ভোটের উৎসবে নারীদের দীর্ঘ লাইন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০১৭, ১২:২৯ | প্রকাশিত : ২১ ডিসেম্বর ২০১৭, ১২:২৬

প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত হচ্ছে রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) নির্বাচন। বৃহস্পতিবার শীতের সকালে ঘন কুয়াশা ভেদ করেই ভোটকেন্দ্রে আসতে শুরু করেছেন ভোটাররা। ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে তারা পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিচ্ছেন। প্রতিটি কেন্দ্রে পুরুষ ভোটারের পাশাপাশি নারী ভোটারদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো।

রংপুরের এই নির্বাচন নিয়ে সারাদেশের মানুষের মতো রংপুরের ভোটারদেরও তীব্র আগ্রহ রয়েছে। তাইতো তীব্র শীত ও কুয়াশা উপেক্ষা করে ভোটাররা ছুটে আসছেন কেন্দ্রে। ভোটগ্রহণ শুরুর পর কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের উপস্থিতি কম থাকলেও সময় গড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটারদের লাইন দীর্ঘ হতে থাকে। পুরুষদের পাশাপাশি নারী ভোটারদের লাইনও ছিল লম্বা। নারীরা সুশৃঙ্খলভাবে কেন্দ্রে ঢুকে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে বেরিয়ে আসছেন।

সরেজমিনে কয়েকটি কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, ভোট দিতে দীর্ঘ লাইনে অনেক নারী অপেক্ষা করছেন। নতুন ভোটারের পাশাপাশি অনেক বৃদ্ধাও রয়েছেন। আবার অনেকে ভিড় থেকে বাঁচতে সকাল-সকাল কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়ে চলে যান। লাইনে দাঁড়িয়ে নারীরা সুশৃঙ্খলভাবে ভোট দিচ্ছেন।

নগরীর ২১নং ওয়ার্ডের দেওয়ানটুলি সরকারি বিদ্যালয়ের কেন্দ্রে ভোট দিতে এসেছিলেন শামিমা ইসলাম নামের একটি তরুণী। তিনি বলেন, ‘এবার প্রথমবারের মতো ভোট দিতে আসলাম। সম্পূর্ণ নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে ভোট দিলাম। কোন রকমের আতঙ্ক মনের মধ্যে কাজ করে নাই।’

সরকারি রোকেয়া কলেজ কেন্দ্রে ভোট দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় কথা হয় রহিমা বেগম নামে এক নারী ভোটারের সঙ্গে। এই কেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট নেয়া হচ্ছে। ইভিএমে ভোট দিতে সমস্যা হয়েছে কি না জানাতে চাইলে রহিমা জানান, ‘ভোট দিতে কোনো সমস্যা হয় নাই। মাঠের মধ্যে আগে শিখাইছিলোতো, তাই ভোট দিতে কোনো সমস্যা হয় নাই। ট্রেলিং (ট্রেনিং) হইছে তো আগে। বয়স্ক মহিলাদের একটু সমস্যা হইতেছে। ওরা বুঝতেছে না। এটা আগের চেয়ে অনেক ভালো, কোন রকম সিল মারা লাগে না।’ অনেক সুন্দর পরিবেশে ভোট হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

একই কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা আরেক নারী ভোটার বলেন, ‘ভালোভাবেই ভোট দিয়েছি। সমস্যা হয় নাই। বাসার কাজ করতে হবে তাই সকালেই এসেছি।’

আছিয়া বেগম নামে পঞ্চাশোর্ধ্ব এক মহিলা ইভিএমে ভোট দিতে একটু সমস্যা হওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘এইভাবে ভোট দিতে আমার একটু সমস্যা হয়েছে। তৃতীয়বার গিয়ে আমার ভোটটি হয়েছে। আমরা তো আগের মানুষ, পড়াশুনা করি নাই। এই কারণে আমাদের একটু সমস্যা হয়েছে। যাদের পড়ালেখা আছে তাদের জন্য এই পদ্ধতি সুবিধা। অনেক কম সময় লাগে ভোট দিতে।’

ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দিয়ে উচ্ছ্বসিত তরুণী সুলতানা আক্তার বলেন, ‘এই পদ্ধতি আগের চেয়ে অনেক ভালো। খুব সহজেই ভোট দেয়া যায়। তবে যাদের শিক্ষা একটু কম তাদের জন্য একটু সমস্যা হচ্ছে। ওখানে একজন সাহায্যকারী থাকলে তাদের জন্য ভালো হতো। এই প্রথমবারে ইভিএমে ভোট দিয়ে খুব ভালো লাগলো, এরপর থেকে এইভাবে ভোট দিলেই ভালো হবে।’

এদিকে সকাল থেকে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যে শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবেই চলছে।

রিটার্নিং কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র সরকার জানান, এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ চলছে। কেন্দ্রে বেশি নজর দেয়া হচ্ছে। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা হলে তা কঠোরভাবে দমন করা হবে।

নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডের মোট ১৯৩টি ভোটকেন্দ্রের ১ হাজার ১২২টি গোপনকক্ষে ভোট প্রদান করছেন ভোটাররা। এর মধ্যে পুরুষ ভোটকেন্দ্র ৫০টি, নারী ভোটকেন্দ্র ৫১টি এবং নারী ও পুরুষ একত্রিত ভোটকেন্দ্র ৯২টি।

ঢাকাটাইমস/২১ডিসেম্বর/আরআই/জিএম/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :