সিজারে সন্তান প্রসব, গজ রেখেই পেট সেলাই

মাজহারুল ইসলাম রোকন, নারায়ণগঞ্জ
 | প্রকাশিত : ২৭ ডিসেম্বর ২০১৭, ২০:৫২
ফাইল ছবি

নারায়ণগঞ্জ শহরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের পর গজ রেখেই রোগীর পেট সেলাই করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

শহরের খানপুর এলাকায় ‘আমেনা জেনারেল হাসপাতাল’ নামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীর স্বজনরা। রোগীর জীবন সংকটাপন্ন হওয়ার প্রেক্ষিতে বুধবার সন্ধ্যায় রোগীর স্বজনরা হাসপাতাল ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছে।

গত সেপ্টেম্বরে এই হাসপাতালে সন্তান প্রসবের জন্য ভর্তি হয়েছিলেন লিপি আক্তার। তার বাচ্চার জন্মদানের জন্য সিজারিয়ান অপারেশন করেন ডাক্তার। এরপর বাড়ি ফিরে যাওয়ার পর রোগীর শারীরিক অবনতি ঘটে। পরে রোগীকে অন্য একটি হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেই জানা যায়, সিজারিয়ান অপারেশনের পর ভেতরের রক্ত ও অন্যান্য জিনিস পরিস্কার করার জন্য ব্যবহার করা গজ বের করা হয়নি।

ভুক্তভোগী রোগী লিপি বেগমের বাড়ি সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড় মৌচাক এলাকায়। তার মা রোমেলা বেগম জানান, ‘গত ৫ সেপ্টেম্বর আমেনা জেনারেল হাসপাতালে লিপি আক্তারের সিজার করা হয়। এরপর কয়েকদিন হাসপাতালে থেকে বাড়ি চলে গেলে কয়েকদিন পর পেটের ড্রেসিং করানো হলে অপারেশনের জায়গায় ইনফেকশন হয়ে যায়।’

রোমেলা বেগম বলেন, ‘ড্রেসিংয়ের জন্য এভাবে ১৫ বার হাসপাতালে আসা হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা বরাবর একই কথা বলে। তবে এর মধ্যে রোগীর সিজারের সেলাই খুলে যায়। এতে রোগীর পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়ে যায়। সেলাই খোলা অবস্থায় প্রায় পাঁচ দিন হাসপাতালে পড়ে থেকে যান্ত্রণায় ছটফট করতে থাকে।’

এভাবে বার বার সমস্যার কারণে হাসপাতালে আসার কারণে চিকিৎসক ও হাসপাতালের লোকেরা স্বজনদের বলেন, রোগীর পেট পঁচা, গন্ধ। তাইতো শুধু ইনফেকশন হয়।

‘সবশেষে আমার মেয়ের অবস্থার অবনতি দেখে তাকে ফ্যামিলি ল্যাব হাসপাতালে চিকিৎসায় জন্য নিয়ে গেলে তার পেট থেকে গজ বের হয়। গত দুই দিন আগে ২৫ ডিসেম্বর এই গজ তার পেট থেকে বের হলে সে এখন সংকটে রয়েছে। এখন আমার মেয়ের কী হবে। সে কি বাঁচবে নাকি মরবে কে জানে’-এ কথা বলে কাঁদতে থাকেন লিপি বেগমের মা।

হাসপাতালের স্বত্ত্বাধিকারী চিকিৎসক আমেনা বলেন, ‘ভুল হতেও পারে তবে রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত কিছু বলতে পারছিনা। যদি এরুপ ভুল হয়ে থাকে তার দায়িত্ব নিতে হবে।’

বুধবার এই ঘটনায় আমেনা জেনারেল হাসপাতালের সামনে লিপির স্বজনরা বিক্ষোভ করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে যায় পুলিশ। নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশের উপপরিদর্শক শামীম বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে মৌখিকভাবে শুনেছি। তবে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

ঢাকাটাইমস/২৭ডিসেম্বর/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :