এত জনপ্রিয় হলে নির্বাচন দিন, জয়কে ফখরুল

প্রকাশ | ১২ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৮:৩৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

২০০৮ সালের চেয়ে বেশি ভোট পেয়ে আওয়ামী লীগ আগামীতে ক্ষমতায় আসবে-প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় কোন তথ্যের ভিত্তিতে এমন কথা বলেছেন তা জানতে চেয়েছেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে জনপ্রিয়তা প্রমাণের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

তিনি জয়ের এমন বক্তব্যের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, ‘যিনি বলছেন, তিনি বেশির ভাগ সময় বিদেশেই সময় কাটান, একেক সময় এসে একেক কথা বলেন। দেন না একটি নির্বাচন, তাহলে জনপ্রিয়তা তো প্রমাণ হয়ে যায়।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে এসে বলেছিলেন, নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জিতবেই—তথ্য আছে। আজকে আবার সেই তথ্য এসে গেছে। এবার বলছেন, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জিতবে, বেশি ভোটে জিতবে।  আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, কোন তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এই কথা বলেন?’

মঙ্গলবার দুপুরে কমরেড মো.তোয়াহার ৩০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম-এল) এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।

ফখরুল বলেন, ‘একটি নির্বাচন দেন, যে নির্বাচনে আপনারা সরকারে থাকবেন না এবং নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে। যে নির্বাচনে জনগণ তার ভোটের অধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। প্রত্যেকটি ভোটার গিয়ে যার ভোট সে দেবে। একটু দেয়ালের লিখনটা পড়ুন। জনগণ যখন মতপ্রকাশের সুযোগ পাবে, তখন সে সঠিক মত দেবে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তিনি (জয়) বলছেন, আওয়ামী লীগকে পরাজিত করার শক্তি নাকি দেশের কোনো দলের নেই। তবে কি বাইরের কোনো দলের আছে?’

সোমবার আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘আওয়ামী লীগের প্রতি মানুষের যে বিশ্বাস এবং ভালোবাসা চলে এসেছে; আওয়ামী লীগকে ভোটে হারানোর মতো কোনো দল বাংলাদেশে নেই। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২০০৮–এর নির্বাচনের চেয়ে বেশি ভোট পাবে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের বাইরে থেকে ঘুরে এসে বলতে হয় না যে আমরা জিতব। আমরা আমাদের দেশের মানুষের চোখের দিকে তাকিয়ে, পালস বুঝে বলতে পারি যে তোমরা (আওয়ামী লীগ) পরাজিত হবে।’

ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচন দিতে হবে। নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। ২০১৪ সালের মতো নির্বাচন দিলে জনগণ তা মেনে নেবে না। ‘ধানাইপানাই’করে সংবিধানের দোহাই দিলে হবে না।’

নিম্ন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধির বিষয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘পত্র-পত্রিকাকে ধন্যবাদ। তারা বলতে দ্বিধা করেনি। সরকারের হাতেই থাকছে নিয়ন্ত্রণ। বিচার বিভাগে যে শৃঙ্খলাবিধি গতকাল করা হয়েছে, তাতে সরকারের হাতেই নিয়ন্ত্রণ থাকছে। এটা একটি ভয়াবহ রকমের বিচ্যুতি, ভয়াবহ রকমের একটি চক্রান্ত। বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করেই তারা ভিন্নমতকে, ভিন্নপথকে নিয়ন্ত্রণ করবে।’

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কল্পিত, মনগড়া আর মনের মাধুরী মিশিয়ে এসব গল্প তৈরি করা হচ্ছে। যে পত্রিকা বা অনলাইন টেলিভিশনের কথা বলা হচ্ছে, সেগুলোর কোনো অস্তিত্ব নেই। এসব ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও মিথ্যা। যাদের পায়ের নিচে মাটি থাকে না, তারা এ ধরনের মিথ্যাচার করে। এসব মিথ্যাচার কারা করে? যারা রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে যায়, তারা এসব মিথ্যাচার করে। রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে পারছে না, তাই মিথ্যা দিয়ে মোকাবিলা করতে চাইছে। মামলা দিয়ে, হামলা করে, গুম করে দিয়ে বিএনপিকে মোকাবিলা করার চেষ্টা করছে সরকার।’

(ঢাকাটাইমস/১২ডিসেম্বর/বিইউ/জেবি)