বিপন্নপ্রায় মদনটাকের বংশবিস্তার বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে

ফয়সাল আহমেদ, শ্রীপুর (গাজীপুর)
| আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৩:৩১ | প্রকাশিত : ২৪ ডিসেম্বর ২০১৭, ০৮:৪০

বাংলাদেশের দুলর্ভ পাখিদের মধ্যে অন্যতম মদনটাক। আবাসস্থল নষ্ট হয়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে পাখিটি এখন বিলুপ্তের পথে। বিপন্ন প্রাণির তালিকায়ও আছে এর নাম। আর গাজীপুরের শ্রীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক এই পাখিই বাচ্চা ফুটিয়েছে চারটি। ছানাদের যত্নে লালন করছে তাদের মা-বাবা।

এ নিয়ে পার্কের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে বইছে আনন্দের বন্যা। নতুন অতিথিদের নিয়ে পার্কের দর্শনার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ লক্ষ্য করা গেছে।

আবদ্ধ পরিবেশে এই জাতের পাখির বংশ বিস্তারের ঘটনা এবারেই প্রথম। আর প্রাণিটিকে রক্ষায় একে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে দেখছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন। ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, ‘মদনটাকের বাচ্চা দেয়া একটা খুশির সংবাদ। পাখিটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সুন্দরবন এলাকায় মাঝে মধ্যে কিছু মদনটাক দেখা যায়। এদের খাবার, বসবাসের জায়গা নষ্ট হয়ে যাওয়া, জলবায়ু পরিবর্তন, ইকো সিস্টেম ও ফুড চেইনে কিছু সমস্যা হওয়ায় এদের অস্তিত্ব আজ বিপন্নের পথে। এদের বংশবৃদ্ধির মাধ্যমে সংরক্ষণের উদ্যোগ নিলে মদনটাকের অস্তিত্ব রক্ষা করা যাবে।’

বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মোতালেব বলেন, ‘মহাবিপন্ন মদনটাক পাখি থেকে চারটি বাচ্চা পাওয়া আশার আলো দেখাচ্ছে। এভাবে বংশবৃদ্ধি ঘটলে মহাবিপন্নের তালিকা থেকে মদনটাক রক্ষা পাবে।’

পার্কের বন্য প্রাণি পরিদর্শক আনিছুর রহমান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক প্রতিষ্ঠা লগ্নে ছয়টি মদনটাক পাখি সংগ্রহ করা হয়। এ থেকে গত নভেম্বর মাসে দুইটি ও চলতি মাসে আরও দুইটি বাচ্চা পাওয়া গেছে।’

মদনটাক মূলত জলচর পাখি হিসেবে পরিচিত। মাছ, ব্যাঙ, সরীসৃপ, কাকড়া, বিভিন্ন জলজ প্রাণি এদের প্রধান খাদ্য। প্রজনন মৌসুম ব্যতীত একাকি নিভৃতচারী পাখি হিসেবে এরা পরিচিত। নভেম্বর থেকে জানুয়ারি মাসে বড় গাছের মগডালে ডালপালা দিয়ে উঁচু গাছের শাখায় এরা ডিম পাড়ে। মদনটাক তিন থেকে চারটি পর্যন্ত ডিম পাড়ে। ২৮ দিন পরেই ডিম থেকে ফুঁটে উঠে বাচ্চা।

আনিছুর রহমান বলেন, ‘মদনটাকের মূল অস্তিত্ব দক্ষিণ এশিয়াজুড়েই। তবে বাংলাদেশে বিভিন্ন এলাকায় বিলুপ্ত হয়ে গেলেও সুন্দরবন প্রাকৃতিক পরিবেশে এদের মাঝে মধ্যে দেখা যায়। ইতোমধ্যে সিঙ্গাপুর ও চীন থেকে এরা বিলুপ্ত হয়ে গেছে।’

পার্কের বন্যপ্রাণি রক্ষক রিপন কান্তি পাল জানান, ‘প্রাপ্তবয়স্ক পাখির পিঠের দিক উজ্জ্বল কালো। শরীর সাদা বর্ণের হয়। ডানার গোড়ায় কালো রং থাকে। পালকহীন মুখের চামড়া ও ঘাড় লালচে। গলা হলদে বা লালচে। চোখ সাদা কিংবা স্টেট-ধূসর। পা লম্বা। পায়ের পাতা, নখর ও পা সবজে-ধূসর থেকে স্টেট কালো।

এই জাতের স্ত্রী ও পুরুষ পাখি দেখতে একই রকম। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির মাথা ও ঘাড়ে বিক্ষিপ্ত ঘন পালক থাকে। পিঠ অনুজ্জ্বল কালো বর্ণের হয়।

পার্কে মদনটাকে খাবারেরর জন্য নলা ও পুঁটি মাছ সরবরাহ করা হচ্ছে। এছাড়াও প্রাকৃতিকভাবে খাবার যোগানের জন্য তাদের আবাস্থলের পাশেই জলাধার তৈরি করে তাতে মাছ ছাড়া হয়েছে। এছাড়াও বাচ্চার খাবারের জন্য প্রতিদিনই ছোট ছোট মাছের যোগান দেয়া হচ্ছে।’

ঢাকাটাইমস/২৪ডিসেম্বর/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

ফেসবুক আইডি ক্লোন করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ, যুবক গ্রেপ্তার

ফরিদপুর প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দের সঙ্গে পুলিশ সুপারের মতবিনিময়

পতেঙ্গায় ফিশিং বোটের ইঞ্জিন বিস্ফোরণে ৪ জন দগ্ধ

চট্টগ্রামে ঈদকে সামনে রেখে জালনোট চক্রের ৩ সদস্য গ্রেপ্তার

বরিশালে নামাজের সময় মসজিদের এসি বিস্ফোরণ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দ্রুতগতির লেনে যাত্রী নামানোর অপরাধে ৩৩ যানবাহনকে মামলা 

বরগুনা প্রেসক্লাব দখলের মামলায় ৭ জন কারাগারে  

পর্যটকদের আকৃষ্ট করছে তাহিরপুরের শহীদ সিরাজ লেক

ঝিনাইদহে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু

ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :