মাগুরায় অবৈধ ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যু

মাগুরা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২২ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৮:৫৯

মাগুরা শহরের ভায়নার মোড় এলাকায় বন্ধ করে দেয়া অনুমোদনহীন শারমিন (প্রা.) ক্লিনিকে বৃহস্পতিবার রাতে ভুল চিকিৎসায় বীথি কর্মকার নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ করেছেন নিহতের স্বজনরা। ঘটনার পরই ক্লিনিক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পালিয়ে গেছেন। এ ব্যাপারে শুক্রবার সকালে সদর থানায় ক্লিনিক মালিক শারমিন নাহার ও চিকিৎসক এনামুল কবিরসহ ছয়জনের নামে মামলা হয়েছে।

গত ২৩ অক্টোবর ভ্রাম্যমাণ আদালত লাইসেন্সবিহীন শারমিন ক্লিনিকে রোগী ভর্তি, সিজারিয়ান অপারেশন ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ব্যবহারের অভিযোগে ক্লিনিক মালিক শারমিন নাহারকে নগদ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ৩ মাসের জেল দেয়।

নিহতের বাবা বিষ্ণুপদ কর্মকার অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে শহরের ভায়নার মোড় এলাকায় শারমিন ক্লিনিকে ভর্তি হয় বীথি কর্মকার। সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে তার সন্তান প্রসব করার করানোর জন্য শারমিন ক্লিনিকে ভর্তি করে পরিবারের সদস্যরা। এ সময়ে বীথি সুস্থ অবস্থায় একাই সিঁড়ি বেয়ে দুই তলায় ওঠে এবং ক্লিনিকের অন্য রোগীদের সাথে হেসে কথা বলে ও দোয়া আর্শীবাদ চায়। ঘণ্টাখানেক পর বীথিকে সিজার করানোর জন্য অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে ইনজেকশান পুশ করলে রোগীর অবস্থা খারাপ হয়ে ওঠে। দীর্ঘক্ষণ হয়ে গেলে বীথির স্বামী সঞ্জয় বিশ্বাস তার স্ত্রী এবং সন্তানের খোঁজ জানতে চাইলে মালিক শারমিন জানান আরো সময় লাগবে। এ কথা বলে গোপনে অ্যাম্বুলেন্স ডেকে পাঠায়। ক্লিনিকের সামনে অ্যাম্বুলেন্স আসলে হঠাৎ করে ক্লিনিকের মালিক শারমিন জানান, রোগীর অবস্থা ভালো না তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে হবে। এ সময় ক্লিনিকের মালিক শারমিন এবং ডা. এনামুল কবিরসহ অন্যরা পালিয়ে যান।

রোগীর স্বজনদের সন্দেহ হলে তাকে মাগুরা ২৫০ শয্যার সদর হাসপাতালে নিলে রাত ১১টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. কৃষ্ণ দাস বিশ্বাস তাকে মৃত হিসেবে পান বলে জানান।

এ ঘটনায় রোগীর স্বজনরা ও এলাকাবাসী ক্লিনিকটি ঘিরে রেখে বিচার দাবি করে প্রতিবাদ করতে থাকেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ ব্যাপারে সদর থানায় নিহতের বাবা বিষ্ণুপদ কর্মকার ক্লিনিক মালিক শারমিন নাহার, ডা. এনামুল কবির ও ওয়ার্ডবয় রাজু আহমেদসহ অজ্ঞাত তিনজনের নামে শুক্রবার সকালে মামলা করেন।

সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ মাহবুর রহমান জানান, নিহতের বাবা বাদী হয়ে ক্লিনিকের মালিক ডাক্তার ও ওয়ার্ডবয়সহ অজ্ঞাত তিনজনের নামে মামলা করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।

মাগুরার সিভিল সার্জন ডা. মুন্সী ছাদুল্লাহ জানান, মাগুরায় বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ৮টি ক্লিনিক ইতোমধ্যে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। শারমিন ক্লিনিকে গত ২৩ অক্টোবর ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা ও সিলগালা করে দেয়। গোপনে ক্লিনিকটিতে রোগী ভর্তি ও চিকিৎসার বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সাথে দেখছি।

(ঢাকাটাইমস/২২ডিসেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :