কোনোদিন দেখেননি কিন্তু স্ট্রবেরি চাষ করছেন তারা

প্রকাশ | ১১ ডিসেম্বর ২০১৭, ০৮:২১

এস কে সাহেদ, ঢাকাটাইমস

স্ট্রবেরি নামে একটি ফল আছে, সেটা লোকজনের মুখে শুনেছেন তারা। কিন্তু সেটি দেখেননি কখনো। অথচ সেই স্ট্রবেরির চারা নিয়ে চাষ করে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা এলাকার ২০ নারী।

স্ট্রবেরি চাষে তাদের এ স্বপ্ন দেখিয়েছেন লালমনিরহাট জেলা পরিষদের সদস্য মর্জিনা বেগম। শাপলা বড়খাতা ফেডারেশন নামের একটি সংগঠন ইতিমধ্যে ওই নারীদের মাঝে জনপ্রতি ৩০০ চারা আনুষ্ঠানিকভাবে বিতরণ করেছে।

বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে এর উদ্যোক্তা  আরডিআরএস বাংলাদেশ।

স্ট্রবেরি চাষে আগ্রহী শাহানাজ পারভীন বলেন, ‘স্ট্রবেরি নামে একটা ফল আছে শুনছি। কিন্তু কোনোদিন দেখি নাই, খাইও নাই। কৃষি কর্মকর্তাদের মুখে শুনছি ওই ফল চাষের জন্য আমাদের এলাকার মাটি ভালো। মর্জিনা আপা আমাদের সাহায্য করেছেন স্ট্রবেরি চাষ করতে। তাই এবার আমরা স্ট্রবেরি চাষের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

খোরশেদা বেগম নামে অপর এক নারী বলেন, ‘কোনোদিন না দেখলেও আমরা সাহস করে স্ট্রবেরি চাষের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা বিশ্বাস করি স্ট্রবেরি ফল বিক্রি করে লাভবান হব।’
এমন অভিনব উদ্যোগের বিস্তারিত জানা গেল লালমনিরহাট জেলা পরিষদ সদস্য মর্জিনা বেগমের কাছে। তিনি জেনেছেন  এ অঞ্চলের জমি স্ট্রবেরি চাষের উপযোগী। কিন্তু কেউ চাষাবাদ করে না।  তাই কিছু একটা করার জন্য উদ্যোগী হলেন।

মর্জিনা বলেন, ‘আমি কৃষি কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে বেশ কিছু নারীকে স্ট্রবেরি চাষে উৎসাহ দিতে থাকি। তাদের মধ্যে ২০ জন নারী স্ট্রবেরি চাষে আগ্রহ প্রকাশ করলে স্থানীয় শাপলা বড়খাতা ফেডারেশনের মাধ্যমে তাদের স্ট্রবেরি চাষের জন্য সহযোগিতা করা হচ্ছে। পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের কৃষিক্ষেত্রে এগিয়ে নিয়ে আসার জন্য এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা।’

কৃষিতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানোর পাশাপাশি তাদের আর্থিক লাভের দিকটাও ভাবে শাপলা বড়খাতা ফেডারেশন। সংগঠনটির  কোষাধ্যক্ষ সফিয়ার রহমান বলেন, ‘আমরা স্ট্রবেরি চাষের জন্য ২০ নারী কৃষক নির্বাচিত করি। তাদের জনপ্রতি ৩০০ করে মোট ৬ হাজার চারা এবং সার ও ওষুধ বিতরণ করা হয়। আশা করি তারা স্ট্রবেরি চাষে সফলতা পাবে। পরিবারের চাহিদা পূরণের পর তারা স্ট্রবেরি বাজারজাত করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন।’

হাতীবান্ধা উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ আলী বলেন, এ এলাকার মাটি স্ট্রবেরি চাষের জন্য বেশ উপযোগী। কিন্তু কেউ বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ করছে না। শাপলা বড়খাতা ফেডারেশনের প্রচেষ্টা প্রশংসনীয়। তাদের সফলতার জন্য কৃষি অধিদপ্তর সব ধরনের সহযোগিতা করবে বলে জানান তিনি।

(ঢাকাটাইমস/১১ডিসেম্বর/মোআ)