রোহিঙ্গাদের ফেরার নিরাপদ পরিস্থিতি হয়নি: ইউএনএইচসিআর
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যা-নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে ফিরে যাওয়ার মতো নিরাপদ পরিস্থিতি রাখাইনে তৈরি হয়নি বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর।
রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের সম্মতিপত্রে সইয়ের এক দিন পর ইউএনএইচসিআরের সদর দপ্তর থেকে এক বিবৃতিতে এ কথা জানান সংস্থাটির মুখপাত্র অ্যাড্রিয়ান এডওয়ার্ড।
এর আগে বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের নেপিডোতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এবং মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলরের দপ্তরের মন্ত্রী কিয়া তিন্ত সোয়ে সম্মতিপত্রে সই করেন।
ওই সম্মতিপত্রে কী আছে তা এখনো দেখেননি বলে শুক্রবার জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে জানান ইউএনএইচসিআরের মুখপাত্র অ্যাড্রিয়ান এডওয়ার্ড। তবে সহিংসতার শিকার রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফেরার বিষয়টি যেন স্বেচ্ছায় ও নিরাপদে হয়, তা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন তিনি।
ইউএনএইচসিআরের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এখন মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে [রোহিঙ্গাদের] ফেরার জন্য নিরাপদ ও স্থায়িত্বশীল অবস্থা নেই। সেখান থেকে মানুষ এখনো পালিয়ে আসছে। এখানে আসা অনেক শরণার্থী সহিংসতা, ধর্ষণ এবং বড় ধরনের মনস্তাত্ত্বিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। এখানে আসা রোহিঙ্গাদের কেউ কেউ পরিবারের সদস্য এবং বন্ধুবান্ধবদের মৃত্যু দেখেছে।’
বিবৃতিতে এও উল্লেখ করা হয়, ‘এখানে আসা রোহিঙ্গাদের বেশির ভাগেরই ফিরে যাওয়ার জন্য কোনো ধরনের সংস্থান নেই। তাদের ঘরবাড়ি এবং গ্রাম ধ্বংস হয়ে গেছে। মানবিক সহায়তা পাওয়ার কোনো অধিকার এখনো নেই।’
গত ২৪ আগস্ট কয়েকটি পুলিশ ফাঁড়িতে জঙ্গি হামলার অভিযোগ এনে পরদিন মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের প্রদেশ রাখাইনে সেনা অভিযান চালায় দেশটির সেনাবাহিনী। তারা নির্বিচারে রোহিঙ্গাদের হত্যা ও তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়। এ অবস্থায় গত তিন মাসে প্রায় সাড়ে ছয় লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এর আগে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করা চার লাখের মতো রোহিঙ্গা গত কয়েক দশক ধরে কক্সবাজারে শিবিরে আছে। সব মিলে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছে।
(ঢাকাটাইমস/২৪নভেম্বর/মোআ)