‘সবক্ষেত্রে নারীদের দৃশ্যমান সম্পৃক্ততা বেড়েছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৬ মার্চ ২০১৮, ১৭:২৩

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, ‘সাংবাদিকতায় নির্ভীকতা, সাহসিকতার প্রয়োজন। আর এই কাজটি নিজস্ব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে পুরুষের সমান তালে নারীরা করে যাচ্ছে। এটি নারীর ক্ষমতায়নের উজ্বল দৃষ্টান্ত। গণমাধ্যমে নারীদের সম্পৃক্ততা, ব্যাংকিং সেক্টরসহ সমগ্র ক্ষেত্রে নারীদের দৃশ্যমান সম্পৃক্ততা বেড়েছে। এটা সব নারীর জন্য গৌরবের।’

মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০১৮ উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভায় স্পিকার এসব কথা বলেন।

‘গণমাধ্যমে নারী ও কর্মপরিবেশ’ শীর্ষক এ আলোচনা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি। অনুষ্ঠানে গণমাধ্যমে অসামান্য অবদানের জন্য জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সহ-সভাপতি মাহমুদা চৌধুরীকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।

শিরীন শারমিন বলেন, ‘গণমাধ্যমে নারীদের সম্পৃক্ততা অনেক চ্যালেঞ্জ, ২৪ ঘণ্টায় কাজ করতে গিয়ে এখানে যারা বাস্তব অভিজ্ঞতা বলেছেন। সেগুলোকে বিশ্লেষণ করতে হবে, তাদের কথা শুনতে হবে। তাদের অভিজ্ঞতায় যেগুলো উঠে এলো, চিন্তার বিষয়। প্রত্যেকটি ইস্যু নারী দিবসের আলোচনার মধ্যে সীমাবদ্ধ হলে চলবে না।’

স্পিকার বলেন, ‘নারীরা নিজের যোগ্যতা দিয়ে পদ ধরে রেখেছেন। সিঁড়ির ধাপে ধাপে নারীরা কতটুকু উঠতে পারছে, না ঝরে পড়ছে। তারা যাতে আর ঝরে না পড়ে, সেই জায়গাগুলো কাজ করতে হবে। নারীরা যাতে এগিয়ে যেতে পারে, সে কর্মপরিবেশ সৃষ্টি এখন সময়ের দাবি, সহিংসতা বন্ধ করুন। কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে না পৌঁছা পরর্যন্ত এ কথাগুলো আমরা বলতেই থাকব।’

শিরীন শারমিন বলেন, ‘নারীরা যাতে জায়গা করতে পারে, সেই জায়গায় কাজ করতে হবে। সমস্যাগুলো সমাধানের জায়গাগুলো আরও সোচ্চার হতে হবে। নিজেদের মনের ভয় শঙ্কা দূর করতে হবে। অবশ্যই নারীরা পারে, পারবে। সে বিশ্বাস আরও বেশি হবে। কর্মপরিবেশে কীভাবে পরিবর্তন আনা যায়, সে জায়গায় আমাদের কাজ করতে হবে। কোন জায়গায় প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করে সেগুলো বন্ধ করতে হবে।’

সব বাধা উত্তরণ করে নারীরা সামনের দিকে এগিয়ে যাবে উল্লেখ করে স্পিকার বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী নারীদের উন্নয়নে কাজ করেছে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর জন্য নারীরা সব প্রতিবন্ধকতা পেছনে ঠেলে, প্রতিটি ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা জায়গা ছাড়ব না, আমাদের অগ্রযাত্রায় থেমে যাব না। আমাদের সামনে একটিই পথ, সেটা সামনে এগিয়ে যাব।’

গণমাধ্যমে কাজ করতে গিয়ে নানা প্রতিবন্ধকতার কথা উল্লেখ করে এটিএন নিউজের নাদিরা কিরন বলেন, ‘গণমাধ্যমে নারীদের উপস্থিতি কী পরিমাণে তা এখন বোঝা যায়। নানা রকম প্রতিবন্ধকতা পারি দিয়েই আমাদের কাজ করে যেতে হচ্ছে। শুরুতে নারীদের জন্য কোন কর্মপরিবেশ ছিল না। হাতে গোনা কয়েকজন নারী সাংবাদিক ছিল সে সময়। এখন সে জায়গায় নারীদের অংশগ্রহণ বেড়ে গেছে।’

মানসিকতায় হীনম্মন্যতা রয়েছে জানিয়ে এই সিনিয়র সাংবাদিক বলেন, ‘বিয়ের পর বলা শুরু করল এখন ছুটি চাইবে, প্রেগন্যান্ট হবে। এই ধরনের কথা শুরু করে হাউজে। এরপর আবার নতুন করে যুদ্ধ শুরু করে পরিশ্রম করে গণমাধ্যমে জায়গা করে নিয়েছি। আমাদের চাওয়ার কিছু নাই, শুধু সহকর্মীদের বোধোদয় হোক এটা চাই।’ গণমাধ্যমে নারীদের কর্মপরিবেশ সৃষ্টির ওপর তাগিদ দেন তিনি।

নাগরিক টেলিভিশনের প্রধান প্রতিবেদক শাহনাজ পারভীন বলেন, ‘কয়েকটি টিভি বলে মেয়ে রিপোর্টার নেবো না, আবার কয়েকটি সংবাদপত্র বলে মেয়ে রিপোর্টার নেব না। কারণ কয়েক দিন পরে বিয়ে হবে, প্রেগন্যান্ট হবে ছুটি চাইবে কাজের ব্যাঘাত ঘটবে।’

শাহনাজ পারভীন বলেন, ‘আমাদের সিদ্ধান্ত কেউ নেবে না, আমাদেরকেই নিতে দিতে হবে। আমাদের সিদ্ধান্ত আমরাই নেব, কাকে সাথে নিয়ে চায়ের দোকানে আড্ডা দেব। কাকে আমার বাড়িতে নেব। নারী কর্মীরা আট ঘণ্টার মধ্যে সাড়ে সাত ঘণ্টা কাজ করে, আর পুরুষরা বিভিন্ন কাজে সময় নষ্ট করে। আমরা সমতার ভিত্তিতে কাজ করতে চাই।’

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন, বাসসের সেলনা শিউলী, ডিইউজের নবনির্বাচিত ট্রেজারার উম্মুল ওয়ারা সুইটি, নিউজ টোয়েন্টিফোরের প্রধান বার্তা সম্পাদক শাহনাজ মুন্নী প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/০৬মার্চ/জিএম/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

নারীমেলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা