ভৈরবে চেতনানাশক স্প্রেতে ১৩ জন অজ্ঞান

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২০ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৮:২৭

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ঘুমের মধ্যে চেতনানাশক দ্রব্য স্প্রে করে একই পরিবারের নারী-শিশুসহ ১৩ জনকে অজ্ঞান করেছে দুর্বৃত্তরা। এদের মধ্যে ১০ জনের অবস্থা সংকটময়। ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তারা ভর্তি আছেন।

আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. এনকেএম জাহাঙ্গীর জানান, তাদের অবস্থা ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টা অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত তাদের আশঙ্কামুক্ত বলা যাচ্ছে না।

মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ভৈরব পৌর শহরের কমলপুর গাছতলা ঘাট এলাকায় কাঠব্যবসায়ী মরহুম হাজী তেলু মিয়ার বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। আহতরা সবাই তেলু মিয়ার স্ত্রী-সন্তান, পুত্রবধূ ও নাতি-নাতনি। তবে ওই ঘটনায় বাড়ির কোনো মালামাল খোয়া যায়নি বলে জানান পরিবারের সদস্যরা।

পুলিশ ও পরিবারের লোকজন সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে মরহুম তেলু মিয়ার বাড়িতে তার স্ত্রী ফুলমেহের বানুসহ তার বড় ছেলে শিশু মিয়া, তার ছোট ভাই জুয়েল মিয়ার পরিবারের ১২ সদস্য রাতের খাবারের পর বাড়ির তিন তলা ভবনের নিচতলার ৬টি কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন। এ সময় শিশু মিয়ার মেঝো ছেলে রুবেল মিয়া বাইরে থেকে দরজা আটকে দোকানে যান

পরে আধা ঘণ্টা পর রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি বাড়িতে ফিরে দরজাটি খোলা দেখতে পান। তখন তিনি ভেবে নেন পরিবারের কেউ হয়তো দরজাটা খুলে রেখেছেন। তিনি তার রুমে ঢুকে কাপড় ছাড়ার সময় নিজেকে হঠাৎ টালমাটাল অনুভব করেন। তিনি তৎক্ষণাৎ বাইরে উঠানে বের হয়ে চিৎকার করে ওঠেন। তার চিৎকারে বাড়ির লোকজন জেগে ওঠেন এবং তিন তলা দালানটির ৬টি রুমে ঘুমন্ত ১২ সদস্যকে অজ্ঞান অবস্থায় দেখতে পেয়ে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

সেখানে নেয়ার পর শিশু মিয়ার মেঝো ছেলে রুবেল, তেলু মিয়ার ছেলে মাসুদ মিয়ার মেয়ে জিয়াসমিন ও তেলু মিয়ার ছোট ছেলে জুয়েলের শিশুকন্যা নিন্তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেন চিকিৎসক। আর মরহুম হাজী তেলু মিয়ার স্ত্রী ফুলমেহের, বড় ছেলে শিশু মিয়া, শিশু মিয়ার স্ত্রী রিতা বেগম, তাদের বড় ছেলে রিগান মিয়া, রিগানের স্ত্রী প্রিয়া, তাদের শিশুপুত্র রাকিব, শিশু মিয়ার ছোট ছেলে রাসেল, মেয়ে মাহিমা, তেলু মিয়ার ছেলে জুয়েল মিয়া, জুয়েলের স্ত্রী নরীনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ বিষয়ে ইতালি প্রবাসী ছুটিতে আসা তেলু মিয়ার মেজো ছেলে খোকন মিয়া জানান, তিন তলা ভবনটির তৃতীয় তলায় তিনি তার পরিবার নিয়ে থাকেন। দ্বিতীয় তলায় থাকেন তার ছোট ভাই মাসুদ ও তার পরিবারের সদস্যরা। আর নিচতলায় তার বৃদ্ধা মাসহ বড় তার বড় ভাই শিশু মিয়া ও ছোট ভাই জুয়েল মিয়ার পরিবারের সদস্যরা থাকেন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে বড় ভাই শিশু মিয়ার ছেলে রুবেলের চিৎকার চেঁচামেচি শুনে তিনি নিচে নামেন এবং পরবর্তীতে নিচতলার ৬টি কক্ষ থেকে অজ্ঞান করে। অবস্থায় পরিবারের সদস্যদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। ঘটনাটি নাশকতা না চুরির উদ্দেশ্যে হতে পারে-এ বিষয়ে তিনি স্বচ্ছভাবে কিছুই জানাতে পারেনি।

ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ মোখলেসুর রহমান জানান, খবর পেয়ে পুলিশে কমপ্লেক্সে রোগীদের-খোঁজ-খবর নেন এবং তাদের স্বজনদের সাথে কথা বলেন। চুরির উদ্দেশ্যে চোরচক্র ঘটনাটি ঘটিয়ে থাকতে পারে। পরে রুবেল চলে আসায় চোরচক্রটি পালিয়ে যায় তিনি জানান।

(ঢাকাটাইমস/২০ডিসেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :