ফরিদপুরে করিমপুর যুদ্ধ দিবস পালিত

ফরিদপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০১৭, ১২:৩৭ | প্রকাশিত : ০৯ ডিসেম্বর ২০১৭, ১২:৩১

আজ ৯ ডিসেম্বর ফরিদপুর করিমপুর যুদ্ধ দিবস। প্রতিবছরই ফরিদপুরবাসী গভীর শোক ও শ্রদ্ধার সাথে এ দিনটি স্মরণ করেন।

১৯৭১ সালের এই দিনে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে জেলার কানাইপুর ইউনিয়নের করিমপুরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের তুমুল রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয়। এতে মুক্তিযোদ্ধা কাজী সালাউদ্দিন আহম্মেদ ও মেজবাউদ্দিন নোফেলসহ সাতজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করার জন্য হত্যা করা হয় আরও চার গ্রামবাসীকে। এই যুদ্ধে আহত হন অর্ধ শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা। আর পাকিস্তানি বাহিনীর বেশ কিছু সৈনিকও নিহত হন তখন।

এই দিবসের স্মরণে ফরিদপুর জেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন।

শনিবার সকাল ১০টার দিকে শহরের আলীপুর কবরস্থানে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে কবরে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান নেতারা।

এর পর শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল হাসান, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আবুল ফয়েজ মো. শাহ নেওয়াজ, মুক্তিযোদ্ধা খলিলুর রহমান প্রমুখ।

ফরিদপুর করিমপুর যুদ্ধে অংশ গ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধা খলিলুর রহমান জানান, যশোরে তখন স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়ছে। হানাদার বাহিনী পিছু হটে ঢাকা ফেরার পথে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের করিমপুর ব্রিজের নিকট একটি গাড়িতে শহীদ সালাউদ্দিনের নেতৃত্বে প্রায় ৭৪ জন মুক্তিযোদ্ধা গ্রেনেড চার্জ করে উড়িয়ে দেয়।

এর কিছুক্ষণের মধ্যে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর একটি বড় বহর ঘটনাস্থলে এসে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে যুদ্ধ শুরু করে। এক পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধারা তিন-চার ভাগে বিভক্ত হয়ে পাল্টা গুলি করতে করতে করতে পিছু হটে করিমপুর গ্রামে আশ্রয় নেন। হানাদার বাহিনী গ্রামটি ঘিরে ফেলে। মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল যে বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিল, সে বাড়িটিতে আগুন ধরিয়ে দেয় হানাদার বাহিনী। সে সময় আগুনে পুড়ে শহীদ হন সাত মুক্তিযোদ্ধা। যুদ্ধে শহীদ হন কাজী সালাউদ্দিন, মেজবাউদ্দিন নৌফেল, আব্দুল ওয়াহাব, সোহরাব হোসেন, আব্দুল আওয়াল, আব্দুল হামিদ ও মজিবুর রহমান।

মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দেয়ার অপরাধে নিরীহ গ্রামবাসীর মধ্যে শহীদ হন বাকেলউদ্দীন মণ্ডল, হযরতউদ্দীন মণ্ডল, হাশেম আলী মণ্ডল ও স্থানীয় কৃষক আবু খাঁ। নিহত চার পরিবারের সদস্যরা এখনও মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তাদের সহযোগিতার দাবি জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধারা।

করিমপুরের যুদ্ধস্থলে ১টি স্মৃতিসৌধ নির্মাণের দাবি জানিয়ে ফরিদপুর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার আমিনুর রহমান ফরিদ বলেন, দেশ স্বাধীনের দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও আজও সেখানে স্মৃতি মিনার না হওয়া আমাদের জন্য লজ্জাকর।

তিনি দাবি জানিয়ে বলেন, এখানে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ হলে আগামী প্রজন্ম করিমপুর যুদ্ধ সম্পর্কে জানতে পারবে।

(ঢাকাটাইমস/৯ডিসেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :