বুকের বাইরে হার্ট নিয়ে জন্মানো শিশুর সফল অস্ত্রোপচার
শরীরের বাইরে হার্ট নিয়ে জন্ম শিশুর হার্ট বুকের ভেতর সঠিক স্থানে সফলভাবে স্থাপন করলেন যুক্তরাজ্যের চিকিৎসকরা। লিসেস্টারের গ্লেনফিল্ড হাসপাতালে ২২ নভেম্বর ৫০ সদস্যের একটি মেডিকেল বিশেষজ্ঞ দল ভেনেলোপ হোপ উইলকিন্স নামের তিন সপ্তাহ বয়সী ওই শিশুটির অস্ত্রোপচার করেন। প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় শিশুর মেয়েটির বুকে ভেতরে হার্ট স্থাপন করা হয়। শিশুটি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠছে বলে চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
গ্লেনফিল্ড হাসপাতালে পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজিস্টের পরামর্শদাতা ডা. ফ্রান্সেস বুলক বলেন, 'আমি সব সময় শিশুদের হার্টের সমস্যা নিয়ে কাজ করি। কিন্তু এটা তাদের মধ্যে কিছুটা জটিল। এটি একটি বিরল বংশগত সমস্যা, যার ফলে তার হৃদপিণ্ড তার শরীরের বাইরে বাড়তে থাকে। এ ধরনের সমস্যায় শতকরা দশ শতাংশ বাঁচার সুযোগ থাকে।'
তিনি বলেন, '৩০ বছরের মধ্যে এটি আমার সাথে দ্বিতীয় ঘটনা। তবে ভেনলোপ হলো যুক্তরাজ্যের এই অপারেশনে বেঁচে থাকার প্রথম সন্তান।'
'নয় সপ্তাহের মধ্যে একটি প্রাথমিক আল্ট্রাসাউন্ড স্ক্যান ভেনেলোপের বাবা-মা, নাওমি ফাইন্ডলে এবং ডিন উইলকিনসকে সতর্ক করে দিয়েছিলাম যে তাদের শিশুটির হৃদয় এবং তার পেটের অংশ তার শরীরের বাইরে বেড়ে উঠতে শুরু করেছে। ১৬ সপ্তাহে নাউমির আল্ট্রাসাউন্ড করেছি এবং দেখা যায় যে ভেনেলোপের তলটি যখন সঠিক অবস্থানে ফিরে গিয়েছিল। কিন্তু তখনও তার হৃদয় জায়গা থেকে বেরিয়ে ছিল।'
'সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাসের পাশাপাশি শিশু হার্টের ঝুঁকি হ্রাসের ঝুঁকি কমানোর জন্য যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের (এনএইচএস)- অংশ গ্লেনফিল্ডের চারটি দল গত ২২ নভেম্বর সিজারিয়ান বিভাগে নির্ধারিত ছিল।'
'কাজ শুরুর প্রায় ৫০ মিনিটের পর মনে হচ্ছিল যে ভেনেলোপটি মূল থিয়েটারে স্থানান্তরিত হতে যথেষ্ট স্থিতিশীল হয়েছে। সম্পূর্ণ কাজ শুরুর প্রায় তিন ঘণ্টায় সার্জিকাল টিম সফলভাবে তার বুকের ভেতরে হৃদয় ফিরে নিতে সক্ষম হয়। ভেনলোপের খুব ছোট হওয়ায় কাজটা খুবই দুরূহ ছিল।' মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে ভেনেলোপের মা নাওমি ফিনলেভ বলেন, 'আমি নিজেকে সবচেয়ে খারাপের জন্য প্রস্তুত করেছিলাম। প্রকৃতপক্ষে আমার বাচ্চা বেঁচে থাকতে পারে না বলে মনে করছিলাম। কিন্তু গ্লেনফিল্ডের চিকিৎসকরা খুবই আশ্চর্যজনক।’
বাবা ডিয়ান উইলকিন্স বলেন, 'সে জন্মের মুহূর্তে আমি উপলব্ধি করলাম, গ্লেনফিল্ড এর দল নাওমি ও ভেনলোপকে নিরাপদ রাখতে এবং তারা আমার মেয়ের জন্য কি করেছেন। ধন্যবাদ দিয়ে কৃতজ্ঞতা শেষ হবে না।'
(ঢাকাটাইমস/১৪ডিসেম্বর/এএকে/জেবি)