হাতেখড়িতেই শুরু হোক শিশুর পথচলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, টাঙ্গাইল
 | প্রকাশিত : ২৫ নভেম্বর ২০১৭, ২২:০৩

নাম্মি, রোশনী, রোজা, সামিন, সাবাব, ইউশার মত শতাধিক কোমলমতি শিশু। যাদের অনেকেরই পিতা-মাতাই সরকারি কর্মকর্তা। এককথায় ব্যক্তিগত ও কর্মজীবনে সফল। সচেতনও বটে। সরকারি কর্মকর্তা ছাড়াও আড্ডায় অন্যান্য পেশারজীবীর সন্তানদেরও নজরে পড়ল।

এরকম কোমলমতি শিশুদের আড্ডা, গান, খেলাধুলা আর পড়াশোনার অন্যতম জায়গা হাতেখড়ি। নামটি শুনে হয়তো মনে হতেই পারে, কোমলমতি শিশুদের তো হাতেখড়ি দিতেই হবে। তা ঠিক, কিন্তু এটিই পুরো উল্টো।

অভিভাবকরা যখন চিন্তিত তার আদরের সন্তানের শিক্ষাজীবন নিয়ে। কিভাবে শুরু হবে? কিভাবে বেড়ে উঠবে তার আদরের সন্তান? কি মানসিকতায় সে বেড়ে উঠবে? শিক্ষা জীবনটাকে সে কি বিরক্তকর মনে করবে, নাকি পড়াশোনার মাঝেই খুজে পাবে আনন্দ?

এরকম হাজারো প্রশ্নের মাঝে যখন অভিভাবকরা ঘুরপাক খাচ্ছেন ঠিক সে সময়ই একটি শিশুবান্ধব শিক্ষালয় গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেন টাঙ্গাইলের এক অদম্য তরুণ নওশাদ রানা সানভী। যিনি একাধারে সাংবাদিক, কবি, লেখক ও সংগঠক। কবি ও কবিতা এমন একটি জগৎ, যে জগতে নেই হিংসা, পরাধীনতার কোন বাঁধন। আছে শুধু মুক্তমনে ঘুরে ফেরার আনন্দ। জীবনটাকে বিরক্তকর নয়, আনন্দ খুঁজে বেড়ানো। বাইরে থেকে যাদের দেখে আমরা অনেকেই মনে করি- বিরক্তিকর একটি মানবযন্ত্র। কিন্তু এরাই তাদের সাহিত্যচর্চার মাঝে খুঁজে ফেরে আনন্দ।

সাহিত্য চর্চা, সাংবাদিকতার পাশাপাশি সাহিত্য সংগঠন করা থেকেই সানভীর মনে জেগে উঠে কোমলমতি শিশুদের নিয়ে আনন্দঘন পরিবেশে শিক্ষার হাতেখড়ি দেয়ার। সেই স্বপ্ন থেকেই যাত্রা শুরু করে হাতেখড়ি প্রি-প্রাইমারি স্কুলের।

হাতেখড়ি প্রি-প্রাইমারি স্কুল গড়ার পেছনের অন্তনিহীত অনেকগুলো উদ্দেশ্যের মধ্যে ছিল কোমলমতি শিশুরা যেন কোনভাবেই পড়াশোনাটাকে বোঝা না মনে করে। তারা যেন পড়াশোনার মাঝেই আনন্দ খুঁজে পায়। আর সেই উদেশ্য আজ সফলতার মুখ দেখেছে। খুব অল্প কিছু কোমলমতি শিশুকে নিয়ে হাতেখড়ি প্রি-প্রাইমারি স্কুল যাত্রা শরু করলেও এখন এ পরিবারের সদস্য সংখ্যা অনেক বেশি। আর এর পেছনেও সেই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।

প্রি-স্কুল সম্পর্কে সচেতন অভিভাবক বললেন, সময় বদলেছে, বদলেছে পড়াশোনার ধরন। জাতীয় শিক্ষা কার্যক্রমের নির্ধারিত বয়স ছয় বছর হলেও ক্লাস ওয়ানে যে পাঠ্যবই দেয়া হয়, তা বুঝতেই অনেক সময় লেগে যায় শিশুদের। তাই বাচ্চাকে আগে থেকে তৈরি করতে হয়। তবে শিশু যেন বুঝতে না পারে, তাকে শেখানো হচ্ছে। তাই খেলার মাধ্যমে শিশুকে শিখিয়ে থাকে হাতেখড়ি প্রি-স্কুল। প্রি-স্কুলের শ্রেণিকক্ষের রংও বর্ণিল। দেয়ালজোড়া ফুল, পাখি, লতা-পাতা আর মাছের ছবি ওদের আকৃষ্ট করে স্কুলে যেতে।

কেবল কিছু বর্ণমালা আর রং চিনিয়ে দিয়েই কিন্তু প্রি-স্কুলের দায়িত্ব শেষ নয়। বরং ছোট শিশুদের সামাজিকীকরণের কাজটা করে থাকে হাতেখড়ি প্রি-স্কুল। এমনটা বললেন সচেতন অভিভাবক।

নাগরিক জীবনে ব্যস্ততার কারণে মানুষ দিন দিন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। আর ছোট পরিবারে মা-বাবা সন্তানকে সময়ও দিতে পারেন কম। তাই হাতের ওপর হাত রেখে পেনসিল ঘুরিয়ে শিশুদের বর্ণমালা শেখাতে মা-বাবারা ছুটছেন হাতেখড়ি প্রি-স্কুলে। একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বলেন, আমার ছেলে ফাহামের বয়স আড়াই বছর। বয়সটা ওর একটু কম, তার পরও আমি ওকে প্রি-স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছি। একটাই কারণ, তা হলো, বাসায় যেহেতু বেশি সময় দিতে পারি না, তাই কথা বলা বা শিষ্টাচারের বিষয়টা ও এই স্কুল থেকে শিখতে পারবে। অনেক বাচ্চার সঙ্গে মিশলে ওর মানসিক উন্নতি দ্রুত হবে।

(ঢাকাটাইমস/২৫নভেম্বর/আরকে/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :