জরুরি সেবা ৯৯৯ চালুর পর ব্যাপক সাড়া

প্রকাশ | ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭, ০৭:৫০ | আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭, ১১:০৬

আশিক আহমেদ, ঢাকাটাইমস

আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় হেল্পলাইন নম্বর চালুর পর পর বিপুল সাড়া পাওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ। জরুরি প্রয়োজনে ৯৯৯ নম্বরটি উদ্বোধনের পর থেকে সাহায্য চেয়ে ফোন আসতে থাকে।

মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে সেবাটি উদ্বোধন করেন প্রথানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ হয়।

২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর পরীক্ষামূলকভাবে এই সেবাটি চালু করে সরকার। তখন ছয় মাস চালু ছিল এই সেবা। তখন সকাল সাতটা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কল করা যেত। তবে পুরোদমে চালুর পর ২৪ ঘণ্টাই কল গ্রহণ করা হচ্ছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ৯৯৯ সেবার প্রশিক্ষিত প্রতিনিধিরা জরুরি মুহূর্তে প্রয়োজন অনুযায়ী ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ বা অ্যাম্বুলেন্স সেবা প্রদানকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেবেন। এ জন্য গত এক বছরে অপারেটরদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।

জাতীয় হেল্পলাইন নম্বরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি পুলিশি সেবার জন্য '৯৯৯' নম্বরে ফোন করলে সরকারি বাহিনী সেবা দেবে। এ ক্ষেত্রে এখন এক সঙ্গে ১২০টি কল ধরার ব্যবস্থা হয়েছে। তবে আগামীতে এই সংখ্যা বাড়িয়ে ৩০০ করা হবে।

কেমন চলছে এই সেবা-সেটি পরীক্ষার জন্য ৯৯৯ নম্বরে ফোন করার পর বেশ কিছুক্ষণ সময় নম্বরটি ব্যস্ত পাওয়া যায়। কিছুক্ষণ পর লাইন ঢুকলে অপরপ্রাপ্ত থেকে বলা হলো জাতীয় জরুরি সেবা নিতে চাইলে ১ চাপুন। ১ চাপতেই অপরপ্রাপ্ত থেকে সুরলাকণ্ঠে প্রশ্ন আসলো, ‘আপনাকে কীভাবে সহযোগিতা করতে পারি স্যার?’।

আজ তো ৯৯৯ এর উদ্ধোধন করা হলো, জনগণের কাছ থেকে কতটুকু সাড়া পাচ্ছেন- হেল্পলাইন নম্বরেই এমন প্রশ্ন রাখলে জবাব আসলো, ‘স্যার, এ ব্যাপারে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলবেন। আমরা শুধু জরুরি প্রয়োজনে আপনাদেরকে সহযোগিতা দিতে পারি স্যার।’

পুলিশ সদর দপ্তরের একটি সূত্র জানিয়েছেন, ৯৯৯ উদ্ধোধনের আট ঘণ্টাতেই পাঁচ হাজারের মতো ফোন রিসিভ করেছে কল সেন্টার।

একজন কর্মকর্তা জানান, এক সঙ্গে ১২০টি ফোন রিসিভি করার সক্ষমতা থাকলেও প্রতি মুহূর্তেই ৩০০ জনের বেশি মানুষ তাদেরকে কল করছেন। আর এ কারণে লাইন ব্যস্ত থাকছে।

 

তবে বেশিরভাগ ফোনই এসেছে বিভিন্ন তথ্য জানতে। যেমন পুলিশি সেবার জন্য বিভিন্ন গ্রাহকেরা কীভাবে থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে হবে? কীভাবে মামলা করতে হবে? কোন এলাকায় কোন কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করবে-প্রভৃতি। অনেকেই থানায় ফোন করতে কল সেন্টারে অনুরোধ করে থাকেন।

যদিও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জানানো হয়েছিল, এই ধরনের প্রশ্ন করার জন্য এই জরুরি নম্বরটি চালু করা হয়নি। কেউ বিপদে পড়লে, কারও পুলিশি সহায়তা বা ফায়ার সার্ভিসের সেবা বা অ্যাম্বুলেন্স সেবার প্রয়োজন হলে এই নম্বরে কল করা যাবে। তবে শুরুতে নাগরিকরা বিষয়টি নিয়ে ভুল করতে পারেন-এমন ধারণা মাথাতেই ছিল এর ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িতদের। তাই তারা যারা ফোন করেছেন, তাদেরকে বিষয়টি বুঝিয়েও বলেছেন।

প্রথম দিনেই কেন সাড়া পাচ্ছেন জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের জনসংযোগ ও গণমাধ্যম শাখার সহকারী মহাপরিদর্শক  সহেলী ফেরদৌস ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাঁচ হাজারের মতো কল পেয়েছি আমরা। আর এর মধ্যে পাঁচটি অ্যাম্বুলেন্স সেবা, ১০টির মত ফায়ার সার্ভিসের সেবা এবং অর্ধশতাধিক পুলিশি পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’

৯৯৯ সেবাটি সম্পূর্ণ টোলমুক্ত অর্থাৎ এ নম্বরে কল করলে কোন টাকা খরচ হবে না। তবে অ্যাম্বুলেন্স সেবা নিতে হলে টাকা খরচ করতে হবে।

টেলিভিশন বা সিনেমার বদৌলতে উন্নত বিশ্বে এই ধরনের সেবার কথা অজানা নয় বাংলাদেশেও। ব্রিটিশরা ন্যাশনাল হেল্পডেস্ক চালু করে ১৯৩৭ সালে, যুক্তরাষ্ট্রে তা চালু হয় ১৯৬৮ সালে।

বাংলাদেশে সেবাটি উদ্বোধনের দিন মঙ্গলবার জানানো হয়, এই সেবাটি ভবিষ্যতে আরও বেশি জনবান্ধব করা হবে। তবে কেউ যেন হয়রানি করতে বা মজা করতে এই নম্বরে ফোন না করেন। এমনটি করতে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আবার জরুরি প্রয়োজনে কেউ ফোন করলে সেই নম্বরটি যেন চালু রাখেন। কারণ, সেবা দেয়ার প্রয়োজনে সেই নম্বরে সরকারি সেবাদান সংস্থা থেকে ফোন আসতে পারে।

ঢাকাটাইমস/১৩ডিসেম্বর/এএ/ডব্লিউবি