ময়মনসিংহে রেলক্রসিং যেন মৃত্যুফাঁদ
ময়মনসিংহ শহরের ব্যস্ততম এলাকা বিদ্যাময়ী স্কুল হয়ে পচাপুকুরপাড় যেতে হলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রেললাইন পারাপার হতে হয় পথচারীদের। এখানে রেলক্রসিংয়ে নেই কোন নিরাপত্তা।
ময়মনসিংহ রেল জংশন স্টেশন থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছেড়ে যাওয়া প্রতিটি ট্রেন এই ক্রসিং অতিক্রম করে। শহরের এমন অনেক রেলক্রসিংয়েই নেই সিগন্যাল। ফলে প্রায়ই ঘটে নানা দুর্ঘটনা।
রেললাইন পার হচ্ছিলেন বিদ্যাময়ী স্কুলের শিক্ষার্থী উম্মে জহুার। তিনি বলেন, এই রেললাইনে ট্রেন এলে কেউ বুঝতে পারে না। কারণ এখানে কোনো সিগন্যাল নেই। এখানে একটি সিগন্যালের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
তার মত ভুক্তভোগী অনেকেই। তারা বলেন, এভাবে রেললাইন পারাপারে অনেক ঝুঁকি। রেললাইনের পাশে প্রচণ্ড শব্দ থাকায় ট্রেন আসলেও বোঝা যায় না।
অপরদিকে ময়মনসিংহে রেল জংশন সংলগ্ন শহরের নতুন বাজার রেলক্রসিং এলাকায় ফেসিং ও ট্রেনিং জয়েন্ট পয়েন্টের লাইনের স্লিপার বেঁকে গেছে। সেখানে নতুন ব্রিজ নির্মাণের সাথে সাথেই রাস্তা বেদখল হয়ে যাচ্ছে। জোড়াতালি স্লিপার আর ব্রিজের রাস্তা বেদখলের কারণে নির্মাণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হওয়ায় চলাচল ঝূঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
সচেতনতা ও কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাবেই এমনটা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করেছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, জংশন সংলগ্ন নতুন বাজার এলাকায় রেলের ফেসিং ও ট্রেনিং পয়েন্টের স্থানসমূহে অনেক স্লিপার আঁকা-বাঁকা। সেখানে অনেকটিতেই নেই ক্লিপ ও নাট বল্টু। যা রাতের আঁধারে খুলে নিয়ে গেছে চোর। অনেক জায়গায় বহু দিনের পুরাতন নাট বল্টু রোদ বৃষ্টিতে থেকে থেকে তার কার্যক্ষমতা হারিয়ে শুধুই চিহ্ন হিসেবে জানান দিচ্ছে।
সম্প্রতি লাইনের উপর স্থাপন করা হয়েছে নতুন ব্রিজ। সেই ব্রিজের রাস্তাটি দিন দিন বেদখল করা হচ্ছে। সেখানে বসে দোকান পাট।
রেল বিভাগ বলছে, এই রাস্তাটি সোজাসোজি হয়ে আরো বহুদূর এগুবে। এভাবে বেদখল করে রাখায় নির্মাণ কাজে মারাত্মক প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছে।
তারা বলছে, রেললাইনের পাশে বেদখল তো দূরে থাক- এখানে সর্বসাধারণের হাঁটাচলা বা অবস্থান আইন অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু সে আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রেললাইন ঘিরে বাজার, প্লাটফরমের উপর দিয়ে অবাধে যানবাহন ও লোক চলাচলের প্রবণতা যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে।
বেদখল করে দোকান-পাট গড়ে ওঠায় এ আইন ভুলতে বসেছে সাধারণ মানুষ। ফলে দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটছে অহরহ।
সচেতন মহল এ বিষয়ে তড়িৎ ব্যবস্থা নিতে রেল বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে ময়মনসিংহ রেল বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ক্রসিংয়ের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।
(ঢাকাটাইমস/৩০নভেম্বর/ব্যুরো প্রধান/এলএ)