কুষ্টিয়ায় ধানের জমিতে তামাকের আগ্রাসন

জহুরুল হক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৩ মার্চ ২০১৮, ০৮:৩৬ | প্রকাশিত : ০৩ মার্চ ২০১৮, ০৮:৩৩

কুষ্টিয়ায় উল্লেখযোগ্যহারে বেড়েছে তামাক চাষ। বোরো আবাদের জমিগুলো দখল করে নিয়েছে তামাক। এবার বিএডিসির সেচ স্কিমগুলোতেও তামাক চাষ শুরু করেছেন কৃষকরা। বিড়ি সিগারেট উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো সার, বীজ, কীটনাশক ও টাকা দিয়ে কৃষকদের সহযোগিতা করায় বেড়েছে তামাক চাষ। নিজস্ব পুঁজি ছাড়াই মাত্র তিন মাসে ফসল পাওয়ায় কৃষকরা ঝুঁকে পড়েছেন তামাক চাষে।

দেশের তামাক উৎপাদনকারী এলাকার মধ্যে কুষ্টিয়া অন্যতম। এখানকার উৎপাদিত তামাক উৎকৃষ্ট মানের হওয়ায় বড় বড় তামাক, বিড়ি, সিগারেট প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলো তামাক চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করে আসছেন। মাঠের পর মাঠ শুধু তামাক চাষ হলেও এর সঠিক কোন পরিসংখ্যান নেই খোদ কৃষি অফিসে।

তবে, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, কুষ্টিয়া জেলায় মোট আবাদি জমির পরিমাণ ১ লাখ ১৫ হাজার ৯৭৮ হেক্টর। এর মধ্যে গত মৌসুমে বোরো ধান আবাদ হয়েছিল প্রায় ৩৩ হাজার ৮৫২ হেক্টর। গম ১১ হাজার ১৩০ হেক্টর, ভুট্টা ২০ হাজার ৯০০ হেক্টর, আলু ২ হাজার ৮০৬ হেক্টর, মিষ্টি আলু ৩৬৪ হেক্টর, সরিষা ৬ হাজার ৬৯০ হেক্টর, সবজি ৬ হাজার ২২৫ হেক্টর এবং ১৩ হাজার ২৭৬ হেক্টরে তামাক চাষ হয়েছিল।

আর তামাক ও তামাকজাত পণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর তথ্যমতে, জেলায় তামাকের চাষ হয়েছিল প্রায় ৩৪ হাজার হেক্টর জমিতে। তাদের হিসাব অনুযায়ী এ বছর কুষ্টিয়া অঞ্চলে আবুল খায়ের টোব্যাকো কোম্পানি প্রায় ৯ হাজার হেক্টর, ঢাকা টোব্যাকো ১৫ হাজার হেক্টর, জামিল টোব্যাকো ১২শ হেক্টর এবং ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানি প্রায় ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে তামাক চাষে কৃষককদের সহযোগিতা দিচ্ছে। এছাড়া ব্যক্তি পর্যায়ে আরও ৮ হাজার হেক্টর জমিতে তামাকের চাষ হচ্ছে যা মোট আবাদী জমির অধের্কের বেশি।

এদিকে সরকার তামাক চাষে নিরুৎসাহিত করলেও বিড়ি সিগারেট উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো তাদের কর্মীদের মাধ্যমে নভেম্বর, ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসের সমুদয় সার বিসিআইসি ডিলারদের কাছ থেকে গোপনে কিনে কৃষকদের দিয়েছেন। ফলে কৃষকদের জন্য সরকারের দেয়া ভর্তুকির সার তামাক চাষে ব্যবহৃত হচ্ছে।

কৃষি বিশেষজ্ঞ ড. গোলাম মর্তুজা বলেন, এমন একটা সময় আসবে যখন তামাক চাষের ফলে কুষ্টিয়ায় আর কোন ফসলের চাষ করা সম্ভব হবে না। মাটির স্বাস্থ্য রক্ষা এবং খাদ্য জাতীয় ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে এখনই তামাকের চাষ নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। এ অঞ্চলে তামাক চাষ বৃদ্ধির ধারা যেভাবে উর্ধ্বমূখী হচ্ছে, অদূর ভবিষ্যতে কুষ্টিয়ায় চরম খাদ্য সংকট দেখা দিবে।

(ঢাকাটাইমস/০৩মার্চ/প্রতিনিধি/ওআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :