এক বছরেও জাতীয়করণ হয়নি ফুলবাড়িয়ার সেই কলেজ

আজহারুল হক, ময়মনসিংহ
| আপডেট : ২৭ নভেম্বর ২০১৭, ১৭:০৮ | প্রকাশিত : ২৭ নভেম্বর ২০১৭, ১৬:৪০

আজ ২৭ নভেম্বর। ঐতিহ্যবাহী ফুলবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজ ট্রাজেডির এক বছর। গত বছরের এই দিনে কলেজটি জাতীয়করণের আন্দোলনে নামলে পুলিশের সাথে আন্দোলনকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে কলেজের সহকারী অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ ও পথচারী ছফর আলীসহ ঝড়ে পড়ে দুটি প্রাণ। এছাড়াও লাঠিপেটা ও পুলিশের গুলিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সাংবাদিকসহ শতাধিক আহত হন।

এ দিনটি কালো দিবস হিসেবে পালন করছে শিক্ষার্থীরা। দিনটিতে কলেজ ক্যাম্পাসে কালো ব্যাজ ধারণ, স্মরণ সভা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে বলে কলেজ সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে এক মাসের মধ্যে কলেজটি জাতীয়করণ করা হবে বলে ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করেছিলেন শিক্ষকরা। তারপর দেখতে দেখতে কেটে গেছে দীর্ঘ এক বছর। কিন্তু জাতীয়করণের কোনো উদ্যোগই নেয়া হয়নি। ইতোমধ্যে দাবি আদায়ের লক্ষ্যে উচ্চ আদালতে রিট করেছেন কলেজের দুই শিক্ষক।

শিক্ষক আন্দোলনের আহ্বায়ক ও কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এসএম আবুল হাশেম বলেন, কলেজ জাতীয়করণের তালিকায় সারা দেশের মধ্যে পাঁচ নম্বরে ছিল ফুলবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজ। অথচ গেজেট প্রকাশের পর দেখা গেল ওই কলেজের নামই নেই। তার বদলে ফুলবাড়িয়ায় এমপি মোসলেম উদ্দিনের প্রতিষ্ঠা করা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা মহাবিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করা হয়েছে।

এই শিক্ষক বলেন, সেদিন শিক্ষকসহ এলাকার সব শ্রেণি-পেশার মানুষ আন্দোলনে নেমেছিলেন। দেড় মাসেও আন্দোলন দমাতে না পেরে শিক্ষকদের ওপর হামলা করে পুলিশ ও সন্ত্রাসীরা। এতে একজন শিক্ষকসহ দুইজন নিহত হন। ডিসেম্বরের শুরুতে ধর্মমন্ত্রীর আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করি আমরা। কিন্তু এখনো ফুলবাড়িয়ার মানুষের প্রাণের দাবি পূরণ হয়নি।

জানা গেছে, জাতীয়করণ করার মতো ন্যূনতম শর্ত পূরণ করতে না পারলেও এমপি মোসলেম উদ্দিনের তদবিরে নাম দেখেই জাতীয়করণ হয় বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা মহাবিদ্যালয়। আর এ কারণেই ঐতিহ্যবাহী ফুলবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজটি জাতীয়করণের তালিকা থেকে বাদ পড়ে যায়। এ ছাড়া এর পেছনে কলকাঠি নেড়েছেন এমপি মোসলেম উদ্দিনের ছেলে ইমদাদুল হক সেলিম।

শিক্ষকরা জানান, ফুলবাড়িয়া কলেজকে জাতীয়করণের দাবিতে গত বছরের অক্টোবর থেকে শিক্ষকরা আন্দোলন শুরু করেন। গত বছরের ২৬ নভেম্বর পুলিশ ও সন্ত্রাসীদের হামলায় কলেজের শিক্ষক আবুল কালাম আজাদসহ দুইজনের মৃত্যু হয়। এরপর আন্দোলন আরও জোরদার হলে বিপাকে পড়ে যান এমপি মোসলেম উদ্দিন ও তার ছেলে ইমদাদুল হক সেলিম। তারা তখন ধর্মমন্ত্রীর দ্বারস্থ হন। পরে ধর্মমন্ত্রীর আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করা হয়।

এমপি মোসলেম উদ্দিন অসুস্থ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।

কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আবুল কালাম ঢাকাটাইমসকে জানান, আমাদের একজন প্রিয় সহকর্মীকে হারিয়েছি। ফলে আমরা দারণভাবে মর্মাহত ও শোকাহত। তার আত্মত্যাগ ফুলবাড়িয়াবাসী চিরদিন মনে রাখবে। কলেজ সরকারিকরণ হলেও তাদের জীবন আমরা ফিরিয়ে দিতে পারবো না। তবে তাদের আত্মত্যাগ যেন বৃথা না যায় সে বিষয়ে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

(ঢাকাটাইমস/২৭নভেম্বর/প্রতিনিধি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :