চাঁদা না দেয়ায় গ্রামছাড়া এক কৃষক

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৫ মার্চ ২০১৮, ২২:৪৮

জেলার শৈলকুপার কৃষক নুরুল ইসলামের ছিল গোছালো সংসার। পাঁচ সন্তান ও স্ত্রী নিয়ে সুখের সংসার সাজিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এখন তিনি নিজের ঘরেই মাথা দিতে পারেন না। ঘরের মেঝে ও উঠানে ঘাস জন্মে গেছে। চাঁদাবাজদের ভয়ে তিনি সপরিবারে গ্রাম ছেড়েছেন। উঠেছেন কুষ্টিয়ার পশ্চিম আবদালপুর গ্রামে।

ঝিনাইদহের শৈলকুপায় উপজেলার ত্রীবেনি গ্রামের নুরুল ইসলাম ওই গ্রামের শফিরুদ্দীন মণ্ডলের ছেলে।

নুরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, গ্রামের একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে নিরীহ মানুষের উপর নির্যাতন করছে। প্রথমে চাঁদা দাবি ও পরে চাঁদা দিতে না পারলে মারধর করে গ্রামছাড়া করা হয়। অনেক সময় নির্যাতিতদের জমি অল্প টাকায় কিনে নেন। এভাবে চলছে মাসের পর মাস। কোন প্রতিকার নেই। তাদের হাত থেকে হিন্দুরাও রেহায় পাচ্ছে না। ইতোমধ্যে ঋষিপাড়ার জয় গোপাল ও কার্তিক দাসসহ তিন হিন্দু পরিবার গ্রাম ছেড়েছে।

তিনি অভিযোগ করেন, তার কাছেও দাবি করা হয়েছিল ৫০ হাজার টাকা। কিন্তু তিনি এই টাকা দিতে না পেরে গত ৪ মাস আগে গ্রাম ছেড়েছেন। তার সন্তান ডালিম, স্বপ্না, রুপা, ছেলে রাকিবুল ও জুনায়েদকে নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে অসহায়ভাবে দিন কাটাচ্ছেন।

নুরুল ইসলামের ভাষ্যমতে, ত্রিবেনী গ্রামের আহাজার মণ্ডলের ছেলে লাল্টু ও তার ভাই বল্টু, পাতাহারের ছেলে খোকন, মহির মল্লিকের ছেলে কামু, মজিবর মণ্ডলের ছেলে টিটু, ইয়াকুব আলীর ছেলে রেজাউল ও শাহাদতের ছেলে তপেলসহ ৮/১০ জন গত ৪ মাস আগে তার কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করলে পরিবারের ওপর বিভিন্ন অত্যাচার চালায়। ফলে বাধ্য হয়ে তিনি ঘরবাড়ি ফেলে চলে আসেন। আজম মণ্ডল নামে আরেক ব্যক্তি তার মতো গ্রাম ছেড়েছেন। এদের অত্যাচারে ভিটা ছেড়ে চলে গেছে ত্রিবেনী গ্রামের নাসির মণ্ডল। নাসির মণ্ডলের সেই বাড়িতে বসবাস করছে চাঁদাবাজ গ্রুপের মূলহোতা লাল্টু। এই চক্রের বিরুদ্ধে এলাকার কেউ টু-শব্দ করে না। করলেই নির্যাতনের খড়গ নেমে আসে।

শৈলকুপার ত্রিবেনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জহুরুল হক খান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এই চক্রটি শুধু চাঁদাবাজি করেই ক্ষ্যান্ত হয় না, মানুষের ঘরে উঠে মেয়েদের সম্ভ্রম নষ্ট করে। চেয়ারম্যান হিসেবে আমি কিছুই করতে পারিনি। কারণ আমি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রাথী হিসেবে চেয়ারম্যান হয়েছি।

চেয়ারম্যান আরো জানান, ঋষি সম্প্রদায়ের জয় গোপাল ও কার্তিক দাসের পরিবারকেও এরা গ্রাম ছাড়া করে তাদের জমি অল্প টাকায় কিনে নিয়েছে। হিন্দু পরিবারের আরেকটি ছেলে তার বৃদ্ধ মাকে রেখে ভারতে পালিয়ে গেছে বলেও চেয়ারম্যন জহুরুল জানান।

শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, এ ধরনের কোন অভিযোগ আমার কাছে কেউ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আমি চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেব।

তিনি আরো বলেন, এ ধরনের জুলুম পুলিশ কোনভাবেই বরদাশত করবে না।

তিনি বলেন, অনেক ঘটনা পুলিশের অজান্তে ঘটে। তিনি নির্যাতিত কৃষককে অভিযোগ নিয়ে থানায় আসার পরামর্শ দেন।

(ঢাকাটাইমস/৫মার্চ/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :