শোভাযাত্রায় যোগ দিতে বাধ্য করা হয়েছে: আমির খসরু

নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৫ নভেম্বর ২০১৭, ১৭:২৮ | প্রকাশিত : ২৫ নভেম্বর ২০১৭, ১৭:১২

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত শোভাযাত্রায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী,ব্যবসায়ীসহ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের যোগ দিতে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও’ আন্দোলন আয়োজিত ‘আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন: প্রয়োজন নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার’ শীর্ষক জাতীয় পরামর্শ বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণকে ইউনেস্কো ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া উপলক্ষে আজ রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। এতে দেশের বিশিষ্ট রাজনীতিক, সংসদ সদস্য, মুক্তিযোদ্ধা, সংস্কৃতিক ব্যক্তি, ক্রীড়াবিদ, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্কুল শিক্ষার্থী, এনজিও কর্মী, স্কাউটসদস্যসহ বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষ অংশ নেয়।

সমাবেশ প্রসঙ্গে খসরু বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগের সমাবেশকে স্বাগত জানাই। একটা গণতান্ত্রিক দল হিসেবে প্রতিটি দলেরই সমাবেশ করার অধিকার রয়েছে। তবে কয়েকদিন আগে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই আরেকটি সমাবেশের আয়োজন করেছিল বিএনপি। এবং সেই সমাবেশ করার জন্য ২৩টি শর্ত দেয়া হয়েছিল, সমাবেশে যেন লোকজন না আসতে পারে তার জন্য গাড়িঘোড়া বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। এটা কি লেভেল প্লেইং ফিল্ড হল? একদল সরকারি সকল সুবিধায় নির্বাচনী প্রচারণা করবে অন্যদল সাধারণ সকল সুযোগ-সুবিধা পাবে না এটা তো গণতন্ত্র নয়। আজ লেভেল প্লেইং ফিল্ড নাই নির্বাচনকালীন সময়ে থাকবে এর তো কোনও আশাই দেখছি না।’

আগামী সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, ‘আগামী নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ যদি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো চিন্তা করে তাহলে তারা ভুল করছে। আগামী নির্বাচনের জন্য দেশের মানুষ প্রস্তুত। তারা সরকার ও নির্বাচন কমিশনের কার্যকলাপ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। সেই ধরনের নির্বাচন করার কোন সুযোগ থাকবে না।’

নির্বাচনকে সামনে রেখে মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের সঙ্গে সরকার চুক্তি করেছে বলে দাবি করেন আমির খসরু। বলেন, ‘এই রোহিঙ্গার ব্যাপারে নির্বাচনকে সামনে নিয়ে সরকারের কিছু পরিকল্পনা আছে। সেটা হচ্ছে দেশের মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য একটি চুক্তি করা হয়েছে এবং সেই চুক্তিতে কতদিনের মধ্যে (রোহিঙ্গাদের) ফেরত নিয়ে যাবে তার কোনো মেয়াদ তারা দিচ্ছে না। অর্থ্যাৎ, এটা ওপেন চুক্তি এবং অনন্তকাল ধরে চলতে পারে এবং এটা কিন্তু আওয়ামী লীগের এই বর্তমান সরকারের একটা চাতুরিকতা।’

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাজার ব্যাপারে আইনমন্ত্রীর দেয়া বক্তব্যের জবাবে আমির খসরু বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে আপনারা ঘরে ফসল তুলবেন সেটা কোনও ভাবেই সম্ভব হবে না। বরং এর জন্য উচ্চমূল্য দিয়ে আপনাদেরকে পালাতে হবে। একজন আইনমন্ত্রীর মুখে এ ধরনের কথা শোভা পায় না। বিচার বিভাগ যে তারা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে তারই প্রতিফলন ঘটেছে আইনমন্ত্রীর বক্তব্যে।’

জাতীয় পরামর্শ বৈঠকে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘সকলের একটা মত আছে, চিন্তা আছে আমি জানি না আমার এ কথাটি বিচার বিভাগের বিপক্ষে যাবে কিনা? প্রধান বিচারপতিকে বিদেশে পাঠানোর নামে সরিয়ে দেয়া হয়েছে অন্য বিচারপতিদের হুমকি দেয়ার জন্য। এখন আমাদের বিচারপতিদের কথা আইনমন্ত্রী, অ্যাটর্নি জেনারেল বলছেন, রাষ্ট্রপতির কার্যালয় থেকে বলা হচ্ছে কিন্তু আমাদের পাঁচজন বিচারপতি কোন কথা বলেন না। তাদের কথা বলেন অন্যজন। আর যখন প্রধান বিচারপতি বিদেশ যাওয়ার সময় বলে জান আমি সুস্থ্য আছি তখন তো আইনমন্ত্রী পদত্যাগ করতে পারতেন। কারণ তিনি আইনমন্ত্রী ডাক্তারের ভূমিকা পালন করে বলেছিলেন আমি নিজে স্বচক্ষে দেখেছি প্রধান বিচারপতি অসুস্থ।’

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে জাতীয় পরামর্শ বৈঠকে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক দিলারা চৌধুরী, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, আতাউর রহমান ঢালী, আব্দুল মান্নান তালুকদার, সুকোমল বড়ুয়া, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সহ-সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/২৫নভেম্বর/বিইউ/এমআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :