মহিউদ্দিন চৌধুরীর চেয়ারে ‘বসছেন’ মাহতাব চৌধুরী

ইব্রাহিম খলিল, চট্টগ্রাম
 | প্রকাশিত : ২৬ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৭:৪৭

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিউদ্দিন চৌধুরীর চেয়ারে বসতে যাচ্ছেন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর প্রয়াত জহুর আহমদ চৌধুরীর ছেলে মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী। তিনিই পেতে যাচ্ছেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব।

ঢাকাটাইমসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী মোশাররফ হোসেন। মেয়াদোত্তীর্ণ চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটিও ভেঙে দেওয়ার আভাসের কথা বলছেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, ‘চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির মেয়াদ গত নভেম্বর মাসে চার বছর পূর্ণ হয়েছে। সে হিসেবে মেয়াদোত্তীর্ণ এ কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি গঠনের বিষয়ে চিন্তা চলছে। তবে আপাতত কমিটির এক নম্বর সিনিয়র সহ সভাপতি হিসেবে মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।’

মোশাররফ বলেন, ‘গত ২৩ ডিসেম্বর শনিবার দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম প্রেসিডিয়ামের সভায় চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ নিয়ে আলোচনা হয়। এতে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে দেওয়ার আভাসও দেওয়া হয়। রবিবার চট্টগ্রাম সফরের সময় কয়েকজন নেতাকেও এই ইঙ্গিত দেন প্রধানমন্ত্রী। ’

এ ব্যাপারে জানার জন্য আজ সোমবার সকাল থেকে মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে তার ভাই হেলাল উদ্দিন চৌধুরী তুফান বলেন, ‘রবিবার চট্টগ্রাম নেভাল একাডেমিতে নৌবাহিনীর বার্ষিক রাষ্ট্রপতির কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রী আমাকে ডেকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়টি জানান।’

‘মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীকে বার্তাটি পৌছে দেওয়ার দায়িত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেন, ওনাকে বলবেন সতর্কভাবে যেন দায়িত্ব পালন করেন। কিন্ত প্রধানমন্ত্রীর ওই নির্দেশনা নিয়ে আমরা চিন্তিত।’

চিন্তাটা কী- এমন প্রশ্নে মাহতাবের ভাই বলেন, ‘সেটা অবশ্যই বড় কিছুই নয়। তবে নগর আওয়ামী লীগে যেহেতু দুই পক্ষে বিরোধ আছে সে কারনে হয়তো প্রধানমন্ত্রী সতর্কভাবে দায়িত্ব পালন করার কথা বলেছেন। কারণ তাদের এক করাই যে কঠিন।’

গত ১৪ ডিসেম্বর মারা যান চট্টগ্রামের দাপুরে নেতা এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী। পরদিন তাকে সমাহিত করার পরই নগর আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ নিয়ে প্রয়াত নেতার বাসাতেই রুদ্ধদ্বার বৈঠকে হয়। এ বৈঠকে নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নির্ধারণ করা নিয়ে মহিউদ্দিন চৌধুরী ও মেয়র নাছিরের অনুসারী নেতাদের মধ্যে কিছুটা তর্ক-বিতর্ক হয়। পরে নেতারা ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নির্ধারণের বিষয়টি কেন্দ্রের দিকে ছেড়ে দেয়ার বিষয়ে একমত হন।

এরপর শুরু হয় চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিউদ্দিন চৌধুরীর হাল ধরা নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা। এরমধ্যে মহিউদ্দিন চৌধুরীর বড় ছেলে ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সস্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলকে ঘিরে মহিউদ্দিন বলয়, নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলয় এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলামের একটি বলয় তৎপর হয়ে উঠে।

মহিউদ্দিনের জীবদ্দশায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছিরের সঙ্গে তার বিরোধ ছিল। আর দুই নেতার বিরোধে নগর আওয়ামী লীগ ছিল দুই ভাগে বিভক্ত। এর মধ্যে মাহতাব চৌধুরী নাছিরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/২৬ডিসেম্বর/জেডএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বন্দর নগরী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :