‘ত্রিভুজ প্রেমের বলি’ কলেজছাত্র রওনক
ত্রিভুজ প্রেমের জন্য পুরান ঢাকার শাখাঁরীবাজারে হোলি উৎসবে কলেজছাত্র রওনককে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে নারীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে কোতয়ালী থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তাকৃতরা হলেন- রিয়াজ আলম ওরফে ফারহান, ফাহিম আহম্মেদ ওরফে আব্রো, ইয়াসিন আলী, আল আমিন ওরফে ফারাবী খান ও লিজা আক্তার ওরফে মাইসা আলম। তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু উদ্ধার করা হয়।
লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার বলেন, ‘মাইসার সঙ্গে আগে রওনকের সম্পর্ক ছিল। পরে রওনক মাইসার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে তুহু নামে অন্য এক মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক করে। কিন্তু তুহুকে অন্য এক ছেলে পছন্দ করত। তুহুর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ককে কেন্দ্র করে ওই ছেলে ও রওনকের মধ্যে ফেসবুকে কথা কাটাকাটি ও একজন-অন্যজনকে হুমকির ঘটনা ঘটে। ওই ছেলে রওনককে খুন করার পরিকল্পনা করে। এজন্য সে হোলি উৎসবকে বেছে নেয়। যেহেতু রওনকের সঙ্গে মাইসার আগে সম্পর্ক ছিল এজন্য মাইসাকে ব্যবহার করে রওনককে হোলি উৎসবে নিয়ে আসে ওই তরুণ।’
পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, ওই তরুণকে এখনো গ্রেপ্তার করা যায়নি। এজন্য তারা ওই তরুণের নাম প্রকাশ করছেন না।ইব্রাহিম খাঁন বলেন, ‘পূর্ব পরিকল্পনামতো মাইসার কল পেয়ে ১ মার্চ রওনক কামরাঙ্গীর চরের বাসা থেকে কলাবাগানে অন্য বন্ধুদের সঙ্গে মিলিত হন। রওনক পৌঁছানোর আগেই ওই তরুণ লক্ষ্মীবাজার কেএফসি রেস্টুরেন্টের সামনে কয়েকজনকে নিয়ে অপেক্ষা করে। তাদেরকে তিন থেকে চারটি ছুরি সরবরাহ করে। রওনক বন্ধুদের সঙ্গে শাঁখারি বাজার শনি মন্দিরের সামনে গেলে মাইসা তাকে একপাশে ডেকে নিয়ে যায়। তখন রওনককে ঘিরে ফেলে ২০-২৫ জন এবং এলোপাতাড়ি চর-থাপ্পর মারতে থাকে। এক সময় এদের মধ্যে কয়েকজন রওনককে ছুরিকাঘাত করে।’
লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার বলেন, ‘গ্রেপ্তরকৃতদের মধ্যে ফারহান নিজেই ছুরিকাঘাত করেছে। মূল পরিকল্পনাকারীসহ জড়িত অন্যদেরও গ্রেপ্তরে চেষ্টা চলছে। তবে এই ঘটনার সঙ্গে তুহুর কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। যদিও তুহুর দুই প্রেমিকের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে। তবে ওইদিন তুহুর সঙ্গে তাদের কারো যোগাযোগ হয়নি এবং কথোপকথনের কোনো রেকর্ড পাওয়া যায়নি। তুহু তখন ঢাকার বাইরে ছিল।’
ইব্রাহিম খাঁন জানান, রওনক, মাইসা, তুহু কিংবা এই বন্ধুমহলের কেউ কোনো নির্দিষ্ট এলাকা কিংবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নয়। তাদের সবার বয়স ১৮ বা এর বেশি। তারা ফেসবুকের মাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে পরিচিত হয় এবং মাঝে মধ্যেই তারা একসঙ্গে আড্ডা দিত। এদের মধ্যে কলেজছাত্র যেমন রয়েছে তেমনি ফলের দোকানি, কয়েল বিক্রেতাও রয়েছে।
এ সময় পুলিশের এই কর্মকর্তা তরুণরা কোথায় কী করছে, কোথায় যাচ্ছে এসব বিষয়ে অভিভাবকদের আরও নজরদারি বাড়ানোর পরামর্শ দেন।
(ঢাকাটাইমস/০৬মার্চ/এএ/জেবি)