নির্দোষ প্রমাণ করতে নারীকে বিবস্ত্র হতে নির্দেশ পঞ্চায়েতের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৬:৩৬ | প্রকাশিত : ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৬:৩০
ছবি: প্রতীকী

গ্রাম্য সালিশি সভায় অনেক সময় অপরাধমূলক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রায়শই গণমাধ্যম এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হয়। ভারতের মহারাষ্ট্রে গ্রাম্য পঞ্চায়েতের এক সালিশি সভায় নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য একটি মেয়েকে যে যে শর্ত দেয়া হলো, তা এক কথায় অবিশ্বাস্য।

চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসের ঘটনা। রাত ১১টার দিকে নিজের ঘরেই শুয়ে ছিলেন নীতা (নাম পরিবর্তিত)। হঠাৎ‌ চিত্‍‌কার-চেঁচামেচি শুনতে পান। বাইরে গিয়ে দেখেন একটি লোকের সঙ্গে বচসা বেঁধেছে তার দেবরের।

দেবরের অভিযোগ, ওই লোকটির সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে নীতার। কঞ্জরভাট সম্প্রদায়ের ৩১ বছরের বিধবা মহিলা এই অভিযোগ অস্বীকার করলে সেখানেই তাকে মারধর করেন তার দেবর। এর সপ্তাহখানেক পর বসে পঞ্চায়েত।

সেখানে নীতাকে বলা হয়, তিনি যে নির্দোষ তাকে তার প্রমাণ দিতে হবে। পঞ্চায়েত সিদ্ধান্ত দেয়, একটি এক কেজির একটি কুঠার সারারাত আগুনে রাখা হবে। তার পরের দিন সেই গরম কুঠার হাতে নিয়ে সাত মিটার হাটতে হবে নীতার বড় ছেলেকে। তার হাত যদি না-পোড়ে, তাহলেই নীতাকে নির্দোষ বলে ঘোষণা করা হবে। নীতার বড় ছেলের বয়স ১২, ছোটটির ১০।

স্বাভাবিকভাবেই তিনি এই শর্তে রাজি হননি। এরপর বিকল্প হিসেবে তাকে আরও একটি শর্ত দেয়া হয়। বলা হয়, নীতাকে প্রায় বিবস্ত্র হয়ে সওয়া মিটারের একটি কাপড়ে শরীর ঢেকে সবার সামনে গোল করে ১০৭ পা হাঁটতে হবে। সেই সময় অন্য দুজন মহিলা তার গায়ে গরম আটার ঢেলা ছুড়ে মারবে। এরপর গোটা পঞ্চায়েতের সামনে তাকে দুধ ও পানি দিয়ে গোসল করানো হবে। এই শর্ত মেনে নিলে পঞ্চায়েত তাকে নির্দোষ বলে ঘোষণা করবে বলে নিদান দেয়।

তবে এই শর্তও মেনে নিতে পারেননি নীতা। এরপরই তার ওপর শুরু হয় অত্যাচার। তাকে ঘরছাড়া করা হয়। দুই ছেলেকে নিয়ে তিনি বাবা-মায়ের কাছে ওঠেন। সেখানেও চলতে থাকে হুমকি। নীতার পরিবারের থেকে জরিমানা হিসেবে নেয়া হয় ৯০ হাজার রুপি। ফেব্রুয়ারি মাসেই নন্দুরবার পুলিশ স্টেশনে অভিযোগ জানিয়েছিলেন নীতা। তবে পুলিশ তার অভিযোগ গ্রহণ করেনি বলে তিনি দাবি করেছেন।

কাউকে গ্রেপ্তারও করা হয়নি বলে অভিযোগ করে নীতা বলেন, 'পুলিশ বলছিল সাক্ষী আনো। পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে কে সাক্ষী দেবে?' এ বিষয়ে কোনও তদন্তও করা হয়নি বলে তার অভিযোগ।

এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যম সংশ্লিষ্ট থানায় কথা বললে পুলিশের তরফে দাবি করা হয়, 'এই ঘটনার তদন্ত চলছে। তবে কোনও সাক্ষী পাওয়া যাচ্ছে না। অভিযুক্তরা আগাম জামিন চাইলেও আমরা তাতে আপত্তি জানিয়েছি। শিগগিরই তারা গ্রেপ্তার হবে।'

সূত্র: এই সময়

(ঢাকাটাইমস/১৫ডিসেম্বর/এসআই)

সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :