রাঙামাটিতে দরপত্র জমায় যুবলীগ নেতার বাধা

রাঙামাটি প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৬ ডিসেম্বর ২০১৭, ২২:৩১

রাঙামাটিতে যুবলীগ নেতার বাধার কারণে দরপত্র জমা দিতে না পারার অভিযোগ করেছেন ঠিকাদাররা। আর এ কারণে তারা টেন্ডার বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।

ওই যুবলীগ নেতাও অভিযোগ স্বীকার করে বলেছেন, তার সঙ্গে সমঝোতা করে সবার দরপত্র জমা দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঠিকাদাররা কথা না রাখায় তিনি বাধা দিয়েছেন।

বুধবার পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের অধীন কাপ্তাই জাতীয় উদ্যানে ‘প্রশান্তি পিকনিক’ স্থান দরপত্র দাখিলের শেখ দিন ছিল। বুধবার দুপুর সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত ছিল দরপত্র জমাদানের শেষ সময়। দরপত্র জমা দিতে ঠিকাদাররা সকালেই রাঙামাটি শহরে দক্ষিণ বনবিভাগের কার্যালয়ে যান। কিন্তু কাপ্তাই উপজেলা যুবলীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন ও তার সহযোগীদের বাধার মুখে তাদের ফিরে আসতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তারা।

এ বিষয়ে দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা তৌফিকুল ইসলাম ও কোতয়ালী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

দরপত্র জমা দিতে না পারায় টেন্ডার বাতিল করে পুনঃ টেন্ডার দেওয়ার দাবি করেছেন দুই রিসোর্ট ব্যবসায়ী চৌধুরী হাসান মাহমুদ আকবরী ও টিএম এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী ওয়াকার উদ্দিন মো. তারেক।

ওয়াকার উদ্দিন বলেন, ‘কাপ্তাই যুবলীগের সভাপতি ১০/১৫ জন ক্যাডার নিয়ে বন বিভাগের কার্যালয়ে মারমুখী অবস্থায় পাহারা ও ভয়ভীতি দেখানোয় সাধারণ ঠিকাদারেরা দরপত্র জমা দিতে পারেননি। এজন্য তারা বন বিভাগের কাছে পুন টেন্ডার চেয়ে আবেদন করেছেন।’

দুপুরে খবর পেয়ে দৈনিক আমাদের সময় এর রাঙামাটি প্রতিনিধি জিয়াউর রহমান জুয়েল বন বিভাগের কার্যালয়ে যান। এসময় তিনি ঠিকাদারদের বাধা দানকারীদের ছবি তুলতে গেলে তারা তার ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে তাকে লাঞ্চিত করে।

জুয়েল বলেন, খবর পেয়ে তিনি বন কর্মকর্তার কার্যালয়ে যান। এ সময় দপ্তরের অফিস সহকারীর কক্ষের দরজার সামনে একটি দরপত্রের বাক্সের উপর তিন যুবক বসে ছিলেন। দরজা, বাইরে ও উঠানে ছিল ১০/১৫ জন যুবকের পাহারা।

এ সময় কার্যালয়ে বন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ কোন কর্মকর্তা ছিলেন না। বনকর্মকর্তা তৌফিকুল ইসলাম পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সে একটি সভায় ছিলেন। ঐ তিন যুবকের ছবি তুলতে গেলে কাপ্তাই উপজেলা যুবলীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন ক্যামেরা ছিনিয়ে নেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে যুবলীগ নেতা নাছির উদ্দিন বলেন, ‘যারা অভিযোগ করেছে তাদের সাথে আমাদের সমন্বয় করে দরপত্র জমা দেওয়ার কথা ছিল। জমা দেওয়ার আগে আমাদের পর্যটনে বসে আলোচনা করার কথা ছিল। কিন্তু তারা আমাদের সাথে কোন আলোচনা না করে দরপত্র জমা দিতে যায়। তাই আমরা বাধা দিয়েছি।’

সাংবাদিকের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার কথা স্বীকার করে জুয়েল বলেন, ‘সে অবস্থায় ছবি তোলার কারণে আমরা ক্যামেরা কেড়ে নিই। পড়ে অবশ্য ফেরত দিয়েছি।’

রাঙামাটি কোতয়ালী থানায় ডিউটি অফিসার এএস আই আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বন বিভাগের ঘটনা নিয়ে ঠিকাদাররা থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছে। ওসি স্যার ফ্রি হলে তাকে দেওয়া হবে।’ সব পক্ষই দরপত্র জমা দিতে বাধা দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করলেও বেমালুম অস্বীকার করেছেন বন কর্মকর্তা তৌফিকুল ইসলাম। তার দাবি, তাঁর কার্যালয়ে সিডিউল নিয়ে কোন ঝামেলা হয়নি। তিনি বলেন, ‘কর্মশালায় থাকায় আমি অফিসে থাকতে পারিনি। নিরাপত্তার জন্য পুলিশকে বলেছিলাম, কিন্তু তারা কেন আসেনি জানি না। তবে সিডিউল ছিনতাইয়ের কোন অভিযোগ পাইনি আমি।’

ঢাকাটাইমস/০৬ডিসেম্বর/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :