মাগুরা মুক্ত দিবসে নানা কর্মসূচি
আজ ৭ ডিসেম্বর মাগুরা মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মাগুরা পাক হানাদার মুক্ত হয়। জয় বাংলা শ্লোগানে মুখরিত হয় গোটা জেলা। মুক্তিযোদ্ধারা গোটা শহরের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি গ্রহণ করে। উড়তে থাকে স্বাধীন দেশের মানচিত্র খচিত পতাকা। দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
১৯৭১ এর ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের পরপরই দেশের অন্যান্য স্থানের মতো মাগুরায় সর্বস্তরের মানুষ মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণ করে। প্রাথমিকভাবে মাগুরা শহরের নোমানী ময়দান ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকার ক্যাম্প ও ওয়াপদা ভবনে মুক্তিযোদ্ধারা সংগঠিত হয়। এখান থেকেই সমগ্র মাগুরার প্রতিরোধযুদ্ধ নিয়ন্ত্রণ হতে থাকে।
পরবর্তী সময়ে অত্যাধুনিক অস্ত্রসজ্জিত পাক সেনারা মাগুরায় পৌঁছালে মুক্তিযোদ্ধারা শহর ছেড়ে মাগুরার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।
মাগুরা শহরের পি.টি.আই ভবন, ওয়াপদা ভবন, সরকারি হাইস্কুল, সরকারি কলেজে, আনছার ক্যাম্পে পাকসেনারা ঘাঁটি স্থাপন করে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ, অগ্নিসংযোগ ও নির্যাতন চালায়।
মুক্তিযোদ্ধারা মাগুরার শ্রীপুর, বিনোদপুরসহ বিভিন্ন স্থানে হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে বীরোচিত যুদ্ধ করে। শ্রীপুর ও শৈলকুপা থানা দখল করে নেয়। তারা একাধিক সম্মুখ যুদ্ধে পাকসেনা ও রাজাকারদের হতাহত করে।
১৯৭১ এর ৬ ডিসেম্বর আকাশপথে মিত্র বাহিনীর বিমান হামলা এবং স্থলপথে মুক্তিবাহিনীর চাপে পাক সেনারা মাগুরায় টিকতে না পেরে ফরিদপুর হয়ে ঢাকার দিকে পালাতে শুরু করে।
৭ ডিসেম্বর ভোরে মুক্তিবাহিনী বিজয়ের বেশে শত্রুমুক্ত মাগুরা শহরে প্রবেশ করে পাকসেনাদের বিভিন্ন ক্যাম্প ও গোলা বারুদ দখল করে নেয়।
পরে মিত্র বাহিনী মাগুরায় এসে পৌঁছালে তাদের সাথে যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে পলায়নপর পাক সেনাদের মাগুরার পার্শ্ববর্তী কামারখালী গড়াই ও মধুমতি নদী পার হয়ে যেতে বাধ্য করে। পরে পাক সেনারা ঢাকার পথে ফরিদপুরের দিকে চলে যায়।
৭ ডিসেম্বর সকাল থেকেই মাগুরায় মুক্তিবাহিনীর কতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। গোটা শহরে উড়তে থাকে স্বাধীন দেশের পতাকা।
(ঢাকাটাইমস/০৭ডিসেম্বর/প্রতিনিধি/জেবি)