ঠাকুরগাঁওয়ে লোকসানে হতাশ কপি চাষিরা

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৭ নভেম্বর ২০১৭, ২১:৩৩

ঠাকুরগাঁওয়ে ফুলকপি ও বাধাকপি চাষিরা লোকসানের মুখে পড়েছে। বিশেষ করে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার চাষিরা ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না।

ঠাকুরগাঁও জেলার বেশিরভাগ জমি উঁচু ও বেলে দোÑআঁশ। এসব জমিতে চাষিরা বংশ পরম্পরায় ধান গম পাট উৎপাদন করতো। কিন্তু ফলন তেমন ভালো না হওয়ায় চাষিরা বারবার লোকসান গুণত।

এজন্য সদর উপজেলার নারগুন, জগন্নাথপুর, বেগুনবাড়ি এবং বালিয়াডাঙ্গী, রাণীশংকৈল ও হরিপুর উপজেলার উঁচু জমিতে চাষিরা আর ধান রোপন না করে সবজির আবাদ করছে। এখন মাঠের পর মাঠ শোভা পাচ্ছে করলা, লাউ, বেগুন, পটল, বরবটি, চিচিঙ্গা ও শসা ইত্যাদির ক্ষেত। অল্প সময়ে সবজি চাষ করে লাভের মুখ দেখায় অনেকে চাকরির পেছনে না ছুটে অনেক শিক্ষিত বেকার যুবক ঝুঁকে পড়ছেন সবজি চাষে।

কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় এক লাখ ৩৭ হাজার মেট্রিক টন। জেলার বালিয়াডাঙ্গী, রানীশংকৈল ও হরিপুর উপজেলার ব্যাপক জমিতে ফুলকপি ও বাধাকপি আবাদ করা হয়।

কপি উৎপাদন কালে কৃষকেরা প্রতিকেজি কপি ৫০-৬০ টাকা দরে বিক্রি করে। দিনদিন এ সবজির দাম কমতে কমতে এখন আট থেকে ১০ টাকায় এসে দাঁড়িয়েছে।।

চাষিরা জানান, কপি উৎপাদনে প্রতি বিঘায় উৎপাদন খরচ হয় ৩৫-৪০ হাজার টাকা। কিন্তু বর্তমানে এই সবজির দাম যেখানে গিয়ে ঠেকেছে তাতে চাষিরা তাদের ব্যযকৃত উৎপাদন খরচও তুলতে পারছে না। অথচ খুচরা বিক্রেতা ক্রেতাদের কাছে বেশিদামে বিক্রি করে নিজেরা লাভবান হলেও চাষিরা হচ্ছে বঞ্চিত।

ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী চৌরাস্তার কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, মাঠ থেকে বাধাকপি ও ফুলকপি কৃষক পাইকারি বাজারে সাড়ে ৩০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা দরে বিক্রি করলেও খুচরা বিক্রেতারা সাধারণ মানুষের কাছে এ সবজির দাম নিচ্ছে ২০-২৫ টাকা কেজি। একদিকে যেমন কৃষক ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন অন্যদিকে ঠকছে সাধারণ মানুষ।

বড়বাড়ী ইউনিয়নের কপি চাষি আব্দুল গফুর জানান, তিনি চলতি মৌসুমে দুই একর জমিতে দুই ধরনের কপি চাষ করেছেন। ফুলকপি তোলা পর্যন্ত দুই একর জমিতে প্রায় ৯৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রতি একরে ফলন হয়েছে দেড়শ মণ কপি। তিনি বলেন, শুরুতে কপির ভালো দাম পেলেও বর্তমানে কপি মাঠ থেকে তোলা ও বিক্রি নিয়ে কঠিন পরীক্ষায় পড়েছে। মাঠ থেকে কপি তুলে বাজারে নিয়ে আসতে পরিবহন খরচ প্রতিমণে ৫০ টাকা ব্যয় হচ্ছে। ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা মণ দামে কপি বিক্রি করলে উৎপাদন খরচ নিয়ে অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে।

আব্দুর রহিম নামে অপর একজন জানান, ফুলকপি মাঠ থেকে কাটলে বিক্রি করা ছাড়া উপায় থাকে না। কারণ কপি কেটে বস্তায় করে বাজারে আনতে দাগ পড়ে। দিনে দিনে বিক্রি করা না গেলে সেটা রাখলেই লোকসান।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক খন্দকার মাওদুদুল ইসলাম জানান, সবজি যখন বাজারে নতুন আসে তখন বাজারে দাম বেশি পাওয়া যায়। আর বাজারে আমদানি বেড়ে গেলে কমে যায় ফসলের দাম।

তিনি আরও জানান, একজন চাষি একেকটি ফসল উৎপাদন করলে লাভবান হওয়ার সুযোগ বেশি থাকে। কিন্তু একবার কোনো চাষি বেশি লাভবান হলে পরের বছর অন্যান্য চাষিরাও ওই একই ফসল উৎপাদনে ঝুঁকে পড়ে। ফলে লোকসান গুণতে হয়।

(ঢাকাটাইমস/২৭নভেম্বর/প্রতিনিধি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :