ফটিকছড়িতে হাসপাতালের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন, দুর্ভোগ চরমে

প্রকাশ | ২৩ নভেম্বর ২০১৭, ১৩:৫৮

ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলা সদর ২০ শয্যা হাসপাতালের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। ১০ লাখ ৭৮ হাজার ১৭২ টাকা বিল বকেয়া থাকায় পল্লী বিদ্যুৎ (ফটিকছড়ি জোন) গত মঙ্গলবার বিকালে বিদ্যুৎসংযোগ বিছিন্ন করে। বিদ্যুৎ না থাকায় ওই হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়ে। বন্ধ রয়েছে হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগ। এতে রোগীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।

জানা যায়, ২০১১ সালের আগস্ট থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত উপজেলা সদরের ২০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ১০ লাখ ৭৮ হাজার ১৭২ টাকা বিদ্যুৎ বিল বাকি পড়ে। বকেয়া বিলের ব্যাপারে পল্লী বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্টরা হাসপাতাল সংশ্লিষ্টদের বারবার তাগাদা দিলেও তারা কর্ণপাত করেননি। মানবিক বিবেচনায় বিদ্যুৎ বিভাগ হাসপাতালের লাইন বিছিন্ন করেনি। বোঝা ভারী হওয়ায় শেষ পর্যন্ত লাইন বিচ্ছিন্ন করল বিদ্যুৎ বিভাগ।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালের শেষের দিকে আধুনিক অবকাঠামোতে নির্মিত ২০ শয্যার ওই হাসপাতালটির কার্যক্রম শুরু হয়। জনবলের অভাব আর সরকারি বাজেট না থাকার কারণে এখনো পর্যন্ত হাসপাতালটির ইনডোর চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম চালু করা হয়নি। এমনকি হাসপাতালটির জন্য সরকারিভাবে কোনো ওষুধ বরাদ্দ নেই। পাশের একটি ইউনিয়ন হেলথ সেন্টার থেকে সরকারি বরাদ্দকৃত ওষুধ এনে আউটডোর রোগীদের ফ্রি ওষুধ সরবারহ করছেন সংশ্লিষ্টরা। এমন পরিস্থিতিতে হাসপাতালের এত টাকা বিল পরিশোধ করা অনেকটাই অসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গত ১২ অক্টোবর একবার লাইন বিচ্ছিন্ন করেছিল পল্লী বিদ্যুৎ (ফটিকছড়ি জোনাল অফিস) সংশ্লিষ্টরা। পরে ফটিকছড়ির সাংসদের অনুরোদ, উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তার দুই মাসের মধ্যে বকেয়া বিল পরিশোধের অঙ্গীকার এবং মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্টরা লাইন সচল করেছিলেন। তবে এই সময়ের মধ্যে বিল পরিশোধ না করায় আবার বিচ্ছিন্ন করা হলো সংযোগ।

জানতে চাইলে উপজেনা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সাখাওয়াত উল্লাহ ঢাকাটাইমসকে বলেন, আমি এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করেছি সম্প্রতি। কেন এত টাকা বকেয়া হলো তা আমি জানি না। ওই হাসপাতালের জন্য সরকারি কোনো বরাদ্দ নাই। গত মঙ্গলবার বিকাল থেকে ২০ শয্যা হাসপাতালের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে। হাসপাতালের ডাক্তার-রোগীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। আমি ব্যাপারটি বিভিন্ন মহলে জানিয়েছি। আশা করি একটি সুরাহা হবে।

পল্লী বিদ্যুৎ ফটিকছড়ি জোনের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মুহাম্মদ নিয়াজ উদ্দিন ঢাকাটাইমসকে জানান, মানবিক দৃষ্টি থেকে আমরা অনেক দিন তাদের সুযোগ দিয়েছি। এর আগে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য বিভিন্ন মহলে নানান তদবির করে আড়াই লাখ টাকা এনে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের ব্যবস্থা করেছি। বিদ্যুৎ বিলের ব্যাপারে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংশ্লিষ্টদের বারবার তাগাদা দেয়া হয়েছে। এতে কোনো কিছুই তারা কর্ণপাত করেনি।

তিনি জানান, এর আগে বকেয়া বিলের কারণে ৩১ শয্যার হাসপাতালে বিদ্যুৎ সংযোগ বিছিন্ন করা হয়েছিল। স্থানীয় সংসদ সদস্য সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারীর অনুরোধ ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তার দুই মাসের মধ্যে বিল পরিশোধের লিখিত অঙ্গীকারে আমরা সংযোগ সচল করেছিলাম।

(ঢাকাটাইমস/২৩নভেম্বর/প্রতিনিধি/জেবি)