চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী পিঠা-পুলি উৎসব

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৭:৫৩

শীতের আগমনে নানা উৎসবে মাতে গ্রাম বাংলার মানুষ। যা এখন বিলুপ্ত প্রায়। নতুন প্রজন্মের কাছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী পিঠা-পুলিকে পরিচয় করিয়ে দিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তপুর উপজেলার রহনপুর পৌর এলাকার বাবুরঘোনে আয়োজন করা হয় পিঠা উৎসবের। নাচ-গান, বাহারি নকশা আর মজাদার সব পিঠা নিয়ে জমে উঠে উৎসব। দিনভর জমজমাট এ উৎসবে যোগ দেয় নানা শ্রেণি-পেশার মানুষও।

শীতকালে পিঠার আয়োজন গ্রাম-বাংলার অন্যতম একটি উৎসব। এ সময়টাই প্রায় সব বাড়িতেই কমবেশি নতুন ধানের পিঠা-পুলি বানানো হলেও; এ উৎসব একটু অন্যরকম। গ্রামের কৃষাণ-কৃষাণীর ছেলে-মেয়েদের মনে আনন্দ দেয়ার জন্য নাচ-গান ও পিঠা উৎসবের এই আয়োজন করেন উত্তর রহনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা মমতাজ বেগম।

এদিকে এ উৎসবকে উৎসাহিত করতে অংশ নেয় এলাকার ছাত্র-ছাত্রী ও উৎসাহী কৃষাণিরা। ধান থেকে ঢেঁকিছাঁটা চাল যাঁতায় পিষে সেই আটা থেকে তৈরি করা হয় হরেক রকম পিঠা। আর সেই পিঠা খেতে আসা অতিথিদের গ্রাম বাংলার গীত গেয়ে আনন্দ দেয় ছাত্র-ছাত্রীরা। পাশাপাশি শেখানো হয় কিভাবে পিঠা বানাতে হয়। এ কারণে ছেলে-মেয়েদের আনন্দের মাত্রাটাও বেশি। যার জন্য অপেক্ষা করে সারাবছরই।

ওই এলাকার অভিভাবক রোজিনা বেগম জানান, নতুন ধান উঠার পরে এই ধরনের পিঠা উৎসব হয়ে থাকে প্রতিবছর এ গ্রামে। আর ছেলে মেয়েদের এখানে নিয়ে এসেছি। কারণ তাদের এই গ্রাম বাংলার খাবারগুলো সম্পর্কে জানা ও বুঝাতে পারি।

স্কুলছাত্রী ববিতা জানায়, এই দিনটির জন্য আমরা সকলেই অপেক্ষা করি- কারণ পিঠা উৎসবটি আসবে কখন। আর আমরা ছাত্র-ছাত্রীরা বিভিন্ন ধরনের পিঠা-পুলি তৈরি করা শিখতে পারি।

স্কুলছাত্র আসফাকুন জানায়, এই দিনটিতে মেয়েরা হলুদ শাড়ি ও ছেলেরা হলুদ পাঞ্জাবি পড়ে অনেক আনন্দ করে থাকি। এতে খুব মজা হয়।

পিঠা উৎসব আয়োজক মমতাজ বেগম জানান, মূলত হারিয়ে যাওয়া গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য তুলে ধরতে এবং সংস্কৃতির সাথে নতুন প্রজন্মের পরিচয় করিয়ে দিতেই গত কয়েক বছর ধরে এই আয়োজন। আর ঐতিহ্য ধরে রাখার এই উৎসব আগামীতে আরো বড় পরিসরে করার কথা জানালেন আয়োজকরা।

অন্যদিকে, রহনপুর ইউসুফ আলী কলেজের বাংলা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান সাদেকুল ইসলাম জানান, বিশেষ গোষ্ঠীর কারণে আজ এই গ্রাম-বাংলার সংস্কৃতিগুলো হারাতে বসেছে বললেন অবসরপ্রাপ্ত এই অধ্যাপক।

তিনি আরো বলেন, প্রত্যেক গ্রামে মমতাজের মতো আরো কেউ এগিয়ে আসুক গ্রাম-বাংলার সংস্কৃতিগুলো নিয়ে এমনটাই প্রত্যাশা করেন তিনি।

পাটিসাপটা, ভাপাপিঠা, পুলি, মুইঠা, তেলপিঠা, ও তিলের পিঠাসহ নানা নামের ও স্বাদের এই পিঠা উৎসবে বাড়তি পাওনা হিসেবে ছিল শিশু-কিশোরদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও। আর ছোট-বড় সবার অংশগ্রহণে জমজমাট একটি দিন কাটে পিঠাপ্রেমীদের।

(ঢাকাটাইমস/২৫ডিসেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :