চালের দাম বাড়ায় নতুন করে দারিদ্র্যসীমায় পাঁচ লাখ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৫:৩৩ | প্রকাশিত : ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৫:৩১
ফাইল ছবি

দারিদ্র্য বিমোচনে গত এক দশক ধরে বাংলাদেশ ধারাবাহিক যে সাফল্য দেখিয়ে আসছে, চালের দাম বৃদ্ধিতে তা ছেদ পড়েছে বলে উঠে এসেছে এক গবেষণায়।

সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনোমিক মডেলিং-সানেমের গবেষণা বলছে, চালতি বছর চালের দাম বাড়ায় দারিদ্র্যসীমা থেকে বের হয়ে আসা পাঁচ লাখ ২০ হাজার মানুষ নতুন করে দারিদ্র্যসীমায় ঢুকেছে।

শনিবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে এক অনুষ্ঠানে এই গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরেন সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান। ‘বাংলাদেশের অর্থনীতির ত্রৈমাসিক পর্যালোচনা’ তুলে ধরতেই এই আলোচনার আয়োজন করা হয়।

চলতি বছর বন্যায় হাওর এলাকা ছাড়াও দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ধানের উৎপাদনের জন্য বাংলাদেশ প্রধানত এই মৌসুমের ওপর নির্ভর করে আর এই সময় উৎপাদনে ধস নামায় চালের দাম বেড়ে যায় অস্বাভাবিকভাবে।

এক পর্যায়ে মোটা চালের দাম কেজি প্রতি ৫০ টাকা এবং চিকন চাল ৭০ টাকা পর্যন্ত উঠে যায়। কেবল চালের দাম বেড়েছে, এমন নয়, ধান তোলা থেকে শুরু করে চাল বাজারে নানা পর্যন্ত নানা ধাপেই স্বল্প আয়ের মানুষের আয়ের পথ সংকুচিত হয়েছে।

পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার নিজে চাল আমদানির পাশাপাশি বেসরকারি খাতে আমদানি বাড়াতে শুল্ক তুলে দিয়েছে। এতে চালের দাম কিছুটা কমে আসলেও গত বছরের একই সময়ের তুলনায় দাম এখনও ৩০ থেকে শতাংশ বেশি।

সানেমের গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বড় ধরনের আমদানি সত্ত্বেও চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এই বছর চালের মূল্য বৃদ্ধির কারণে দারিদ্র্যের হার দশমিক ৩২ শতাংশ বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। অর্থাৎ এই বছর চালের দাম বৃদ্ধির ফলে পাঁচ লক্ষ ২০ হাজার মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছে।’

অনুষ্ঠানে জানানো, দেশে দারিদ্র্যমুক্তির কাজ এগিয়ে চললেও এই হার আগের চেয়ে কমেছে। ২০০২ থেকে ২০০৫ সালে বার্ষিক দারিদ্র্য হ্রাসের হার ছিল ১.৮ শতাংশ, যা ২০০৫ থেকে ২০১০ সালে ১.৭ শতাংশে নেমে আসে। ২০১০ থেকে ২০১৬ সালে এটি আরো কমে ১.২ শতাংশে নেমে যায়।

সেলিম রায়হান বলেন বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাভাবিক জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার বজায় থাকলে সামগ্রিক ও চরম দারিদ্র্যে হার ২০৩০ সালের মধ্যে যথাক্রমে ১০ শতাংশ ও চার শতাংশে নেমে আসবে। আর জিডিপির গড় বৃদ্ধির হার আট শতাংশ হলে সামগ্রিক ও চরম দারিদ্র্যতার হার যথাক্রমে ৬.০৫ এবং ও দুই শতাংশ হবে।

এই গবেষকের মতে বাংলাদেশের জন্য এখন দুইটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। প্রথমত. উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার পাশাপাশি দারিদ্র্যের হার হ্রাসের প্রক্রিয়াকে আরও গতিশীল করা। এটা ছাড়া ২০৩০ সাল নাগাদ টেকসই উন্নয়নে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কঠিন হবে।

দ্বিতীয়. শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক খাতে বিনিয়োগকে অগ্রাধিকার দেয়া।

ব্যাংকিং খাতে ঋণ কেলেঙ্কারি ও খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি নিয়েও কথা বলেন এই অর্থনীতিবিদ। ব্যাংক আইন সংশোধন করে একই পরিবার থেকে আরও বেশি পরিচালক রাখার সুযোগ সৃষ্টিরও বিরোধিতা করেন তিনি। বলেন, ‘ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের একই পরিবারের চারজন সদস্যকে টানা নয় বছর দায়িত্ব পালনের সুযোগ দিলে তা ব্যাংকিং খাতকে আরো ভঙ্গুর করে দিতে পারে।’

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, গত অর্থ বছরে বাংলাদেশের রপ্তানি প্রবৃদ্ধির হার কমেছে। তবে চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত রপ্তানি ৬.৮৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। চামড়া শিল্পকে ‘বছরের পণ্য’ হিসেবে ঘোষণা করা সত্ত্বেও এই খাতে দুর্বল ব্যবস্থাপনার জন্য চামড়া খাতের রপ্তানি ২.৯৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২৩ডিসেম্বর/এসও/ডব্লিউবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

অর্থনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

অর্থনীতি এর সর্বশেষ

দুঃস্থ ও অসহায়দের মাঝে জনতা ব্যাংকের ইফতার সামগ্রী বিতরণ

ঈদ উৎসব মাতাতে ‘ঢেউ’য়ের ওয়েস্টার্ন সংগ্রহ

৮ হাজার কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন একনেকে

সিটি ব্যাংকের ২০২৩ সালের মুনাফা ৬৩৮ কোটি টাকা, বেড়েছে ৩৩%

ঈদ অফারে বিনামূল্যে মিনিস্টারের রেফ্রিজারেটর পেলেন আসাদুজ্জামান সুমন

সোনালী ব্যাংকে ‘বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক নেতৃত্ব ও দেশের উন্নয়ন’ শীর্ষক আলোচনাসভা

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ৭টি নতুন উপশাখার উদ্বোধন

স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের শ্রদ্ধা

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে কর্মসংস্থান ব্যাংকের শ্রদ্ধা

স্বাধীনতা দিবসে স্মৃতিসৌধে ইসলামী ব্যাংকের শ্রদ্ধা

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :