অতিথি পাখিতে মুখর সেন্টমার্টিন

বলরাম দাশ অনুপম, কক্সবাজার
 | প্রকাশিত : ২৭ ডিসেম্বর ২০১৭, ০৮:২১

দিন দিন বাড়ছে শীতের তীব্রতা। আর তার সঙ্গে কক্সবাজার জেলার উপকূলীয় এলাকায় আসতে শুরু করেছে অতিথি পাখি। নানা জাতের অতিথি পাখির কলকাকলিতে ইতোমধ্যে মুখরিত হয়ে উঠেছে জেলার বিভিন্ন উপকূল ও সেন্টমার্টিন দ্বীপ।

এসব অতিথি পাখি দেখতে পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে। পাখি কখনো নীল-সাদা আকাশে পাখা মেলে উড়ে মানুষকে আনন্দ দিচ্ছে, আবার কখনো বঙ্গোপসাগর কিংবা নদীর জলে জলকেলি করছে। ডুব দিয়ে শিকার করছে মাছ। অতিথি পাখির এমন খুনসঁটি আর ছোটাছুটি সবার মনকে করে তুলছে প্রফুল্ল।

বিশেষ করে দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন, সমুদ্রসৈকতের দরিয়া নগর, নাজিরারটেক, ইনানী সমুদ্রসৈকত, টেকনাফের নাফনদী আর কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর বিভিন্ন উপকূল মোহনায় নানা জাতের অতিথি পাখির উপস্থিতি বেশ লক্ষ করা যাচ্ছে। এসব এলাকায় উপকূলজুড়ে বিভিন্ন প্রান্তে দলে দলে বাসা বাঁধছে নানা দেশের অতিথি পাখি।

কার্তিক মাসের পর থেকে ভারত, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, সাইবেরিয়া, মধ্য এশিয়া, রাশিয়া থেকে হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে অতিথি পাখির দল কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকায় হাজির হচ্ছে প্রতিদিন।

সদ্য সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমণ শেষে ফেরা শহরের ঘোনারপাড়া এলাকার রাজিব, রকি, শহিদুল ইসলামসহ একাধিক যুবক জানান, বিভিন্ন প্রজাতির পরিযায়ী পাখির বেশির ভাগই এখন বাসা বেঁধেছে টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন এলাকার উপকূলীয় প্যারাবন এবং গ্রাম অঞ্চলের গাছগাছালিতে। শীতের অনুভূতিতে সেন্টমার্টিনের সাগরকে ছিন ছিন শব্দে বিভোর করে তুলেছে অতিথি পাখির দল।

ওই যুবকরা জানান, ঝাঁকে ঝাঁকে দূরদেশি পাখি এসে সেন্টমার্টিন দ্বীপের হোটেলের কটেজের ছাদে, গাছের ডালে, পর্যটকবাহী জাহাজের ছাদে ও সাগরের বিভিন্ন খুঁটিতে বসে আপন মনে কলকাকলি করছে।

টেকনাফের শামলাপুর বাজারের দীর্ঘদিনের ব্যবসায়ী অমর দাশ জানান, ১২-১৪ বছর হয় এই অতিথি পাখি দূরদেশ থেকে আসতে শুরু করেছে। বিশেষ করে বাতাসে শীতের বার্তা শুরুর পর পাখির আগমন ঘটে থাকে।

রবিবার রাতে সেন্টমার্র্টিন ভ্রমণ শেষে কক্সবাজার ফিরে এসেছেন ঢাকার বসুন্ধরা এলাকার রফিকুল আলম ও সাদিয়া জান্নাত নামের এক নবদম্পতি। সেন্টমার্টিনের একাধিক বাসিন্দা ও জেলেদের উদ্ধৃতি দিয়ে তারা জানান, বছর দশেক আগে থেকে এখানে দেশি-বিদেশি পাখির আনাগোনা চোখে পড়ে। শীতের শুরুতে এই পাখিগুলো খাবারের জন্য ছুটে আসে সেন্টমার্টিন দ্বীপ ও সাগরে। পানির উপর অংশে পড়ে যাওয়া পোকা, ছোট মাছ শিকার করে খেতে দেখা যায় এদের। এ ছাড়া দ্বীপের বিভিন্ন জায়গায় পড়ে থাকা পোকা, মাছ ইত্যাদি খাবারের জন্য ছুটে আসে দূরদেশ থেকে।

শীতের তীব্রতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পরিযায়ী পাখির সংখ্যাও যেন বাড়তে থাকে। শীত শেষে আবার ফিরে যায় আপন ঠিকানায়।

সেন্টমার্টিন দ্বীপের পাশাপাশি কক্সবাজারের খুরুস্কুল, ভারুয়াখালী, ইনানী, হিমছড়ি, চৌফলদন্ডী, পোকখালী, ছিরাদিয়া, টেকনাফের সৈকত পাড়, নাজিরারটেক, সোনাদিয়াসহ বেশ কিছু এলাকা অতিথি পাখির কিচির-মিচির শব্দে মুখরিত। বক, চখা-চখি, ঘুঘু, চেঘা, গাংচিল, শঙ্খচিল, পেলিক্যান, ডাভ, ভাদিহাস ও বালিহাসসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি দেখতে দর্শনার্থীরা প্রতিদিন ভীড় জমাচ্ছেন ওই সব স্থানে।

(ঢাকাটাইমস/২৭ডিসেম্বর/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :