সৌদির নতুন বন্ধু ইসরায়েল?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৬:২৯ | প্রকাশিত : ১২ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৬:২৬

নতুন এক কূটনৈতিক সম্পর্কের আভাস পাচ্ছে বিশ্ব যা এর আগে কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। ইরান প্রসঙ্গে সৌদি আরব এবং ইসরায়েল একই সুরে গান গাইছে। সামনের দিনগুলোতে দুজনের গলায় গলায় ভাব যদি প্রকাশ্যে চলে আসে তাহলেও হয়তো খুব একটা অবাক হওয়া যাবে না। আর এ রকমটা যদি হয়েই যায় তাহলে পৃথিবীর সামনে চলে আসবে আরব বিশ্বের নতুন এক রাজনৈতিক ভারসাম্যের চিত্রপট। সেটা গ্রহণ করার মতন মানসিক শক্তি আপনার থাকুক কি না থাকুক, সৌদি আরব এবং ইসরায়েলের সাম্প্রতিক কূটনৈতিক সম্পর্কের উন্নতি সেরকমই আভাস দিচ্ছে।

নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে ইসরায়েলের সেনা প্রধান গাদি এইজেনকট নতুন এক ‘মিডিয়া ক্যু’ সূচনা করেন।

সৌদি আরবের মালিকানাধীন ‘আশরাক-আল-আওসাত’ পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ‘এলাফ’ পত্রিকার সাংবাদিক ওথমান আল ওমাইর কাছে এক সাক্ষাৎকারে তিনি সৌদি আরবের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করবার কথা বলেন।

তার বক্তব্য অনুযায়ী ইরান, ইসরায়েলের কূটনৈতিক সম্পর্কের একদিকে,আর অন্য দিকে সৌদি আরব। সদ্য উদারপন্থী হওয়া সৌদি আরবের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের উন্নতি করতে ইসরায়েলও যথেষ্ট উদার হতে রাজি আছে। ইরানের ব্যাপারে যত রকম গোপন তথ্য আছে সেগুলো সৌদি আরবের সঙ্গে ভাগাভাগি করে ব্যবহার করতেও আগ্রহী ইসরায়েল।

এইজেনকট বলেন, ‘ইরানকে ঠেকাতে আমরা সৌদি আরবের সঙ্গে আমাদের গোপন গোয়েন্দা তথ্য ভাগ করতে চাই। যখনই প্রয়োজন পড়বে আমরা সেটা করব। আমাদের দুই দেশেরই এই ক্ষেত্রে একই রকমভাবে লাভবান হবার সুযোগ আছে।’

তার ভাষায় পুরো আরব সম্রাজ্যের জন্য ইরান সবচেয়ে বড় হুমকি। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এর আগে একই ধারায় বক্তব্য দিয়েছেন নিজেদের গণমাধ্যমে।

সরাসরি সৌদি আরবের নাম না নিয়েও তিনি বলেছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি করতে যদি কোনো আরব দেশ রাজি থাকে তাহলে তারও এতে সম্মতি আছে। যদিও ভেঙে বলেননি তিনি কোন আরব দেশের দিকে ইঙ্গিত করছেন, তবু বলেছেন ‘সম্পর্কের উন্নতি হলে আমরা আরব বিশ্বে শান্তি আনতে পারব।’

দেখা যাচ্ছে দুই দেশই একজন আরেক জনের ব্যাপারে গণমাধ্যমে আলাপ করছে, কিন্তু অনেকটা ধাধার মতন প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিতপূর্ণ ভাষায়।

এইজেকনট যেরকম এলাফ-কে সময় দিয়েছেন, আলাপ করেছেন, এটাকে এক ধরনের আমন্ত্রণমূলক জনসংযোগ বলা যায় অনয়াসে। ঠিক একই রকমভাবে সৌদি আরবের সাবেক সেনাপ্রধান আনওয়ার আশকি একই কায়দায় গণমাধ্যমের কাছে নিজের চিন্তা ভাবনা তুলে ধরেছেন।

ডয়েচে ভেলের আরবি ভাষার টকশো মাসায়েলিয়াতে তিনি বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক এখন পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক রূপ না পেলেও জেরুজালেমে ২০১৬ সালে সৌদি আরবের একটি প্রতিনিধি দল যায় সেদেশের সাংসদ এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে দেখা করতে।সৌদি আরব ২০০২ সালে আরব বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার যে উদ্যোগ নেয় তারই বাস্তবায়নে ইসরায়েলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে এই সফর।’

যদিও আনওয়ার আশকি বার বার জোর দিয়ে বলেন, ‘আমি ইসরায়েলে যাইনি। আমি এবং আমার প্রতিনিধি দল মূলত প্যালেস্টাইনের রাজধানী জেরুজালেমে গিয়েছিলাম।’

সৌদি আরবের এই হঠাৎ পরিবর্তন যেন খুব বেশি অস্বাভাবিক না লাগে সেজন্যই আশকি এ রকমভাবে তার বক্তব্য দেন। কিন্ত তার কথায় এটা স্পষ্ট যে ইসরায়েলের প্রতি সেই আগের মনোভাব আর নেই, না সৌদি সরকারের না সৌদি জনগণের।

কারণ আনওয়ার আশকি আলোচনার এক পর্যায় বলে বসেন, ‘ইসরায়েল নয়, ইরান আমাদের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে মেরেছিল, এটা ভুলে গেলে আমাদের চলবে না।’

(ঢাকাটাইমস/১২ডিসেম্বর/কেএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :