ফ্রান্সে প্রধানমন্ত্রীকে বরণে প্রস্তুত ইইউ আ.লীগের নেতাকর্মীরা

কমরেড খোন্দকার, ইউরোপ ব্যুরো প্রধান
| আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০১৭, ০৮:৫৭ | প্রকাশিত : ১০ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৮:৫১

জলবায়ুবিষয়ক ‘ওয়ান প্ল্যানেট সামিট’-এ অংশ নিতে আগামীকাল সোমবার তিন দিনের সরকারি সফরে ফ্রান্সে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাকে বরণ করতে প্রস্তুত সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

প্রধানমন্ত্রীর সফর উপলক্ষে গভীর উচ্ছ্বাস দেখা যাচ্ছে ইউরোপ প্রবাসী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে। আওয়ামী লীগের দেয়া এক গণসংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রীর যোগ দেবেন। আগামী মঙ্গলবার প্যারিসের একটি হলে এই সংবর্ধনা দেয়া হবে বলে জানান ফ্রান্স আওয়ামী লীগের নেতারা। এ ব্যাপারে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে।

ফ্রান্স আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের দুই নেতা এম এ কাশেম ও মহসীন উদ্দীন খান লিটন জানান, প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করার জন্য ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও আওয়ামী লীগ ইতিমধ্যে প্রস্তুতি শেষ করেছে। দুই গ্রুপ থেকে পাঁচজন করে নিয়ে দশজনের একটা তালিকা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পরে ঠিক হবে সংবর্ধনা সভায় সভাপতিত্ব ও সভা পরিচালনা কে করবেন। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে বিতর্কিত কোনো লোককে সংবর্ধনা সভায় প্রবেশ করতে দেয়া হবে না বলে জানান তারা।

প্রধানমন্ত্রীর ভিয়েনা সফরের কথা উল্লেখ করে ফ্রান্স আওয়ামী লীগের নেতারা বলেন, সেখানে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাকর্মীরা বিতর্কিত কয়েকজনকে সংবর্ধনা সভায় প্রবেশ করতে না দেয়ায় বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেছিল।

দীর্ঘদিন পর প্রধানমন্ত্রীর ফ্রান্স সফরে প্রবাসী নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। তারা আশা করছেন প্রধানমন্ত্রীর এ সফরকে কেন্দ্র করে ফ্রান্সে গ্রুপিং রাজনীতির অবসান হবে। সবশেষ ২০১১ সালে ফ্রান্স সফর করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সভাপতি অনীল দাশগুপ্ত ও সাধারণ সম্পাদক এম এ গনির উপস্থিতিতে কাউন্সিল হয়। কমিটি গঠন নিয়ে দুই গ্রুপের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর গভীর রাতে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে মহসীন উদ্দীন খান লিটনকে সভাপতি ও দেলোয়ার হোসেন কয়েছকে সাধারণ সম্পাদক করে নতুন কমিটির নাম ঘোষণা করা হয়। পরে কাশেম-মজিব গ্রুপ আরো একটি কমিটি ঘোষণা করে।

ফ্রান্স আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালী নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকাটাইমসকে বলেন, শুধু ফ্রান্স নয় ইউরোপের প্রতিটি দেশে রয়েছে আওয়ামী লীগে বিভক্তি। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা যে উদ্দেশ্য ও প্রত্যাশা নিয়ে ২০০১ সালে সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগ গঠন করছিলেন তার সে প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন সংগঠনের নেতারা।

ওই নেতা আরও বলেন, সভাপতি অনিল দাশগুপ্ত ও সাধারণ সম্পাদক এম এ গনির ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বে সংগঠনটির কার্যক্রম নেই বললেই চলে। মূলত প্রধানমন্ত্রীর ইউরোপ সফরের সময় তাদের বেশ ফুরফুরে মেজাজে দেখা যায়। বাকি সময়টা তাদের খুঁজেও পান না বিভিন্ন দেশের নেতাকর্মীরা।

নেতাকর্মীদের অভিযোগ, অনিল দাশগুপ্ত সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে সময় না দেয়ায় এর সুযোগ নিচ্ছেন সাধারণ সম্পাদক এম এ গনি। বিভিন্ন দেশে একটি বৈধ কমিটি থাকার পরও তিনি একেক দেশে পাল্টা কমিটি দিয়ে দলের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করছেন।

এই গ্রুপিং নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর ফ্রান্স সফরে সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগকে ঢেলে সাজানোর দাবী জানাচ্ছেন প্রবাসী নেতাকর্মীরা। ইউরোপের প্রতিটি দেশের নেতাকর্মীরা প্যারিসে যাচ্ছেন।

নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আওয়ামী লীগে বিভক্তি, কোন্দল, গ্রুপিং এবং একাধিক কমিটির কারণে সংগঠনটি কোথাও মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে না। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আওয়ামী লীগের একাধিক কমিটির জন্যও তৃণমূলের নেতাকর্মীরা সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগকেই দায়ী করছেন। কোন্দল-গ্রুপিং মেটাতে তাদের নিষ্ক্রিয়তার কারণে ইউরোপে আওয়ামী লীগের শক্তি দিন দিন দুর্বল হচ্ছে বলে তারা আশঙ্কা করছেন।

নেতাকর্মীরা বলছে, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও কোনো সম্মেলন না হওয়ায় দলীয় কোন্দল-গ্রুপিং বাড়ছে। এ ব্যাপারে দলের সভাপতি শেখ হাসিনার সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তারা।

(ঢাকাটাইমস/১০ডিসেম্বর/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

প্রবাসের খবর বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :