স্কুলে শিশু যৌন নির্যাতনের ঘটনায় প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে মামলা
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে দক্ষিণ কলকাতার একটি স্কুলে চার বছরের এক শিশুকে যৌন নির্যাতনের ঘটনায় অভিভাবকদের বিক্ষোভের মুখে ঐ স্কুলের প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। দক্ষিণ কলকাতার রানি কুঠিতে অবস্থিত জিডি বিড়লা স্কুলে গত বৃহস্পতিবার ওই নিপীড়নের ঘটনা ঘটে।
রবিবার অভিভাবকদের প্রবল চাপে প্রিন্সিপাল শর্মিলা নাথের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা করে পুলিশ। শর্মিলা নাথকে গ্রেপ্তারের সুপারিশও করেছে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন৷রবিবারই কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের কমিশনার রাজীব কুমার এবং যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ ) বিশাল গর্গের সঙ্গে কথা বলেছেন৷
প্রিন্সিপাল শর্মিলা নাথের বিরুদ্ধে পকসো আইন ও ভারতীয় দণ্ডবিধিতে তথ্য গোপন করা, জালিয়াতি ও অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। রবিবার দুপুরে যাদবপুর থানায় ওই অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতার বাবা।
এক পুলিশ কর্মকর্তার মতে, প্রিন্সিপাল শর্মিলা নাথ ছাত্রীদের নিরাপত্তার উপযুক্ত বন্দোবস্ত করেননি। তিনি ঘটনার কথা শুনেও প্রথমে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন, ধামাচাপা দিতে চেয়েছেন। সেই জন্য পকসো আইনের ২১ নম্বর ধারায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়েছে। ওই আইনে অভিযোগ হলে গ্রেপ্তারি এড়ানো মুশকিল বলে পুলিশের একাংশের অভিমত।
স্কুলটি যে সংস্থার অধীনে, তার মুখপাত্র সুভাষ মোহান্তি প্রিন্সিপালকে গ্রেপ্তার ও তার পদত্যাগের দাবি প্রসঙ্গে বলেন, ‘যে কোনও সিদ্ধান্ত নিতেই আমরা প্রস্তুত। কিন্তু বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে পুরোটাই হবে অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে।’
আলোচনায় না বসে প্রিন্সিপালকে নিয়ে অভিভাবকদের দাবি মেনে নেয়া হবে না বলেও সাফ জানান তিনি।
রবিবার ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা টালিগঞ্জ ট্রাম ডিপোর সামনে পথ আটকে অবস্থান শুরু করলে সেখানে যান যাদবপুর ডিভিশনের ডিসি রূপেশ কুমার। অবরোধ তোলার অনুরোধ করলে নির্যাতিতার বাবা তাকে জানান, আগে প্রিন্সিপালকে গ্রেপ্তার করতে হবে। বিক্ষোভকারীরাও সেই দাবি তোলেন। মেয়ের শারীরিক অবস্থার কথা বলতে গিয়ে ডিসি-র হাত ধরে কেঁদে ফেলেন বাবা।
ডিসি তখন জানান, নির্দিষ্ট অভিযোগ না পেলে এভাবে কাউকে গ্রেপ্তার করা যায় না। তিনি বলেন, ‘আমরা তদন্ত করছি। যার বা যাদের দোষ পাওয়া যাবে, কাউকেই ছাড়া হবে না।’
দুপুর ১২টার দিকে শিশুটির বাবা যাদবপুর থানায় পৌঁছে প্রিন্সিপাল শর্মিলা নাথের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরে ওই মামলা যায় গোয়েন্দা বিভাগের হাতে। প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা রুজু করেছে জেনে অভিভাবকদের ক্ষোভ কিছুটা কমে।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
(ঢাকাটাইমস/৪ডিসেম্বর/এসআই)