রংপুরে আ.লীগকে ‘জেতান হলে’ উপযুক্ত জবাব: রিজভী

প্রকাশ | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৩:১৬ | আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৪:১৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে ‘পেছনের দরজা দিয়ে’ ‘জেতান হলে’ উপযুক্ত জবাব দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিএনপি।

আগামী ২১ ডিসেম্বরের ভোট সুষ্ঠু হবে না-এমন শঙ্কা প্রকাশ করে এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছিলেন তিনি।

বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমরা আবারও নির্বাচন কমিশনকে বলতে চাই-ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীকে পেছনের দরজা দিয়ে জেতানোর কোনো চেষ্টা করলে জনগণ সেটির উপযুক্ত জবাব দেবে।’

রংপুরে আওয়ামী লীগ প্রার্থী করেছে বর্তমান মেয়র শরফুদ্দীন আহমেদ ঝণ্টুকে। আর বিএনপি প্রার্থী করেছে কাওসার জামান বাবলাকে। বাবলার বিরুদ্ধে ঋণ খেলাপের অভিযোগ এনে একটি ব্যাংক প্রার্থিতা বাতিলের আবেদন করেছিল, তবে আাপিল শুনানিতে তাকে প্রার্থী হিসেবে বৈধতা দেয়া হয়েছে।

রিজভীর দাবি, তাদের প্রার্থীকে ব্যাপক হয়রানি করা হচ্ছে রংপুরে। তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীকে শুরু থেকে যেভাবে হয়রানি করা হয়েছে তাও নজিরবিহীন। এমন অবস্থায় রংপুর সিটি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে কী না এ ব্যাপারে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।’

আওয়ামী লীগের প্রার্থী ঝণ্টু প্রচারে বারবার আচরণবিধি লঙ্ঘন করলেও নির্বাচন কমিশন তার বিরদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। রিজভী বলেন, ‘ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা গোটা এলাকায় ভয়ভীতি ছড়াচ্ছে বলেও প্রার্থীরা অভিযোগ করেছেন।’

সিটি নির্বাচনে রংপুরে ভোট নেয়া হবে ১৯৬টি কেন্দ্রে। এর মধ্যে ১৩৩টিকেই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন।

এই বিষয়টির উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না।’

‘আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বারবার আচরণ বিধি লঙ্ঘন করলেও ইসি তার বিরদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা গোটা এলাকায় ভয়ভীতি ছড়াচ্ছে বলেও প্রার্থীরা অভিযোগ করেছেন।’

সুষ্ঠু ভোট নিশ্চিত করতে নির্বাচনে বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে সেনা মোতায়েনেরও জোর দাবি জানান রিজভী।

আর্থিক খাতে দুর্নীতিতে সরকার সংশ্লিষ্টরা

আলোচিত বেসিক ব্যাংক ঋণ কেলেঙ্কারি নিয়েও কথা বলেন বিএনপি নেতা। বলেন, বেসিক ব্যাংকে দুর্নীতি ও কেলেঙ্কারির বিষয়টি জনসম্মুখে স্পষ্ট হয়ে উঠলেও ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা জড়িত থাকায় দুদক বরাবরই সেটি এড়িয়ে গেছে। বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারি নিয়ে এখন পর্যন্ত ৫৭টি মামলা হলেও মূল হোতারা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে।

শুধু বেসিক ব্যাংক নয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরিসহ আর্থিকখাতে সব অনিয়মে সরকারের রাঘববোয়ালরা জড়িত বলেও অভিযোগ করেন রিজভী। বলেন, ‘ব্যাংক লুটের লাখ লাখ কোটি টাকা দেশ থেকে পাচার হয়ে গেলেও দুদক এসব বিষয়ে নির্বিকার। কিন্তু জনগণ তাদের ক্ষমা করবে না। লুটেরাদের একদিন জনতার কাঠগড়ায় দাঁড়াতেই হবে।’

গুম আতঙ্ক থামছে না

ভিয়েতনামে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মারুফ জামানের নিখোঁজ হওয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে রিজভী বলেন, সারাদেশে সারাদেশে গুম আতঙ্ক বিরাজ করছে।

‘একজন ব্যক্তি অপরাধী হলে তার বিচার হতে পারে আইনি প্রক্রিয়ায়। যেটি হবে প্রকাশ্য, নিয়মমাফিক পদ্ধতিতে। কিন্তু সেই ব্যক্তিকে অদৃশ্য করে দেয়া হলে তা হবে ভয়ঙ্কর অপরাধ। বর্তমানে রাষ্ট্রের ছত্রছায়ায় এ সকল গুম সংঘটিত হচ্ছে। যা ক্ষমাহীন ও মানবতাবিরোধী ঘৃন্য অপরাধ। ’

‘অনেকে ইচ্ছা করেই আত্মগোপনে গিয়ে সরকারকে বিব্রত করছেন’-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের এই বক্তব্যেই গুমের পেছনে সরকারের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ হয় বলেও দাবি করেন রিজভী।

(ঢাকাটাইমস/০৭ডিসেম্বর/বিইউ/ডব্লিউবি)