রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ব্র্যাক নির্মিত টয়লেটের মান নিয়ে প্রশ্ন

মোসলেহ উদ্দিন, উখিয়া (কক্সবাজার)
| আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৩:৩১ | প্রকাশিত : ০৯ ডিসেম্বর ২০১৭, ১০:৫৩
ফাইল ছবি

কক্সবাজারের উখিয়ায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যেসব টয়লেট বানিয়ে দিয়েছে, সেগুলোতে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। অল্প দিনেই এসব স্থাপনা ভেঙে যাচ্ছে এং দুর্গন্ধে আশেপাশে টেকাই দায় হয়ে পড়েছে। এতে তৈরি হয়েছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি।

আর এ কারণে ক্যাম্পের বাসিন্দা তো বটেই আশেপাশের লোকজননের মধ্যেও তৈরি হয়েছে অসন্তোষ। কারণ, দুর্গন্ধ রোহিঙ্গা ক্যাম্প ছাড়িয়ে আশেপাশের লোকালয়েও ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। আর উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে এখন টয়লেটগুলো সংস্কারের কাজ শুরু করেছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাটি।

উখিয়ার থাইংখালী তাজনিমারখোলায় রোহিঙ্গাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ছয় ফুট গর্ত করে এক ফুটের একটি রিং দিয়ে টয়লেট বসিয়ে চলে যায় ব্র্যাক কর্মীরা।

ক্যাম্পের বাসিন্দা নাগরিক আয়াতুল্লাহ, এনায়াতুল্লাহ, আজিজুল্লাহ এবং আরও কয়েকজন বললেন, টয়লেট থেকে ছড়ানো দুর্গন্ধে ক্যাম্প এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। তারা জানান, এসব টয়লেটের কাছাকাছি যেসব নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে তার গভীরতা ৩৫ থেকে ৪০ ফুট। এসব নলকূপ থেকেও যে পানি উঠছে তাতেও দুর্গন্ধ ছড়িয়েছে। আর পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শতশত মানুষ।

স্থানীয় ঠিকাদার জসিম উদ্দিন বলেন, ব্র্যাকের যেসব উন্নয়ন কাজ করা হচ্ছে সেগুলো প্রথম দিকে স্থানীয় ব্র্যাক কর্মকর্তার পছন্দের লোকজনদের দেওয়া হয়েছে। তবে বর্তমানে যে সব টয়লেট ও নলকূপ বসানো হচ্ছে, সেগুলো সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করছে ঢাকা অফিস। এগুলোর কাজ ভালো হচ্ছে।

রোহিঙ্গাদের অভিযোগ নিয়ে জানতে চাইলে থাইংখালী তাজনিমারখোলা ক্যাম্পে দায়িত্বরত ব্র্যাকের শাখা ব্যবস্থাপক আলী আজম বলেন, প্রথম দিকে ছয় ফুট গর্ত করে একটি রিং একটি স্লাব দিয়ে যেসব টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছিল সেগুলো পুনঃসংস্কারের কাজ চলছে।

পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘উন্নয়নের নামে ব্র্যাক কর্মকর্তারা মোটা অংকের টাকা লুটপাট করেছে। আর তাদের নির্মিত লেট্টিন ও টিউবওয়েলের পানি খেয়ে রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি স্থানীয় গ্রামবাসীও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি অভিযোগ করা হয়েছে।’

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিকারুজ্জামান বলেন, পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরীর অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন। এ ব্যাপারে ব্র্যাকের কর্মকর্তাদের ডেকে এনে তাদের নির্মিত অস্বাস্থ্যকর টয়লেট আবার সংস্কার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এসব অভিযোগের বিষয়ে ১২টি রোহিঙ্গা অস্থায়ী ক্যাম্পে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে দায়িত্ব নিয়োজিত কর্মসূচি ব্যবস্থাপক খালেদ মুরশেদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি আরেক কর্মকর্তা মাহাবুবের মুঠোফোনের নাম্বার দেন। তার নম্বরের যোগাযোগ করা হলে তিনি আরও একজনের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে জনাব মাহবুবের কথা মতো ব্র্যাকের রোহিঙ্গা মানবিক সংকট ব্যবস্থাপনা কর্মসূচির প্রধান ইফাত নেওয়াজের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।

ঢাকাটাইমস/০৯ডিসেম্বর/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :