দাওয়াতুল হকের ইজতেমায় ধর্মপ্রাণ মানুষের ঢল

প্রকাশ | ০২ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৩:৫২

ঢাকাটাইমস ডেস্ক

আলেম-ওলামা, ধর্মপ্রাণ লাখো মানুষের উপস্থিতিতে ধর্মীয় ভাব-আবেগ ও গম্ভীর্যের মাধ্যমে চলছে মজলিসে দাওয়াতুল হকের ২৩তম কেন্দ্রীয় ইজতেমা।

আজ শনিবার সকাল ৯টা থেকে যাত্রাবাড়ীর জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলূম মাদানিয়ায় (যাত্রাবাড়ী বড় মাদরাসা) দিনব্যাপী এ ইজতেমা শুরু হয়েছে।

ইজতেমা উপলক্ষ্যে সুন্নতের আমলি মশক, দেশ-বিদেশের আলেমদের গুরুত্বপূর্ণ বয়ান, জিকির এবং দোয়া-মোনাজাতসহ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

মজলিসে দাওয়াতুল হক মহানবী সা. এর  জীবন, আদর্শ ও সুন্নত চর্চার একটি বিশেষ কেন্দ্র। দেশব্যাপী সাধারণ মানুষদের আজান, ইকামত, নামাজ, ওজু, জানাজাসহ সুন্নতের ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ হয়।

এবারের কেন্দ্রীয় ইজতেমার উদ্বোধনী ভাষণে মজলিসে দাওয়াতুল হকের আমির, গুলশান আজাদ মসজিদের খতিব ও যাত্রাবাড়ী মাদরাসার মুহতামিম মুহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমুদুল হাসান বলেন, আমাদের দেশে ক্যাথলিক ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস শান্তির বাণী নিয়ে আগমন করেছেন। আমরা দেশবাসী রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে তার ভাবনা ও অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাই। আমি আশা রাখছি, কীভাবে তিনি রোহিঙ্গা সমস্যাকে দেখছেন তা আমাদের সামনে স্পষ্ট করবেন।

তিনি পোপ ফ্রান্সিসের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমাদের দেশ ও সরকার রোহিঙ্গা সমস্যায় জর্জরিত। আমরা রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছি, যতটুকু সম্ভব সাহায্য করেছি এবং এখনো করছি। আমরা চাই তিনি আমাদের পাশে এসে দাঁড়ান।

তার প্রতি আমাদের আহ্বান, রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে তিনি যথেষ্ট ভূমিকা রাখবেন।

মজলিসে দাওয়াতুল হকের ইজতেমা উপলক্ষে বিশেষ নসিহতনামা পাঠিয়েছেন, ভারতের হজরতজি শাহ আবরারুল হক হারদুয়ী রহ. এর জানাশীন, মাওলানা কালিমুলল্লাহ।

বিশেষ নসিহতনামায় তিনি বলেছেন, আমাদের উচিত সুন্নতের গুরুত্ব দেয়া, গোনাহ থেকে বেঁচে থাকা, বিশুদ্ধ কোরআন তেলাওয়াত করা এবং ইখলাসের সাথে কাজ করা চাই।

তিনি বলেন, দীনের যে প্রকারের খেদমতই করা হোক তা কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই করা। ব্যক্তি, সংগঠন বা প্রতিষ্ঠান কোনো কিছুই মাকসাদ হতে পারে না।

পারস্পরিক ঐক্য বজায় রাখার ব্যাপারেও গুরুত্বারোপ করেছেন তিনি।

দাওয়াতুল হকের ইজতেমার সর্বাঙ্গীণ কল্যাণ ও সাফল্য কামনা করে বাণী দিয়েছেন বাংলাদেশের শীর্ষ আলেম শায়খুল ইসলাম আল্লামা আহমদ শফী। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ ও উলামায়ে কেরামের এ সম্মিলন মোবারক হোক এবং আল্লাহ তায়ালা দেশ ও জাতির হেদায়েতের উপলক্ষ করুন।

সাবেক রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত জাতীয় পার্টি  চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদও দাওয়াতুল হকের ইজতেমার সাফল্য কামনা করে বিশেষ বাণী দিয়েছেন।

দাওয়াতুল হকের ইজতেমায় অংশ নেয়ার কথা রয়েছে ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দের বুখারির শায়েখ, আল্লামা মুফতি কমরুদ্দীন, মক্কার উম্মুল কুরা ইউনিভার্সিটির প্রফেসর আওলাদে রাসুল শেখ নাসের মক্কী, বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকের সিনিয়র সহসভাপতি ও আল হাইআতুল উলয়ার কো-চেয়ারম্যান আল্লামা আশরাফ আলী, চট্টগ্রাম জিরি মাদরাসার মুহতামিম আল্লামা শাহ মোহাম্মদ তৈয়ব, পীরে কামেল প্রফেসর হামিদুর রহমান, মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ডিন মাওলানা শেখ হাসান মুসা, দারুল উলুম দেওবন্দের উস্তাদ মুফতি রাশেদ, পটিয়া মাদরাসার প্রধান মুফতি শামসুদ্দীন জিয়া, মুফতি ওবায়দুল্লাহ সিদ্দিক বাজার, জামিয়া রাহমানিয়া আলী অ্যান্ড নুরের মুহতামিম মুফতি মনসুরুল হক, বসুন্ধরা ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক মাওলানা আরশাদ রাহমানি প্রমুখের।

আরও উপস্থিত থাকবেন শায়খ যাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক মুফতি মিযানুর রহমান সাঈদ, কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা আবদুল কুদ্দুস, বায়তুল উলুম ঢালকানগরের মুহতামিম মুফতি জাফর আহমদ, ঢালকানগরের পীর মাওলানা আবদুল মতিন, বিশিষ্ট আলেম ও ওয়ায়েজ মুফতি মুশতাকুন্নবী, বসুন্ধরা মারাসার মুফতি সুহাইল, মতিঝিল ওয়াপদা মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা রফিক আহমদ প্রমুখ।

এছাড়াও দেশ বরেণ্য আলেম-উলামা ও পীর-মাশায়েখরা ইজতেমায় উপস্থিত থাকবেন।

রাত ৯টায় আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে ইজতেমা শেষ হবে।

(ঢাকাটাইমস/০২ডিসেম্বর/জেবি)