শামীম ওসমানের বাড়ি থেকে আটক যুবককে নিয়ে রহস্য

মাজহারুল ইসলাম রোকন, নারায়ণগঞ্জ
| আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৩:০৪ | প্রকাশিত : ২২ ডিসেম্বর ২০১৭, ১১:২০
ফাইল ছবি

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত আওয়ামী লীগ নেতা এ কে এম শামীম ওসমানের বাড়ি থেকে সন্দেহজন অবস্থায় এক প্রবাসী যুবককে পুলিশে দেয়া হয়েছে। ওই যুবক নিজের সম্পর্কে একেকবার একেক তথ্য দিচ্ছেন। আর বিষয়টি নিয়ে পুলিশের ভূমিকায় নাখোশ শামীম ওসমান।

ওই যুবক আটকের পর একেকবার একেক পরিচয় দিয়েছেন। আবার পুলিশের পক্ষ থেকে শামীম ওসমানকে জানানো হয়েছে, ওই যুবক দরিদ্র পরিবারের সন্তান। কিন্তু তার কাছে ছিল কয়েক লাখ টাকা। তিনি মালয়েশিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়র ছাত্রও। তার ফেসবুক আইডিতে উগ্রবাদী ভিডিও পাওয়া গেছে।

এক সপ্তাহ ধরে তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে শামীম ওসমান স্পষ্টতই নাখোশ। ঢাকাটাইমসকে সে কথা বলেছেনও তিনি।

গত ১৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় শামীম ওসমানের জামতলার বাড়িতে ঢুকে গোপনে ভিডিও ধারণ করছিলেন ওই যুবক। তখন তাকে আটক করা হয়। সুলতান মাহমুদ শুভ ওরফে শুভ খান পরিচয় দেয়া যুবকটি প্রথমে নিজেকে একটি অনলাইন পোর্টালের সংবাদকর্মী হিসেবে দাবি করেন। তখন তাকে শামীম ওসমানের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তার সেখানে যাওয়ার কারণ এবং বাড়ির ঠিকানা সম্পর্কে জানতে চাইলে একেকবার তিনি একেক কথা বলেন। এরপর তাকে পুলিশে দেয়া হয়।

সেদিন কী হয়েছিল- এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগের এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘১৫ ডিসেম্বর সন্ধায় ছেলেটি আমার বাড়ির ভেতরে ও বাইরে ভিডিও করে তরিঘড়ি করে বের হওয়ার সময় তার পরিচয় জানতে চাইলে সে একজন অনলাইন পোর্টালের সংবাদকর্মী বলে পরিচয় দেয়। অনলাইন পোর্টালের আইডি দেখতে চাইলে সে ব্যর্থ হয় এবং তাকে আমার কাছে নিয়ে আসা হয়। এরপর আমি তাকে স্বাগত জানিয়ে বসাই এবং মিথ্যা বলার কারণ জানতে চাইলে সে জানায় ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত।’

‘আমি তখন ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি দেখতে চাইলে সে সেটিও দেখাতে ব্যর্থ হয়। তার বাড়ির ঠিকানা জানতে চাইলে একবার বলে বগুড়া জেলায়, অবার বলে সিরাজগঞ্জ জেলায়। এসময় তার কাছে জাতীয় পরিচয়পত্রও ছিল না।’

শামীম ওসমান বলেন, ‘এক পর্যায়ে যুবকটি বলে আমি আপনার ভক্ত তাই দেখতে এসেছি। আমি তখন তাকে বলি, আমার ভক্ত হলে আমার সাথে দেখা না করে কেন গোপনে ভিডিও করে চলে যাচ্ছিলে, এই প্রশ্নের কোন সদুত্তর দিতে না পারলে আমার দেহরক্ষীকে বলি তার তল্লাশ নিতে। এসময় তার মানিব্যাগ থেকে প্রচুর মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত, মালয়েশিয়ার একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আইডি কার্ড, সেখানকার ব্যাংক আইডিসহ মালয়েশিয়ান কাগজ-পত্র পাওয়া যায়।’

শামীম ওসমান বলেন, ‘এই মিথ্যার কারণ জানতে চাইলে সে জানায় বেশ কয়েক মাস আগে সে দেশে ফিরেছে এবং সে উত্তরায় থাকে। কিন্তু মানিব্যাগে এত বেশি মালয়েশিয়ান টাকা কী করে রয়ে গেল এবং উত্তরা কোথায় থাকে জানতে চাইলে সে নীরব হয়ে যায়। এক পর্যায়ে ফতুল্লা পুলিশকে খবর দিলে তারা তাকে নিয়ে যায়।’

ফতুল্লা থানা থেকে পুলিশ এসে নিয়ে গেলেও দুই দিন পর ওই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন এ বিষয়ে শামীম ওসমানকে কিছু জানেন না বলে দাবি করেন। এরপর শামীম ওসমান বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মঈনুল হকের সঙ্গে।

শামীম ওসমান বলেন, ‘হতাশ হয়ে বলতে হয়, এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এই যুবকের বিষয়ে কোনো কূল কিনারা করতে পারছেন না পুলিশ কর্মকর্তারা। উপরন্তু তদন্ত করছেন তারা বলছেন ছেলেটি ভালো ও দরিদ্র পরিবারের সন্তান। সে কৌতুহল বশত আমার বাড়িতে এসেছিল। অথচ ওই যুবকের কাছে ছিল কয়েক লাখ টাকা মূল্যের ক্যামেরা, পোশাকও ছিল দামী ব্রান্ডের।’

জানতে চাইলে ফতুল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আটক যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার কথাবার্তা অসংলগ্ন ও সন্দেহজনক। তার ফেসবুক আইডি ঘেঁটে দেখা গেছে তিনি মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে জিওমাটিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তার আইডিতে বিভিন্ন ইসলামিক ভিডিও পাওয়া গেছে ।

(ঢাকাটাইমস/২২ডিসেম্বর/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :