে। বিশ্বে জনমত সৃষ্টির উদ্যোগ নিতে পারে। সবগুলোর জন্য চাই শক্তি। আর এই শক্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে ওদেরকে কোন গোষ্ঠী আতঙ্কের জাতিতে পরিণত করতে যেন না পারে সেদিকে আমাদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। ওদের ক্ষতি হলে তার বড় প্রভাবটি আমাদের ওপর আসবে। কেননা ওরা আমাদের ভূখন্ডেই আশ্রিত।

লেখক: রেজাউল করিম, সংবাদকর্মী

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :