রংপুরে প্রচার আর অভিযোগ চলছে সমানতালে

প্রকাশ | ১২ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৮:৪৩

রফিকুল ইসলাম রফিক, রংপুর

রংপুর সিটি নির্বাচনের প্রচারের মধ্যেই তিন মেয়র প্রার্থী নানা অভিযোগ তুলছেন পরস্পরের বিরুদ্ধে। তিনজনই বলছেন, তার প্রতিদ্বন্দ্বিতা আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন।

আগামী ২১ ডিসেম্বরের ভোটকে সামনে রেখে নগরজুরে এখন ভোটের উৎসবের আমেজ। প্রচারে সকাল থেকে রাত অবধি ব্যস্ত আওয়ামী লীগের সরফুদ্দিন আহমেদ ঝণ্টু, জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা এবং বিএনপির কাওসার জামান বাবলা।

তিন প্রার্থীই ভোটের পরিবেশ নিয়ে নানা অভিযোগের কথা তুলে ধরছেন গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে। একে অন্যের বিরুদ্ধে আনছেন পাল্টা-পাল্টি অভিযোগ।

সরকার দলীয় প্রার্থী ঝণ্টু সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঠুনকো অভিযোগে আমার বিরুদ্ধে আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ আনা হচ্ছে। কিন্তু জাপার প্রার্থী স্টেজ (মঞ্চ) করে সভা সমাবেশ করলেও সেদিকে নজর নেই কমিশনের।’

জাপা প্রার্থী মোস্তাফিজার বলেন, ‘সরকার দলীয় প্রার্থী সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু তার প্রচারপত্রে লাঙ্গলকে ভোট না দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়াও তার প্রতিটি সভা, পথ সভায় আমাদের নিয়ে গালমন্দ করছে যা স্পষ্টভাবেই আচরণবিধির লংঘন। আমরা বিষয়টি কমিশনকে লিখিতভাবে জানিয়েছি।

সরকার দলীয় প্রার্থী এসব বক্তব্য ও কাজে সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কার কথাও বলেন মোস্তাফিজার। বিএনপি প্রার্থী কাওসার জামান বাবলা এখনও সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়ে যাচ্ছেন। ভোট সুষ্ঠু হবে না অভিযোগ করে বলেন, ‘নির্বাচনের মাঠে আমার সাথে দ্বিমুখী আচরণ করছে কমিশন। নৌকা-লাঙ্গল প্রতিনিয়তই আচরণবিধি লঙ্ঘন করলেও সেদিকে কোনভাবেই নজর নেই কমিশনের। আমি ১৫/২০ জন নেতা কর্মী নিয়ে ঘরে বৈঠক করলে আমার বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিস চলে আসছে বাসায়।

প্রার্থীদের এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রিটানির্ং কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘লেভেল প্লিনিং ফিল্ড রয়েছে। কোন প্রার্থীই আমাদের কাছে বাড়তি কোন সুবিধা পাবে না। সবাই সমান।’ তিনি স্পষ্ট করে বলেন, অবাধ সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবেই। তবে এ জন্য ভোটার বিশেষ করে প্রার্থীদের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।

বেসরকারি সংস্থা সুশাসনের জন্য নাগরিক- সুজন এর রংপুর মহানগর কমিটির সভাপতি ফখরুল আমান বেঞ্জু মনে করেন, নির্বাচনের পরিবেশ রক্ষা করা প্রার্থীদেরই দায়িত্ব। তিনি বলেন, ‘এজন্য প্রয়োজন নিজের প্রতি আস্থা, ভোটারদের প্রতি আনুগত্য, ধৈর্য এবং সহশীলতা।’ অবিশ্বাস, শঙ্কা আর পাল্টাপাল্টি অভিযোগই যেন সত্যি না হয় সে দিক কড়া নজর দেয়া আহ্বান তার।

এই নির্বাচনে মেয়র পদে সাত জন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৬৫ এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২২২ জন প্রার্থী ভোটের মাঠে লড়ছেন।

জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তফা প্রচারে গিয়ে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন সিটির বর্ধিত এলাকাসহ পুরো নগরীর সমবণ্টনের। পাশাপাশি ফুটপাত দখলমুক্ত করা, অটোরিক্সার জন্য আলাদা লেন করে যানজট মুক্ত করা, ঐতিহ্যবাহী শ্যামাসুন্দরী খাল দখল মুক্ত করে সুপেয় পানি সরবরাহ করাসহ একটি পরিচ্ছন্ন নগর গড়ার।

বিএনপি প্রার্থী বাবলা দিচ্ছেন, সম বন্টনের মাধ্যমে একটি মডেল সিটি উপহার দেয়ার প্রতিশ্রুতি।

অন্যদিকে নতুন কোনো প্রতিশ্রুতি নেই সদ্য বিদায়ী মেয়র ও আওয়ামী লীগ প্রার্থী ঝন্টুর। তিনি বলেন, তিনি কাজ করতে ভালোবাসেন, গত পাঁচ বছরের কাজের মূল্যায়ন দেখে নগরবাসী তাকে ভোট দেবেন।

 ঢাকাটাইমস/১২ডিসেম্বর/আরআর/ডব্লিউবি