বাগেরহাটে প্রশ্নপত্র ফাঁস: শিক্ষক চাকরিচ্যুত, মামলা দায়ের

বাগেরহাট প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭, ২২:১১

বাগেরহাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে আইসিটি বিষয়ের খ-কালীন শিক্ষক শেখ মো. বেল্লাল হোসেনকে চাকরিচ্যুত করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।

কোচিং সেন্টারের প্রশ্নপত্রে বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হলো বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

কর্তৃপক্ষ সেই সাথে চাকরিচ্যুত শিক্ষক বেল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে বাগেরহাট মডেল থানায় একটি মামলা করেছে।

বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল মতিন হাওলাদার বাদী হয়ে চাকরিচ্যুত শিক্ষক বেল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন। তবে পুলিশ ওই শিক্ষককে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

গত ৯ ডিসেম্বর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণির অনুষ্ঠিত বার্ষিক পরীক্ষায় খ-কালীন শিক্ষক বেল্লাল হোসেন পরিচালিত কোচিং সেন্টারের মডেল টেস্টের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনার পরদিন তদন্ত করতে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সহকারী প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেনকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটি প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় ওই শিক্ষক বেল্লাল হোসেনের জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়ে তাকে চাকরিচ্যুতির সুপারিশ করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। ১৪ ডিসেম্বর তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ^াসের কাছে জমা দেয়া হয়। তিনি নিয়ম মেনে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন।

বাগেরহাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল মতিন হাওলাদার শুক্রবার দুপুরে এই প্রতিবেদককে বলেন, শিক্ষা অধিদপ্তর মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে আইসিটি বিষয় চালু করে স্ব স্ব প্রধান শিক্ষককে ওই পদে নিয়োগের ক্ষমতা দেয়। অধিদপ্তরের দেওয়া ক্ষমতা বলে প্রায় দেড় বছর আগে এই স্কুলের প্রভাতি ও দিবা শাখায় দুজন খ-কালীন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। গত ৯ ডিসেম্বর এই স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^ পরিচয় বিষয়ে খ-কালীন শিক্ষক বেল্লাল হোসেনের কোচিং সেন্টারে অনুষ্ঠিত মডেল টেস্টের প্রশ্নপত্রে বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার অভিযোগ উঠলে তার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি তদন্তে সত্যতা পেয়ে স্কুলের সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে তাকে চাকরিচ্যুতির সুপারিশ করে। এছাড়া টিচার্স কাউন্সিলের জরুরি সভায়ও একই দাবি ওঠে। নিয়োগ বিধি মেনে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে এবং বাগেরহাট মডেল থানায় তার বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়েছে।

বাগেরহাট মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) ও মামলা তদন্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম শুক্রবার দুপুরে এই প্রতিবেদককে বলেন, বাগেরহাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মতিন হাওলাদার বাদী হয়ে ১৯৮০ সালের পাবলিক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ আইনের ৪ ধারায় তার বিদ্যালয়ের শিক্ষক বেল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন। আমি মামলার তদন্ত শুরু করেছি। আসামিকে ধরতে অভিযান চলছে।

বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ^াস এই প্রতিবেদককে বলেন, বাগেরহাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের আইসিটি বিষয়ের খন্ডকালীন শিক্ষক শেখ মো. বেল্লাল হোসেন প্রশ্নপত্র ফাঁস করে যে অপরাধ করেছেন তা ক্ষমার অযোগ্য।

তাই তাকে শুধু চাকরিচ্যুত করলেই হবে না। ভবিষ্যতে কোনো শিক্ষক যেন এই ধরনের অপরাধ করার ধৃষ্টতা না দেখাতে পারে সেজন্য তার বিরুদ্ধে ফৌজদারী ব্যবস্থা নিতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে প্রভাতি শাখার খন্ডকালীন শিক্ষক শেখ মো. বেল্লাল হোসেনের সাথে মুঠোফোনে বারবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

(ঢাকাটাইমস/১৫ডিসেম্বর/প্রতিনিধি/ ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :