অতি সাধারণ এক সাংবাদিকের কথা-৪৯

আলম রায়হান
 | প্রকাশিত : ২৮ নভেম্বর ২০১৭, ১৫:৫৩

ত্রি-রত্নের যৌথ মালিকানায় সুগন্ধা বেশি দিন চলবে না- এ রকম আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন চট্টগ্রাম-১ আসনের সংসদ সদস্য এম এ জিন্নাহ। তখন তিনি উত্তরায় থাকতেন, আমার বাসা ছিলো তার খুবই কাছে। আমার দেখা মতে তিনি সবচেয়ে স্বজ্জন ব্যক্তি। বাবার পরিচয়ে রাজনীতি আসা এম এ জিন্নাহর ঝোঁক ছিলো সংবাদপত্রের দিকে। প্রথমে তিনি জমির আলীর সাপ্তাহিক ঝরনায় বিনিয়োগ করেন এরশাদ সরকারের আমলে। এরপর জমির আলীকে সম্পাদক করে প্রকাশ করেন দৈনিক দিনকাল। বহু কোটি টাকা গচ্ছা দেবার পর এ পত্রিকার মালিকানা খালেদা জিয়ার নির্দেশে বিনা মূল্যে বিএনপির কাছে হস্তান্তর করেছেন। এদিকে শুরুতে সাপ্তাহিক খবরেরও তিনি ছিলেন পৃষ্টপোষক। এ সবই করেছেন নিজের খেয়ে বনের মহিষ তাড়ানোর সহজাত প্রবণতায়। সম্ভবত রাজনীতিকে প্রবেশ করেও তিনি একই প্রবণতায় হেটেছেন।

১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচনে তাকে মনোনয়ন দেয় বিএনপি। নির্বাচনের সময় চট্টগ্রাম থেকে ফেরার পথে ট্রেনে দেখা হয় সাংবাদিক আলিমুজ্জামান হারুনের সঙ্গে। নির্বাচন নিয়ে আলাপচারিতায় সে বলেছিলো, মিরসরাইতে জিন্না জিতবে। তার কথা শুনে আমরা হাসলাম; একজন নবীন পরাজিত করবে আওয়ামী লীগের ডাকসাইটে নেতাকে! কিন্তু হারুনের ধারণাই সঠিক প্রমাণিত হয়েছিলো নির্বাচনের ফলে। পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারে মন্ত্রী মাহফুজুল হকের সন্তান- এ ছিলো এম এ জিন্নাহর একমাত্র রাজনৈতিক পরিচয়। এ পরিচয়ের উপর ভিত্তি করেই তিনি আওয়ামী লীগ নেতা এবং একাধিক বারের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে নিদারুণভাবে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন ৯১ সালে জীবনের প্রথম নির্বাচনে। এ বিজয়ের মধ্য দিয়েই তার রাজনীতিতে প্রবেশ। তখনও তার বাবা মাহফুজুল হক বেঁচে ছিলেন, বয়স নব্বইর কাছাকাছি। থাকতেন মিরসরাইয়ের গ্রামের বাড়িতে।

পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও চট্টগ্রাম বা ঢাকার তার কোন বাড়ি ছিলো না; রাজনীতি থেকে অবসর নেবার পর কৃষি ছিলো তার পেশা। রাজনীতি তাকে সম্মান ও মানবসেবার প্রশান্তি দিয়েছে, বিত্তবৈভব নয়; বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ছিলো তার ঘনিষ্ঠতা।

রাজনীতি অনেকের জন্য বিত্ত-বৈভবের চূড়ায় পৌঁছানোর অদৃশ্য বোরাক হলেও এম এ জিন্নার জন্য ছিলো মহাশূন্যের ব্লাক হোল। বাবার পরিচয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে বাবার পথেই হেটেছিলেন তিনি, যা ছিলো যুগের পরিক্রমায় আত্মঘাতি। ফলে যা হবার তাই হয়েছে। শুরুতেই রাজনীতি গ্রাস করেছে তার হেগি এন্ড কোম্পানি নামে জাহাজ ব্যবসা; পরে চট্টগ্রাম ও উত্তরার বাড়ি এবং মিরসরাইয়ের অনেক পৈত্রিক সম্পত্তি গেলো রসাতলে। রাজনীতির নেশায় নিজের সম্পত্তি হারিয়ে যৌথ ব্যবসার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাও বিফল! যৌথ ব্যবসায় নিজের তিক্ত অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি বলেছিলেন, ‘আলম ভাই, আপনাদের তিন মালিকের পত্রিকা ব্যবসা টিকে থাকার সম্ভাবনা কম।’ আসলে হয়েছিলেও তাই।

সাপ্তাহিক সুগন্ধা বন্ধ ঘোষণা হবার পর জিন্নাহ ভাইকে বিষয়টি জানালাম। তিনি খুব মন দিয়ে শুনলেন। এ বিষয়ে তার আগের নসিয়ত মনে করিয়ে দিয়ে বাহাদুরি করার ধার দিয়েও গেলেন না। মিনিট খানেক চিন্তা করে বললেন, “এক কাজ করি, আমি একটা পত্রিকার ডিক্লারেশনের ব্যবস্থা করে দেই, আপনি একক অথরিটি নিয়ে চালান; আমি কিছু পুঁজিরও ব্যবস্থা করে দেব।” যেই কথা সেই কাজ; অসম্ভব দ্রুততার মধ্যে ডিক্লারেশন পাওয়া গেলো সাপ্তাহিক সুগন্ধা কাগজের।

খুবই অল্প সময়ের প্রস্তুতিতে সাপ্তাহিক সুগন্ধা কাগজের জোরাল যাত্রা শুরু হলো। অফিস থাকলো সুগন্ধার নয়াপল্টনের সেই রুমটিতেই। যৌথ ব্যবসার সময় এ অফিসটি আমরা নিয়েছিলাম সাত্তার মিয়াজীর পছন্দে। যৌথ এ ব্যবসায় লালবাতি জ্বলার পর প্রথমে এ রুমটি সন্তোষ শর্মার কাছে ছেড়ে দিয়েছিলাম সমঝোতার ভিত্তিতে। কিন্তু পরে এ সমঝোতা টেকেনি। এ অবস্থায় বড় রকমের কোন তিক্ততা ছাড়াই এ রুমটি পুন:দখলে নিয়েছিলাম। এ ক্ষেত্রে প্রধান ও সক্রিয় সহায়ক ছিলো আসলাম সেরনিয়াবাদ। উপযাচক হয়ে সহায়ক হিসেবে দাঁড়ালো কিসলু; সে পাঠিয়ে ছিলো কালা জাহাঙ্গিরকে। পরে অতি অনুগত এই কালা জাহাঙ্গিরের হাতেই খুন হয়েছিলো কিসলু। আন্ডার গ্রাউন্ডে আজ যে অতি অনুগত অনুসারী, কাল সে হয়ে যেতে পারে জীবন হরণকারী; অনেক সময় এ চিত্র মেলে রাজনীতিতেও।

বরিশালের লোক হিসেবে কিসলুর সঙ্গে আমার সম্পর্ক হয়েছিলো আসলামের মাধ্যমে। এর বাইরে জাসদীয় রাজনীতির কিছু কানেকশন তো ছিলোই; সে সময় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না থাকলেও। আসলে প্রথম প্রেমের রেশ তখনও মিলিয়ে যায় না, কখনও একেবারে মিলিয়ে যায় না! ফলে ক্ষমতাসীন সরকারের প্রতিমন্ত্রী ফাইজুল হকের অতি কাছের লোক এবং আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ কানেকশনের আধার হওয়া সত্ত্বেও সন্তোষ শর্মার কাছ থেকে অফিস পুন:দখলে নেয়া মোটেই কঠিন হয়নি।

তবে কঠিন হয়ে দাঁড়ালো পত্রিকায় কাজ করার মতো উপযুক্ত লোক সংগ্রহ করা। চারদিকে মানুষ গিজগিজ করলেও কাজের লোক খুব বেশি আছে বলে মনে হয় না। এ কেবল পত্রিকার বেলায় নয়, সকল ক্ষেত্রেই এটি দু:খজনক বাস্তবতা। দক্ষতার দৈন্যতা নয়; প্রায় ক্ষেত্রেই মূল সমস্যা হচ্ছে মানুষের মাইন্ড সেট। একটি কাজ পাবার প্রত্যাশায় যে আহাজারি থাকে তা প্রায় উবে যায় প্রাপ্তির অল্প সময়ের মধ্যেই। ফলে মনদিয়ে নিজের কাজটি করতে চায় না, কেবল নানান অভিযোগ; সারাক্ষণ কেবল অন্তহীন সমস্যার গীত!

সাপ্তাহিক সুগন্ধা কাগজের জন্য শুরুতে যথাযথ টাকা দিয়ে জনবল নিয়োগ দেয়ার মতো তেমন বিনিয়োগ ছিলো না। এদিকে সুগন্ধার দ্বিতীয় প্রকাশের সময় গড়ে তোলা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী শেলীনা নাসরিন ও তার বন্ধু মাহবুবুর রহমান চলে গেলো সন্তোষ শর্মার টিমে। তারা ছিলো সুগন্ধার দ্বিতীয় যাত্রার জোড়াতালির টিমের ফাউন্ডেশন।

পত্রিকায় কাজ করার কোন অভিজ্ঞতা ছিলো না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রী শেলীর। তাকে তৈরি করে নিতে হয়েছে, তবে বেশি বেগ পেতে হয়নি। প্রথমে তার সঙ্গে সাপ্তাহিক পেমেন্টের সমঝোতা হলো। কারণ তখনও পত্রিকা নিয়মিত প্রকাশিত হবার বিষয়ে নিশ্চিত ছিলাম না। ফলে মাসিক বেতনের কমিটমেন্টে গিয়ে কাউকে বিপদে ফেলতে চাইনি। অবশ্য দেড় মাসের মধ্যে তাকে মাসিক ভিত্তিতে স্থায়ী করলাম। কয়েক দিন পর অফিস সহকারী সেলিম হাঁপানি রোগীর মতো জোরে জোরে শ্বাস নিতে নিতে আসলো; যেনো এখনই নি:শ্বাস ত্যাগ করবে সে! বললো, “স্যার! দেখলাম শেলী আপা একটি ছেলের সঙ্গে হাসতে হাসতে যায়।” তার বিবেচনায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি খবর এনেছে সে। আমি ধমক দিয়ে বললাম, ‘এইসব দেখা তোমার কাজ না, নিজের কাজ করো, যাও!’ আমার কথা শুনে খুবই হতাশ হলো অফিস সহকারী সেলিম; এরপর আর সে কারো বিরুদ্ধে কোন নালিশ করেনি।

পরদিন শেলীকে বললাম, ‘ছেলেটাকে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রাখো কেন; অফিসে আসতে বলো।’ শেলী যা বোঝার বুঝলো; কিছু বললো না, লাজুক হাসলো কেবল। পরদিন ‘সুবোধ বালক’ মাহবুবকে অফিসে নিয়ে এলো। পরিচয়ে জানা গেলা সেও বরিশালের, তারা সহপাঠি। শেলীর কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত মাহবুব বসে থাকতো চাতক পাখির মতো। এরপর তারা দু’জন একত্রে যেতো। এছিলো প্রায় প্রতিদিনের রুটিন। এতে মাহবুববের অনেক সময় নষ্ট হতো। একদিন ‘মাহবুবকে বললাম, প্রতিদিনই তো আসো, অনেক সময় থাকো; কিছু কাজ করো। এতে সময় দ্রুত কাটবে, কিছু পয়সাও পাবা।’ আমার এ প্রস্তাবে মাহবুবের চেয়ে বেশি খুশি হয়েছিলো শেলী। শেলীর মতো পরিশ্রমী এবং দায়িত্বশীল মেয়ে আমি আর দ্বিতীয়টি দেখিনি; কাছাকাছি বিবেচনা করা যায় বাংলাভিশনের নাসরিন ও মাইটিভির স্মৃতিকে। শেলী পরে একটি সরকারি কলেজের শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন স্থায়ী করেছে। বিসিএস ফেইস করে মাহবুব হয়েছে সরকারি কর্মকর্তা; সম্ভবত সমাজকল্যাণ কর্মকর্তা। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রেমের সফল ধারাবাহিকতায় তারা হয়েছে স্বামী-স্ত্রী; এই পর্যন্ত জানি: ছানা-পোনার খবর জানি না। আমার পরিশ্রমে কাঁদামাটি থেকে তৈরি হওয়া শেলী-মাহবুব আমার টিম ছেড়ে শর্মার সঙ্গে চলে যাওয়ার বিষয়টি আমার জন্য বড় রকম ধকল ছিলো। যাবার আগে শেলী আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলো, “ভাইয়া কি করবো?” আমি বলেছিলাম, ‘আমার প্রকল্প কতটা স্ট্যাবল হবে তা নিশ্চিত না; শর্মার পত্রিকা সহসা বন্ধ হবার সম্ভাবনা কম। এখন তোমরা যা ভালো মনে করো, সিদ্ধান্ত তোমাদের।’ শেলী-মাহবুব তাদের বাস্তব বিবেচনায় শর্মার টিমকে ভালো মনে করে চলে গিয়েছিলো। অবশ্য মাস খানেকের মধ্যেই তারা দু’জনই ফিরে এলো; যেনো তারা বেড়াতে গিয়েছিলো। কেন গেলো, কেন ফিরলো- তা আমি কখনো জিজ্ঞাসা করিনি। হয় তো শর্মার টিমে তারা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেনি অথবা শর্মা তাদের বিশ্বাস করেনি; এ ক্ষেত্রে মোস্তফা কামালেরও নেতিবাচক ভূমিকা থাকতে পারে।

শেলীনা নাসরীন ও মাহবুবুর রহমান ফিরে আসার আগেই সাপ্তাহিক সুগন্ধা কাগজের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন সালাম জাহাঙ্গীর, মিলি তাজনাহার, রেহনুমা রহমান, ফরিদ বাশার, আমিনুল হক ভূইয়া, কাঞ্চন কুমার দে, তুষার অদিত্য, দীনু ফারজানা, লিরা সুলতানা, ফাতেমা আলম রুনা, এনায়েত হোসেন বাচ্চু, শরিফুল ইসলাম রাব্বানী, নরেশ মধু, লিটন বাশার, জাহাঙ্গির হোসেন, গাজী তাহের লিটনসহ অনেকে। মোটমুটি একটা হাট-বাজার বানিয়ে ফেলেছিলাম দুই সপ্তাহের মধ্যে। ফলে ফিরে আসা শেলী-মাহবুবকে তেমন প্রয়োজন ছিলো না তখন। তবুও ফিরিয়ে দেইনি তাদের পূর্বের অবদানের কথা বিবেচনা করে। পরবর্তীতে নাঈম ভাইয়ের টিমে কাজ করে বুঝেছি, মিডিয়ার ক্ষেত্রে যাওয়া-আসার পথ অবারিত রাখা ভালো। খুব কাছ থেকে দেখেছি, কেউ যেতে চাইলে তাকে অনেকটা এগিয়ে দিতেন নাঈম ভাই; আবার আসতে তাইলে সাদরে নিতেন; যেনো যায়ইনি। এমন ঘটনা আমার নিজের ক্ষেত্রেও একাধিকবার ঘটেছে নাঈম ভাইয়ের টিমে। ফলে সব সময়ই মনে করে আসছি, নাঈম ভাই আমার পেশাগত স্থায়ী ঠিকানা।

নাঈম ভাইয়ের সঙ্গে পরিচয় হবার আগে আমি শেলী-মহিবুবের প্রতি যতটা মানবিক আচরণ করেছি তার চেয়ে অনেক বেশি মানবিক ছিলেন মোস্তফা ফিরোজ, মাসুদ কামাল ও প্রভাষ আমিনসহ আরও কয়েকজন। একেবারে পুরনো সম্পর্কের কারণে মানবিক বিবেচনায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে ছিলেন তারা। ফলে জনবলের দিক থেকে সুগন্ধা কাগজের বেশ জোরালো অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিলো শুরুতেই।

১৯৯৭ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত সুগন্ধা কাগজের প্রথম সংখ্যা; প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া প্রচ্ছদ রিপোর্টটি লিখেছিলেন মোস্তফা ফিরোজ। ১ মার্চ দ্বিতীয় সংখ্যায় হুজুর সাইদাবাদীকে নিয়ে প্রচ্ছদ রিপোর্ট তৈরি করেন মাসুদ কামাল। আর এ বিষয়ে বুদ্ধিদীপ্ত ও আকর্ষণীয় প্রচ্ছদ এঁকেছিলেন যথারীতি কামাল পাশা চৌধুরী। প্রচ্ছদ রিপোর্টের সূচনা পর্বে মাসুদ কামাল লিখেছিলেন, “প্রতারণার সবচেয়ে উর্বর ক্ষেত্র হচ্ছে আধ্যাত্যিক ক্ষমতার মাধ্যমে মানুষের নানান ধরনের বিপদ দূর করা। এই ভণ্ড সাধকরা পারে না এমন কিছু তাদের অভিধানে নেই। এমনই একজন সাধক হচ্ছেন কথিত হুজুর সাইদাবাদী। সে বিখ্যাত হচ্ছে অন্যের স্ত্রীর গর্ভে সন্তান সৃষ্টির জন্য। কথিক হুজুর এই অসম্ভব এবং অশ্লীল বিজ্ঞাপন দিয়ে মানুষকে প্রতারণা করে আসছে বহু বছর ধরে।” এ রিপোর্টের কারণেই দ্বিতীয় সংখ্যায়ই সুগন্ধা কাগজ পাঠক আকৃষ্ট করতে পেরেছিলো; যাকে বলে ‘পাঠক ধরা’। বিকালের মধ্যে রাজধানীর সকল স্টল খালি হয়ে গিয়েছিলো; হকাররাভির করলো অফিসে। ঢাকার বাইরে থেকে ফোন আসতে থাকলো অতিরিক্ত পত্রিকা পাঠাবার জন্য। পাঠকদের সে এক অস্থির অবস্থা! এ পাঠক ধরে রাখার জন্য একটি কৌশল অলম্বন করা হয়েছিলো। তা হচ্ছে প্রতিমাসের চার সংখ্যার মধ্যে অন্তত একটি অনুসন্ধানী ও সাহসী প্রচ্ছদ রিপোর্ট করা। এ পলিসির ধারাহিকতায় প্রকাশনার দ্বিতীয় মাসের ১২ এপ্রিল প্রকাশিত অষ্টম সংখ্যার প্রচ্ছদ রিপোর্ট ছিলো, “নেপথ্য খুনিরা প্রস্তুত: ’৭৫-এর মতো বড় লাশ ফেলার ষড়যন্ত্র।” তৃতীয় মাসের ১০ মে প্রকাশিত সুগন্ধা কাগজের ১১তম সংখ্যার প্রচ্ছদ রিপোর্ট ছিলো, “খুনের নেশায় আবার মেতেছে জামায়াত।” এ সাহসী ধারায় পাঠক ধরার আরও অনেক কৌশলের পাশাপাশি গেদু চাচার খোলাচিঠি তো ছিলোই।

আলম রায়হান, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :