খালেদার খালাস চাইলেন আইনজীবীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৯:৩৩ | প্রকাশিত : ২৭ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৮:০৩

তথ্য-প্রমাণ ও সাক্ষীর মাধ্যমে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলাটি রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে দাবি করে মামলা থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার খালাস চেয়েছেন তার আইনজীবীরা।

বুধবার চতুর্থ দিনের মতো খালেদা জিয়ার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন আব্দুর রেজাক খান।

যুক্তি উপস্থাপনের শেষ পর্যায়ে বিএনপি নেত্রীর আইনজীবী বলেন, ‘আশা করি বেগম খালেদা জিয়া সব অভিযোগ থেকে খালাস পাবেন।’ তিনি বলেন, ‘এই মামলার প্রতিবেদনের সময়েই খালেদা জিয়াকে খালাস দেয়া উচিত ছিল। কিন্তু তা বিশেষ কারণে করা হয়নি। আমি আশা করি স্বাধীনভাবে আপনি (বিচারক) ন্যায়বিচার করবেন এবং তিনি খালাস পাবেন।’

রেজাক খান বলেন, এ মামলায় যে নথিপত্র দেয়া হয়েছে সেটা সাক্ষ্যরবিহীন, ঘষামাজা, কোনো তথ্য উপাত্ত কিছুই নাই। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের কোনো কাগজপত্র তারা প্রমাণ করেন নাই। সোনালী ব্যাংকের দপ্তর থেকেও কোনো কাগজপত্র দিতে পারেন নাই।

‘তারা বলেছেন, এই টাকা বিদেশ থেকে এসেছে এবং বন্টন হয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের সঙ্গে কোনো ট্রানজেকশন হয়েছে, স্টে টু স্টে সেটা প্রমাণ করেতে পারেন নাই, বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেন কারেন্সি আসে কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকও এটা সম্পর্কে অবগত নয়।’

রাজধানীর পুরান ঢাকার বকশীবাজারে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত পঞ্চম এর বিচারক আখতারুজ্জামানের আদালতে এ মামলার বিচারকাজ চলছে। বুধবার বেলা ১১টা ২২ মিনিটে খালেদা জিয়ার প্রধান আইনজীবী আব্দুর রেজাক খান যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন। তার আগে বেলা ১১টা ১৭ মিনিটে আদালতে হাজির হন খালেদা জিয়া।

চতুর্থ দিনে এসে আব্দুর রেজাক খান তার যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন। এরপর খন্দকার মাহবুব হোসেন খালেদা জিয়ার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন। আগামীকাল বৃহস্পতিবারও তিনি খালেদা জিয়ার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করবেন।

রেজাক খান যুক্তি উপস্থাপনের শুরুতে বলেন, ‘পাবিলিক প্রসিকিউটর দেখাতে পারেননি বেগম খালেদা জিয়া সোনালী ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলেছেন এবং টাকা তুলেছেন। শুধু তাই নয়, তার বিরুদ্ধে লিখিত ও মৌখিক কোনো প্রমাণও নেই। খালেদা জিয়া ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন মামলার কোনো সাক্ষী এ বিষয়ে কিছু বলেননি। মামলাটি এক তরফাভাবে করা হয়েছে। যেটা নেই সেটাও এ মামলায় চেষ্টা করা হয়েছে।’

‘প্রাইমারি সাক্ষ্যপ্রমাণ দিয়ে মামলা প্রমাণ করতে হয়। এরপর ওরাল এভিডেন্স আসবে’- এমন মন্তব্য করে খালেদা জিয়ার আইনজীবী বলেন, ‘এটা খয়রাতি টাকা। তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান টাকাটা এনেছিলেন। তিনি কোনো রাস্তার লোক নন। টাকাটা কীভাবে এসেছে এটা আমরা দেখিয়ে দিয়েছি। চার কোটি ৪৪ লাখ টাকার একটা অংশ নিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান। আর একটা অংশ গেছে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টে। মোস্তাফিজুর রহমান এ মামলায় অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। কিন্তু শুধুমাত্র একটি অংশের জন্য মামলা করা হয়েছে। খালেদা জিয়াকে হয়রানি করার জন্য মামলাটি করা হয়েছে।’

রেজাক খান বলেন, ‘আমরা টাকাটা খরচ করিনি, ফেলে রেখেছি। নীতিমালা করা হয় নাই তাই।’

ঘটনা ১৯৯৩ সালের। ২০০৭ সালে দুদকের মাথায় এমন কি বাঁশ পড়লো যে এই মামলা নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে শুরু করল-এই প্রশ্ন তুলে বিএনপি নেত্রীর আইনজীবী বলেন, ‘সারা দেশে এত মামলা থাকতে দুদক কেন এই মামলার বিষয়ে এত আগ্রহী?’। তিনি বলেন, ৪০৯, ১০৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। কার বিরুদ্ধে কত ধারায় অভিযোগ সে বিষয়টি সুনির্দিষ্টভাবে দেখাতে হয়। কিন্তু এখানে সব কিছু খালেদা জিয়ার ওপর চাপিয়ে দেয়া হল।

রেজাক খান বলেন, ‘বিগত সেনা সমর্থিত সরকারের সময় এ মামলাটি করা হয়। এ সরকারের আমলেও তার বিরুদ্ধে অনেক মামলা দেয়া হয়েছে। মামলার ভারে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক জীবন ব্যাহত হচ্ছে। খালেদা জিয়াকে জনসম্মুখে হেয় করার জন্য মানহানিকর বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে ক্ষমতাসীনরা। যা বিচারের ওপর হস্তক্ষেপের শামিল।’

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ আদালতে বিএনপির শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। আইনজীবীদের মধ্যে ছিলেন মওদুদ আহমদ, এজে মোহাম্মদ আলী, সাবেক স্পিকার জমির উদ্দীন সরকার।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় অপর একটি মামলা করে দুদক। ২০১০ সালের ৫ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশীদ।

২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।

এ মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়াও অপর আসামিরা হলেন- মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।

(ঢাকাটাইমস/২৭ডিসেম্বর/এমএবি/জেডএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

আদালত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

আদালত এর সর্বশেষ

আপিল বিভাগে নিয়োগ পেলেন তিন বিচারপতি

কক্সবাজারে কতজন রোহিঙ্গা ভোটার, তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট

সাউথ এশিয়ান ল' ইয়ার্স ফোরাম ন্যাশনাল ও ইন্টারন্যাশনাল চ্যাপ্টারের দায়িত্ব পুনর্বণ্টন

আদেশ প্রতিপালন না হওয়ায় চট্টগ্রামের ডিসি এসপিসহ চার জনকে হাইকোর্টে তলব

১১ মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগের শুনানি ২৯ জুলাই

২৮ দিন পর খুলল সুপ্রিম কোর্ট

ব্যবসায়ী নাসিরের মামলা: পরীমনিকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি

বোট ক্লাব কাণ্ড: পরীমনির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন

সেই রাতে ৮৭ হাজার টাকার মদ খেয়েছিলেন পরীমনি, পার্সেল না দেওয়ায় তাণ্ডব

বোট ক্লাব কাণ্ড: প্রতিবেদন দিল পিবিআই, ব্যবসায়ী নাসিরের মামলায় ফেঁসে যাচ্ছেন পরীমনি?

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :