ছোট্ট হাবিবার সর্বাঙ্গে লাল-সবুজের ছাপ

প্রকাশ | ১৬ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৯:২৫

ইমতিয়াজ উল ইসলাম, সাভার (ঢাকা)

সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধের প্রধান ফটকে ঢুকতেই দেখা মেলে আড়াই বছর বয়সী উম্মে হাবিবার। বাবা গার্মেন্ট চাকুরে মোসাদ্দেক হোসেন ও গৃহিনী মা আয়েশা আক্তারের সাথে এই প্রথমবার সে বিজয় দেখতে এসেছে। গায়ে লাল-সবুজ কাপড়ের তৈরি জামা, হাতে কাঠির পতাকা ও গালে রংয়ের আঁচরে আঁকা পতাকার ছবি যেন কেবল বিজয় উল্লাসেরই বহিঃপ্রকাশ। কথায় প্রাঞ্জলতা না থাকলেও হাবিবা লাখো মানুষের মধ্যে বিজয়ের প্রতীক হয়ে রয়েছে।

হাবিবা কথা বলতে না পারলেও বাবা-মা যা বলছেন- তাই শুনছে। সুন্দর অঙ্গ-ভঙ্গিমায় ছবিও তুলছে দিব্যি। সৌধ প্রাঙ্গণে আসতে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হলেও মেয়ের আনন্দ দেখে বেশ খুশি বাবা মোসাদ্দেক।

হাবিবার বাবা ঢাকাটাইমসকে জানান, বিজয় দিবস উপলক্ষে হাবিবার মা অনেক আগে থেকেই মেয়ের জন্য পতাকার আদলে জামা তৈরির পরিকল্পনা করেছিল। টেইলার্সগুলোতে এই দিনটি উপলক্ষে বাড়তি কাজের চাপ থাকলেও তাগাদা দিয়ে হাবিবার জন্য লাল-সবুজ পতাকার জামা তৈরি করা হয়েছে। আর সেই জামা পড়েই জাতির বীর সন্তানদের প্রথমবারের মত শ্রদ্ধা জানাতে এসেছে সে। গেইট দিয়ে ঢুকতেই সবার দেখাদেখি বায়না করে গালে পতাকা আঁকিয়ে নেয় পতাকা। এরপর মাথায় পড়ার জন্য কিনে দেই বিজয়ের ব্যান্ড।

তিনি আরো জানান, তবে আশুলিয়ার পল্লীবিদ্যুৎ এলাকা থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত মাত্র দুই কিলোমিটার পথ যেতে তাদের সময় লেগেছে প্রায় এক ঘণ্টা। যেখানে সময় লাগার কথা ছিল সর্বোচ্চ পনের মিনিট। আর বিশ টাকার রিকশা ভাড়া দিতে হয়েছে ষাট টাকা। তবে এতসব ঝক্কি ঝামেলার পরও মেয়েকে নিয়ে জাতীয় স্মৃতি  সৌধে আসতে পেরে দারুন খুশি তারা।

হাবিবার মা আয়শা জানান, স্মৃতি সৌধে লাখো মানুষের মধ্যে তার মেয়েকে দেখতে ভিন্ন লাগছে। পুরো শরীর যেন তার দেশ মাতৃকার ছাপ। হাবিবা তার আনন্দ মুখে প্রকাশ করতে না পারলেও এদিক সেদিক ঘুরে বেরানো ও ছবি তোলার আগ্রহ দেখেই বোঝা যায় সে কতটা আনন্দিত।

আয়শা আরো বলেন, এই বারই প্রথম তার মেয়ে জাতির বীর সন্তানদের পবিত্র স্থান পরিদর্শন করল। আর এর মাধ্যমে যেন ওর মনে বাংলাদেশের প্রতি সত্যিকারের ভালোবাসা জন্মায় সেই দোয়া করি। দেশের আত্মত্যাগের ইতিহাস লালন করে হাবিবা যাতে সত্যিকারের মানুষ হতে পারে সবার কাছে সেই দোয়া চান তিনি।

(ঢাকাটাইমস/১৬ডিসেম্বর/নিজস্ব প্রতিবেদক/এলএ)