পেটে গজ ব্যান্ডেজ রেখে সিজার, ফের অপারেশন

আবু হাসিব খান চৌধুরী পাবেল, হবিগঞ্জ
 | প্রকাশিত : ২৫ নভেম্বর ২০১৭, ১৮:০৯

হবিগঞ্জ শহরে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠছে মিনি হাসপাতাল ও ক্লিনিক। আর এসব ক্লিনিকে অপচিকিৎসার শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এরই ধারাবাহিকতায় শহরের চাঁদের হাসি হাসপাতালের ডাক্তারের অপচিকিৎসার শিকার হয়েছেন এক গৃহবধূ। মল্লিকা দাস (৩৮) নামে ওই গৃহবধূর সিজার করানোর সময় পেটে গজ ব্যান্ডেজ রেখে সেলাই করে দেন ডাক্তাররা। যে ব্যান্ডেজের সাইজ প্রায় চার ইঞ্চি বাই চার ইঞ্চি।

ধীরে ধীরে অসুস্থ হতে থাকেন সেই গৃহবধূ। পরে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর শুক্রবার রাতে প্রায় তিন মাস পর আবার অপারেশন করে বাহির করা হয় ব্যান্ডেজের গজটি। ওই গৃহবধূ এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তবে এসব কর্মকাণ্ডের পরও দায়সারা ভাব করছে চাঁদের হাসি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সচেতন মহল।

গৃহবধূ মল্লিকা দাস আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কাকাইলছেও গ্রামের সঞ্জিব সরকারের স্ত্রী। তারা বর্তমানে শহরের শায়েস্তানগর এলাকার বাসিন্দা।

এ ব্যাপারে মল্লিকা দাসের স্বামী সঞ্জিব সরকার ঢাকাটাইমসকে জানান, গত ২৩ আগস্ট তাঁর স্ত্রীকে সিজার করানোর জন্য শহরের চাঁদের হাসি হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে সেখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নিয়মানুযায়ী ভর্তি করানো হয়। ওই দিনই চাঁদের হাসি হাসপাতালের সিজারের কাজে নিয়োজিত ও হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালের গাইনি কনসালটেন্ট ডা. এসকে ঘোষকে দিয়ে সিজার করায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সিজারের সময় মল্লিকার পেটের ভেতরে গজ ব্যান্ডেজ রেখেই সেলাই করে দেন ডাক্তার। এরপর মল্লিকাকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। সিজারের কয়েকদিন পর থেকেই পেটের ভেতরে ব্যথা অনুভব করতে থাকেন তার স্ত্রী। দিন যত গড়ায় ব্যথা তত বাড়তে থাকে। প্রচণ্ড ব্যথা অুনভব করায় বেশ কয়েকদিন পর আবারও চাঁদের হাসি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। এ সময় ডাক্তার মল্লিকাকে বেশ কয়েকটি পরীক্ষা দেন। পরীক্ষায় তার পেটের ভেতরে কিছু রয়ে গেছে বলে ধারণা করা হয়। পরে আবারও অভিজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর শুক্রবার রাতে ডাক্তার আবুল কালামের পরামর্শে শহরের সিনেমাহল এলাকার হেলথ কেয়ার ক্লিনিকে অপারেশন করেন। অপারেশনের এক পর্যায়ে মল্লিকার পেটের ভেতর থেকে একটি তোয়ালে বের করা হয়।

এদিকে, অপারেশন শেষে পেটের ভেতর থেকে উদ্ধার হওয়া পুরো একটি তোয়ালে দেখে হতভম্ব হয়ে পড়েন তার স্বজনরা। এ সময় তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং পূর্বের ঘটনার সাথে জড়িত ডাক্তার ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের শাস্তির দাবি জানান।

এ ব্যাপারে ডা. এসকে ঘোষ ঢাকাটাইমস বলেন, ‘এমনটাতো হওয়ার কথা নয়। তবে ভুলবশত হয়ে থাকতে পারে।’ তবে এ বিষয়ে হবিগঞ্জ চাঁদের হাসি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. সুচিন্ত চৌধুরী ঢাকাটাইমসকে বলেন, এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ ব্যাপারে চাঁদের হাসি হাসপাতালের পরিচালক নাছির উদ্দিন আহমেদ ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘রোগীর লোকজনের পছন্দমতো ডাক্তারকে দিয়ে সিজার করানো হয়েছে। এখানে আমাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। আমরা আমাদের পক্ষ থেকে সর্ব্বোচ্চ চেষ্টা করেছি বিষয়টি শেষ করার জন্য।’

(ঢাকাটাইমস/২৫নভেম্বর/প্রতিনিধি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :