এদেশে পশ্চিমবাংলার ভদ্র লেখকেরা ও বাংলাদেশি দাদাবাদ

ফেসবুক কর্নার ডেস্ক
| আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৬:৩৫ | প্রকাশিত : ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৭:৪৯

ব্রাত্য রাইসু। নিজের ভাবনা-দর্শনগুলো অকপটে বলেন, কোনো ভনিতা ছাড়াই। নিজের একটা দার্শনিক জগৎও তৈরি করে নিয়েছেন ইতিমধ্যে। এই জগতে তার ভক্ত-অনুরাগী এমনকি শিষ্যের সংখ্যাও কম নয়। তার দর্শনের একটি হলো- প্রকৃত মেধার পূজা। নিজের ব্যক্তিসত্তা আর মর্যাদাকে সব সময় ঊর্ধ্বে রেখে চলার কথা বলেন। এপার বাংলা–ওপার বাংলার কবিরা সমীহ করে চলেন তাকে। পশ্চিমবঙ্গের কবিরা এদেশে এলে একবার হলেও তার নামটি নেন। তার লেখার গভীরতা যেমন একটা কারণ, তেমনি কারও ‘দাদাসুলভ’ আচরণকে হেলায় পাশে ঠেলে দেয়ার দড়তাও অনন্য। আজ (২৫ ডিসেম্বর) ফেসবুকে এ রকমই দুটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি। আসুন পড়ে নিই সেগুলো।

এদেশে পশ্চিমবাংলার ভদ্র লেখকেরা

‘পশ্চিমবাংলার দুই কবি আসছিলেন গত বছর। চঞ্চল আশরাফের বাসায় তাদের কারণে দাওয়াতে গেলাম।

দুইজনই একজন চুপ থাকলে আরেক জন কথা বলবেন ভিত্তিতে পশ্চিমবাংলার সাহিত্যিক মশাইদের নিয়া আলাপ করতে লাগলেন। এমন ভাবে যেন আমরা ওনাদের সবাইরে চিনি, চিনব যে ওইটাই স্বাভাবিক!

আমি জিজ্ঞেস করলাম, আপনারা এইখানকার কোন কোন সাহিত্যিকরে চিনেন?

দেখা গেলো ওনারা আমাদের অতি অল্প কিছু সাহিত্যিকরে চিনেন।

যার নামই জিগাই, ওনারা চিনেন না।

আমি চঞ্চলরে বললাম, নাকি অন্য কাউরে, যে ওনারা তো আমাদের সাহিত্যিক কাউরে চিনেন না, আপনারা আমাদের সাহিত্যিকদের গল্প ওনাদেরকে বলেন। ওনারাই খালি বলবেন কেন, শুনতেও তো হবে।

দুই সাহিত্যিক ঠিক দুই মিনিটের মধ্যে উইঠা পড়লেন।

তাদের নাকি দেরি হইয়া যাইতেছে! সাহিত্যের এই দিককার ডোজ তারা নিবেন না।”

“বাংলাদেশী দাদাবাদ

মৃদুল দাশগুপ্তের লেখা না ছাপানোর সঙ্গে ভারতের দাদাবাদীদের রিজেক্ট করার সম্পর্ক নাই।

ভারতীয় দাদাবাদকে অবশ্যই রিজেক্ট করতে হবে। এবং দাদাবাদীদের এতদ্দেশীয় অনুচরদেরও প্রতিহত করতে হবে। কিন্তু মৃদুলের লেখা না ছাপানোর কারণ তার বাইরে। দুই কারণে তিনি বাদ পড়ছেন।

এক, তিনি আমার নাম বিকৃত করছেন। যে নাম আমি ঘোষণা দিয়া বাদ দিছি তা আমার নাম হিসাবে প্রচার মানে বিকৃতি, এই অর্থে। এবং সে নামও তিনি ভুল ও বিকৃত ভাবে প্রচার করছেন। তিনি এই করতে গিয়া আমার প্রতি অশ্রদ্ধা প্রকাশ করছেন।

দুই, তিনি আমার কবিতা নিয়া যা লিখছেন, তার আরো ব্যাখ্যা দিয়া লিখতে বলা হইছিল তারে। অনুযোগকে স্পষ্ট করার জন্যে। তিনি সে ব্যাপারে অপারগতা প্রকাশ করায় আমরাও তার লেখা প্রকাশে অপারগতা প্রকাশ করছি। এই।

তার লেখায় আমার কেমন কবিতা লেখা উচিত বইলা যে নসিহত, সে নসিহত বাংলাদেশীয় কবিদের মধ্যেও পরিলক্ষিত হয়। তাই এইটারে ভারতীয় দাদাবাদের সঙ্গে একমাত্র কইরা দেখার উপায় নাই। নাম বিকৃতির ব্যাপারটিতেও তা নাই। এখানেও লোকে আমার নাম বিকৃত করে।

২. ভারতীয় দাদাবাদের সঙ্গে ফাইট করতে গিয়া আমি ভারতীয় বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্কের মধুরতা বাদ দিতে আগ্রহী না।

বরং তাদের পূজা করতে গিয়া বা তাদের বর্জন করতে গিয়া আমার এই দেশীয় বন্ধু কবিরা কীভাবে নিজেদেরকে বিসর্জন দেন সেইটা সব সময় দেখাইয়া দেওয়াই আমার দাদাবাদ ফাইটের সরল প্রক্রিয়া।

নিয়ম হচ্ছে, মিশব কিন্তু পা চাটব না, শত্রুও হব না। আলাপ হবে! অশ্রদ্ধা প্রকাশ করলে বাদ দেওয়া হবে। তাদের কেউ ভাল লিখলে তা বলব আমি।

ভারতীয় দাদাবাদের বিরোধিতা করতে গিয়া বিরোধিতাপূর্ণ অতি মনোযোগ আমি তাদেরকে দিতে যাব না। কারণ তাও প্রকারান্তরে ভারতীয় দাদাবাদেরই এক্সটেনশন।

ভারতীয় কবি লেখকদেরকে পথও দেখাবো মাঝে মাঝে। সেইটা বাংলাদেশী দাদাবাদ। আমি সে দাদাবাদকে আরো কিছুদিন কার্যকর রাখতে চাই। পরে বাদ দেব। কীভাবে লজ্জা পাইতে হয় এই জিনিসটা ভারতীয় দাদাবাদ আগে শিখুক, তারপর।”

(ঢাকাটাইমস/২৫ডিসেম্বর/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফেসবুক কর্নার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :